২০১১ সালে ইউনেস্কো প্রতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারিকে বিশ্ব বেতার দিবস হিসেবে নির্ধারণ করে। তাতে শিক্ষা, উন্মুক্ত কথাবার্তা, গণবিতর্ক এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা সম্প্রচারে বেতারের ভূমিকার স্বীকৃতি দেয়া হয়। এ বছর বিশ্ব বেতার দিবসের প্রতিপাদ্য হলো 'সংলাপ, সহনশীলতা ও শান্তি'। তার লক্ষ্য হচ্ছে গণবিতর্ক ও পরস্পরের প্রতি সমঝোতা জোরদারে বেতারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা স্মরণ করা। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরহিস ২০১৯ সালের বিশ্ব বেতার দিবস সংক্রান্ত ভাষণে বলেন, 'বেতার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। বর্তমান টেলিকম জগতেও তার কাভার করা লোকের সংখ্যা অন্য মাধ্যমের তুলনায় বেশি। বেতার মানুষের কাছে তথ্য প্রচার করে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মানুষের চেতনা বাড়ায়। এছাড়া বেতারের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হয়। বিশেষ করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা অভিযানের জন্য বেতার খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে যুদ্ধ কবলিত অঞ্চলে লোকদের কাছে তথ্য প্রচার করা হয়, তাদের পুনর্মিলনে সাহায্য করা হয়। বিশ্ব বেতার দিবস উপলক্ষ্যে সংলাপ, সহনশীলতা ও শান্তির ক্ষেত্রে বেতারের বিশাল শক্তি উপলব্ধি করুন"।
মোবাইল, মাইক্রোব্লগ ও উইচ্যাটসহ নানা যোগাযোগ মাধ্যমের দ্রুত উন্নয়ন বেতারসহ ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তবে বেতারের সুবিধা ও বৈচিত্র্যতার কারণে তার এখনও অনেক অনুরাগী রয়েছে। 'সাধারণত আমি স্ত্রীর সঙ্গে বাইরে গাড়ি চালানোর সময় বেতার অনুষ্ঠান শুনতে থাকি। বিশেষ করে কিছু সংগীত অনুষ্ঠান শুনতে পছন্দ করি। তারপর অফিসে যাওয়ার সময় গাড়িতে ট্র্যাফিক সম্পর্কে অনুষ্ঠান শুনি।
"প্রতি দুপুরে শাংহাই ট্র্যাফিক রেডিও'র অনুষ্ঠান শুনি। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শ্রোতাদের বাস্তব সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।
স্বল্পোন্নত অঞ্চলগুলোতেও রেডিও অনুষ্ঠান ৭৫ শতাংশ আয়তন কাভার করে, যার মানে টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের তুলনায় রেডিও এখনও মানুষের জীবন-যাত্রার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। চীনের চিয়াং সু প্রদেশের স্যু চৌ শহরের শ্রোতা জনাব চৌ বলেন, রেডিও'র মাধ্যমে তিনি নানা জ্ঞান অর্জন করতে থাকেন। তিনি বলেন, 'প্রতি সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি রেডিও'র মাধ্যমে সংবাদ শুনি। রাতে ঘুমানোর আগে ইংরেজি অনুষ্ঠান শুনি। রেডিও আমাদের নানা তথ্য অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ উপায়। পাশাপাশি অনেকের শিক্ষাগ্রহণে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ হু জেং রং দাবি করেন, নানা বেতারের উচিত ফাইভ-জি প্রযুক্তিসহ নানা নতুন প্রযুক্তির উন্নয়নের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আরও উত্কৃষ্ট অনুষ্ঠান ও পরিষেবা প্রদান করা। (রুবি/টুটুল)