0310
|
আকাশ: বন্ধুরা, প্রথমে আমরা বাংলাদেশের টানেল সম্পর্কিত একটি খবর আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
টুটুল:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণের দায়িত্বে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পের খনন কাজের উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং চীনা রাষ্ট্রদূত জাং জুও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ঋণ চুক্তির স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এ প্রকল্প শুধু শিল্প উন্নয়ন নয়, পর্যটন এবং নিকটবর্তী বাণিজ্য উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর ক্ষেত্রেও অনুকূল হবে। এ প্রকল্প স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
এ ছাড়া তিনি এ প্রকল্পের সমর্থন এবং দীর্ঘসময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সমর্থন ও নি:স্বার্থ সাহায্যের জন্য চীনকে ধন্যবাদ জানান এবং এ প্রকল্পে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অবদানের প্রশংসা করেন।
চীনা রাষ্ট্রদূত জাং জুও বলেন, চীন ও বাংলাদেশ হচ্ছে ভাল প্রতিবেশী এবং অংশীদার। ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বাংলাদেশ সফর করেন। এর মাধ্যমে দু'দেশের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্কে উন্নীত হয় এবং দু'দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হয়।।
তিনি বলেন, খননযন্ত্র উদ্বোধন এ প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ প্রকল্প বাংলাদেশের এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম নদীর নিচে সুড়ঙ্গ প্রকল্প। শিল্ড মেশিনটি চীনের নিজস্ব গবেষণায় বিদেশে রপ্তানিকৃত প্রথম সবচেয়ে বড় শিল্ড টানেল মেশিন। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের নদীর নিচে সুড়ঙ্গবিষয়ক প্রকৌশলীদের অভিজ্ঞতা হবে। তা দু'দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত আদানপ্রদানের একটি দৃষ্টান্ত হবে।
চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ কর্পোরেশন এ প্রকল্পটি নির্মাণের দায়িত্ব বহন করছে।
কর্ণফুলী নদী সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ৯২৯৩ মিটার। তা হলো 'বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার' অর্থনৈতিক করিডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
আকাশ: ভাই, আমি মনে করি, এ টানেল নির্মাণের পর বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরো অনেক সুবিধা যুক্ত হবে, তাইনা? এ ব্যাপারে তোমার মতামত কি ভাই?
টুটুল:...
আকাশ: আশা করি আমাদের সবার জীবন অনেক সুন্দর ও সমৃদ্ধ হবে। অন্যদিকে, ভাই সম্প্রতি আমার একজন বাংলাদেশি বন্ধু উইচ্যাটে আমাকে ঢাকার গাজিপুরের কিছু ছবি পাঠিয়েছেন। এ ছবি দেখে আমি বিস্মিত হয়ে গেছি।
টুটুল: কি ছবি ভাই?
আকাশ: আমি তোমাকে দেখাবো। এই যে ছবি...
টুটুল: আচ্ছা, আমি বুঝতে পেরেছি, এটা শিলা বৃষ্টির ছবি।
বন্ধুরা, আপনারা জানেন যে, সম্প্রতি বাংলাদেশে তীব্র শিলা বৃষ্টি হয়েছে। আমরা এখন এ সম্পর্কিত কিছু তথ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
সম্প্রতি ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিলার আঘাতে ঘরের টিনের চালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এছাড়া ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
কেউ কেউ বলেছেন, ঝড়ে এত বড় শিলা পড়তে এর আগে দেখেননি তারা।
এই শিলা বৃষ্টি নিয়ে আরেকজন বলেন, এতে তার এলাকার ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লিচু ও আম বাগান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারের ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি নিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, বিকালে প্রথমে বাতাস শুরু হয়। পরে তা তীব্র হতে থাকে। এরপর শুরু হয় ভারি শিলাবৃষ্টি। এতে অনেক ঘরবাড়ি বাতাসে উড়ে যায়। এছাড়া, বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এই ঝড় ও বৃষ্টিতে।
জানা গেছে, শিলার আঘাত আহত অনেকেই হাসপাতালে মারা যান।
আকাশ: এবারের এই ঝড় এবং শিলাবৃষ্টিতে মানুষের হতাহত হওয়া এবং ক্ষয়ক্ষতির খবর শুনে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছি।
টুটুল:....
সঙ্গীত
আকাশ: ভাই, আমি গত অনুষ্ঠানে তোমার কাছ থেকে একটি বাংলা শব্দ শিখেছি। এটি অসাধারণ একটি শব্দ। অনেক ধন্যবাদ ভাই।
টুটুল: কি শব্দ ভাই?
আকাশ: শব্দটি হচ্ছে 'অনুপ্রেরণা'। আসিনের অনুপ্রেরণামূলক গল্প থেকে আমি অনেক শক্তি পেয়েছি এবং উত্সাহ পেয়েছি। ওই চলচ্চিত্রটির 'জাম্প' নামক গানটি আমি মাঝে মাঝে মোবাইলে শুনি।
বন্ধুরা, এ অনুষ্ঠানে আমরা আসিনের মত আরেকজন খেলোয়াড় বন্ধুর অনুপ্রেরণামূলক গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন? ভাই, তুমি কি কি স্পোর্টস পছন্দ করো?
