প্রসঙ্গ: চীন-মার্কিন সপ্তম আর্থ-বাণিজ্যিক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
  2019-02-25 14:17:40  cri

সপ্তম চীন-মার্কিন আর্থ-বাণিজ্যিক উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা গতকাল (রোববার) ওয়াশিংটনে সমাপ্ত হয়েছে। চার দিনের আলোচনায় দু'পক্ষ আর্জেন্টিনায় দু'দেশের শীর্ষ নেতার পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য বাস্তবায়ন, চুক্তির বিস্তারিত বিষয়, প্রযুক্তির হস্তান্তর, মেধাস্বত্ব রক্ষা, সেবা শিল্প, কৃষি এবং মুদ্রা বিনিময়ের হারসহ বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি অর্জন করেছে। এর সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইটারে আগামী ১ মার্চ চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক বাড়ানোর পরিকল্পনা স্থগিত রাখার কথাও ঘোষণা করেছেন।

অবশ্য, এবার আলোচনায় আর্থিক সংঘর্ষ সমাধানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। আগের দফা আলোচনায় দু'পক্ষ প্রধান বিষয়ে মতৈক্যে পোঁছেছে এবং দ্বিপক্ষীয় আর্থ-বাণিজ্যিক সমস্যায় স্মারকলিপি নিয়ে আলোচনা করেছে। এবারের আলোচনায় দু'পক্ষ বিস্তারিত বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং চুক্তি স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করেছে। বলা যায়, দু'দেশ নির্ধারিত লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছে।

এবারের আলোচনার ফলাফলে রয়েছে: বাণিজ্যের ভারসাম্য ও কাঠামোগত সমস্যা। এর মধ্যে বাণিজ্যের ভারসাম্য সমস্যায় চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিজাত দ্রব্য, জ্বালানি পণ্য এবং সেবা পণ্যের আমদানি বাড়াবে। একদিকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক পার্থক্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগের সমাধান করা যায়, অন্য দিকে, চীনা জনগণের সুন্দর জীবনযাপনের চাহিদা মেটানো যায়, দেশের শিল্পের কাঠামোগত সুসংহতকরণও ত্বরান্বিত করা যায়।

কৃষিজাত দ্রব্যের উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, গত সপ্তাহ চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের প্রকাশিত 'নং ১ দলিলে' খাদ্য নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপের সঙ্গে সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্র সম্প্রসারণের কথাও উল্লেখ করা হয়। প্রতি বছর চীনকে ৯০ শতাংশ সয়াবিন আমদানি করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিনের আমদানি বাড়ানো দেশের চাহিদা মেটানো এবং বাজারের যুক্তিযুক্ত দাম বজায় রাখার সঙ্গে অনুকূল। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে, চীনের বাজারে তার ৫৭ শতাংশ সয়াবিন রপ্তানি হয়। সয়াবিনের ক্রয় বিক্রয়ে দেখা যায়, আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক পরিপূরক সম্পর্ক। ২০১৮ সালে দু'দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সংঘর্ষ অবনতির কারণে দু'দেশের সয়াবিন বাণিজ্য এতে প্রভাবিত হয়। বর্তমানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সমস্যা সমাধানের দিকে যৌথ চেষ্টা চালাচ্ছে, চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি সম্প্রসারণ করেছে, তা খুব যুক্তিযুক্ত ব্যাপার।

দু'দেশের বাণিজ্যের কাঠামোগত সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট দাবি জানিয়েছে। তা চীনের রাষ্ট্রীয় স্বার্থ এবং নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত, এছাড়া তা চীনের উন্মুক্তকরণ ও সংস্কার সম্প্রসারণ এবং অর্থনীতির উচ্চ মানের উন্নয়নের সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ। মেধাস্বত্ব রক্ষার উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, তা সব সৃজনশীল উন্নয়নশীল দেশের 'দৃঢ় চাহিদা'। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্ দু'টি অর্থনৈতিক গোষ্ঠী এবং উদ্ভাবন দেশ হিসেবে, মেধাস্বত্ব রক্ষায় দু'দেশের অভিন্ন চাহিদা ও স্বার্থ রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মেধাস্বত্ব রক্ষার বিষয় বার বার দু'দেশের সংলাপের ফলাফল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এবার আলোচনায় এই বিষয়েও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।

এবার আলোচনায় দু'পক্ষ একমত হয়েছে যে, দু'দেশের শীর্ষ নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী কাজ ভালোভাবে করবে। তা থেকে বোঝা যায়, সঠিকভাবে চীন-মার্কিন আর্থিক সংঘর্ষ সমাধানে দু'দেশের শীর্ষ নেতা গুরুত্বপূর্ণ এবং নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছেন।

চীনের কাছে, চীন অব্যাহতভাবে বৃহত্ আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টায় পরবর্তী আলোচনা করবে। চীন আশা করে যুক্তরাষ্ট্রও একই লক্ষ্যে চেষ্টা চালাবে। এর সঙ্গে সঙ্গে চীনও নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে, সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করবে। (শুয়েই/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040