সংবাদ পর্যালোচনা: চীন-মার্কিন বাণিজ্যচুক্তি হলে গোটা বিশ্ব উপকৃত হবে: বিশেষজ্ঞদের অভিমত
  2019-02-18 14:41:19  cri
চীন-মার্কিন উচ্চ পর্যায়ের আর্থ-বাণিজ্যিক ষষ্ঠ দফার সংলাপ ১৫ ফেব্রুয়ারি বেইজিংয়ের তিয়াওইউথাই রাষ্ট্রীয় অতিথিভবনে শেষ হয়। দু'পক্ষ প্রধান ইস্যু নিয়ে নীতিগত মতৈক্যে পৌঁছেছে এবং দ্বিপক্ষীয় আর্থ-বাণিজ্যিক ইস্যুসংক্রান্ত সম্ভাব্য সমঝোতাস্মারক নিয়েও আলোচনা করেছে। এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যিক সম্পর্কে ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে একমত হলে গোটা বিশ্বের অর্থনীতির তা হবে কল্যাণকর।

বেইজিং সংলাপে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত সি-ট্রাম্প বৈঠকে গৃহীত যৌথ-সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। দু'দেশের প্রতিনিধিরা প্রযুক্তির হস্তান্তর, মেধাস্বত্বের সংরক্ষণ, অশুল্ক বাধা, সেবাশিল্প, কৃষি ও বাণিজ্যের ভারসাম্য এবং বাস্তবায়নের ব্যবস্থাসহ অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু এবং চীনের উদ্বেগের বিষয় নিয়ে গভীরভাবে মতবিনিময় করেন।

গত বছরের পহেলা ডিসেম্বর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের বৈঠকের পর, বিশেষ করে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিক থেকে দু'পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়তে থাকে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর সাবেক মহাপরিচালক ও থিংহুয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় আর্থিক গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক চু মিন বলেন, আলোচনা আসলেই ভালো সূচনা। তিনি বলেন,

"বাণিজ্যিক আলোচনার অনেক খুঁটিনাটি বিষয় থাকে। আমরা কিছু সাফল্য অর্জন করতে এবং কিছু চুক্তির ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারি। এর জন্য দু'পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত। তবে আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকা স্বাভাবিকও। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের জন্য আলোচনা অপরিহার্য। আলোচনা ভালো ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রও মনে করে, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা খুব প্রয়োজন। তাই আলোচনার প্রশ্নে দু'পক্ষ ক্রমশ কাছে আসছে। এটা ভালো ব্যাপার।"

বেইজিং-সংলাপকে ধরা হচ্ছে এক বছরে চীন-মার্কিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংলাপগুলোর অন্যতম হিসেবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি গোটা রাত দু'পক্ষ আলোচনা করে এবং যার যার দেশের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট থাকে। দু'পক্ষের প্রতিনিধিরা এক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিশ্রম করেন এবং পেশাদারিত্বের পরিচয় দেন। চীনের আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান সিয়া চুন এন বলেন,

"নীতির প্রশ্নে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিন্ন। এতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও স্পষ্ট করে নীতি প্রণয়ন করা উচিত, বা নীতিমালা নতুন করে সাজানো উচিত। যদি দু'পক্ষ নিজেদের মধ্যে মতভেদ কমিয়ে আনতে পারে, তবে দু'দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্কের নেতিবাচক উপাদানগুলো আর থাকবে না। এতে বিশ্বের অর্থনীতি উপকৃত হবে। দু'দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি হলে স্টক মার্কেট এবং বিভিন্ন কোম্পানি চাঙ্গা হবে বলে আমি মনে করি।"

বেইজিং সংলাপের পর চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এই সপ্তাহে ওয়াশিংটনে সংলাপ চালিয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে চীনের উন্নয়ন ও গবেষণা তহবিলের মহাসচিব লু মাই মনে করেন, সংলাপের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। তিনি বলেন,

"অনিশ্চয়তা কমার প্রত্যাশায় রয়েছি আমরা। তবে চূড়ান্ত সাফল্য অর্জন করতে চাইলে অবশ্যই লম্বা পথ অতিক্রম করতে হবে। চীনারা নিজেদের পথে চলছে এবং আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের পথের উজ্জ্বল ভবিষ্যত আছে।" (লিলি/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040