টুটুল: আমি? অবশ্যই রানিং। আমার যখনই মন ক্লান্ত বা খারাপ থাকে তখন আমি রানিং শুরু করি। আমি সিআরআইয়ের কাছাকাছি স্কাল্পচার পার্ক ও লাউশান পার্কে রানিং করি।
আকাশ: আচ্ছা, ভাই, আজ আমরা চীনের নারী ম্যারাথন খেলোয়াড়-ওয়াং চুন শিয়ার গল্প ভাইবোনদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?
টুটুল: ওয়াং চুন শিয়া: 'গ্রাম থেকে রানিংয়ে আসা' 'ওরিয়েন্টাল রেইনডিয়ার'
১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই, চীনের একজন নারী খেলোয়াড় ২৬তম দ্যা আটলান্টা অলিম্পিক্সের ট্র্যাকে রানিংয়ে অংশ নেন। তিনি একজন রানিং বলগা হরিণের মতো সব প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যান। তিনি হলেন ওয়াং চুন শিয়া। ওই অলিম্পিকে তিনি চীনের জন্য দুটি স্বর্ণপদক অর্জন করেন এবং 'ওরিয়েন্টাল রেইনডিয়ার'র সুনাম অর্জন করেন।
হ্যাঁ। তিনি সত্যি একজন রানিং বলগা হরিণের মতো।
কিন্তু আপনি জানেন কি এই বিশ্ববিখ্যাত 'ওরিয়েন্টাল রেইনডিয়ার' একটি ছোট গ্রাম থেকে এসেছেন? ছোটবেলায় তার ডাকনাম ছিলো 'পাগলী'।
একটি ছোট রেইনডিয়ারের মতো রানিং এই পাগলী ১৯৭৩ সালে চি লিন প্রদেশের চিয়া ফি কো নামক এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই ছোট গ্রামটিতে রয়েছে ঘন বন, পাখি আর আঁকাবাঁকা নদী।
ওয়াং চুন শিয়া ছোটবেলা থেকে সব ধরনের মুভমেন্ট অর্থাত্ স্পোর্টস পছন্দ করেন। এজন্য বয়স্করা তাকে পাগলী বলে ডাকেন।
ওয়াং চুন শিয়ার বাবা মা কৃষি কাজ করেন। তাঁরা কৃষির মাধ্যমে পরিবারের খরচ বহন করেন।
বসন্তকাল আসার সময় খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠে তাঁরা মাঠে কৃষি কাজ শুরু করেন। দিন শেষে সন্ধ্যায় তাঁরা বাসায় ফিরে যান। বাসায় শুধু ওয়াং চুন শিয়া নিজে থাকেন । এজন্য ওয়াং চুন শিয়া সারা দিন ছোট বন্ধুদের সাথে সারা পাহাড়ে ছোট বলগা হরিণের মতো রানিং করতে থাকেন। বসন্তকালে তারা পাহাড়ে গিয়ে খাবারের জন্য ভোজ্য বন্য শাকসবজি খোঁজেন। ওয়াং চুন শিয়া সবচেয়ে দ্রুত রানিং করেন। এজন্য তিনি অন্যদের চেয়ে বেশি শাকসবজি খুঁজতে পারেন। এটা দেখে তার বন্ধুরা বলেন, "ওয়াং চুন শিয়া, তুই এত দ্রুত রানিং করিস, সামনের সব ভোজ্য বন্য শাকসবজি খনন করেছিস, তাহলে আমাদের এখানে আসার দরকার কি?"
ওয়াং চুন শিয়া হেসে হেসে বলেন, "সমস্যা নেই, আমি তোমাদেরকে খননে সাহায্য করবো।" তিনি আরো দ্রুত রানিং শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর, তিনি তার এবং তার বন্ধুদের ঝুড়ি শাকসবজিতে পূর্ণ করেন।
বৃষ্টির পর তারা পাহাড়ে মাশরুম তোলার জন্য ওঠেন। তখন আবার ওয়াং চুন শিয়া সবার সামনে রানিং করেন। তিনি দ্রুত মাশরুম তুলে তার ঝুড়ি পূর্ণ করে পরে অন্য বন্ধুদের ঝুড়িও পূর্ণ করতে সাহায্য করেন।
সবাই বলেন, ওয়াং চুন শিয়া চিকন হলেও খরগোশের মতো সবার চেয়ে দ্রুত রানিং করতে পারেন। এটা শোনার পর তিনি হাসাহাসি শুরু করেন। তিনি নিজেও জানেন না, কেন তিনি এত দ্রুত রানিং করতে পারেন।
কিছু কিছু সময় ওয়াং চুন শিয়া বন্ধুদের সাথে "মানুষের পিছু নেওয়া' খেলা খেলেন। কিন্তু তিনি এত দ্রুত রানিং করেন যে, কেউ তাকে ধরতে পারেন না। এজন্য ওয়াং চুন শিয়া ধীরে ধীরে চলতে থাকেন, কিন্তু তার পরও কেউ তাকে ধরতে পারেন না।
আকাশ: বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্তই, আমরা আগামী অনুষ্ঠানে অব্যাহতভাবে ওয়াং চুন শিয়ার গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, কেমন?