প্রসঙ্গ: সংখ্যালঘু জাতিগুলোর ব্যাপার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দৃষ্টিভঙ্গি
  2019-02-10 18:10:03  cri

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রায়ই দুটি কথা বলে থাকেন, আর কথাদুটি হচ্ছে: "দেশের বিভিন্ন জাতির উচিত ডালিমের দানার মতো একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা" এবং "সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় সব জাতিকেই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে"।

চীন ৫৬টি জাতির দেশ। অনেক সংখ্যালঘু জাতি বংশানুক্রমে দেশের দূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বসবাস করে আসছে। চীনের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চান, দেশের প্রতিটি জাতির প্রতিটি পরিবার সুখী জীবন কাটাবে। তিনি, ২০১২ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে, দেশের বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিঅধ্যুষিত অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। সেজন্য তাকে কখনও পাহাড়ে চড়তে হয়েছে, কখনও মরুভূমি অতিক্রম করতে হয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু জাতির জনগণের জীবনমান সম্পর্কে জানার আগ্রহ তাকে এই কষ্টকর যাত্রায় উত্সাহ যুগিয়েছে। তিনি সেসব অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন এবং জাতীয় ঐক্য ও সংখ্যালঘু জাতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় দিক্‌-নির্দেশনা দিয়েছেন।

২০১৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ইয়ুনান প্রদেশের তুলুং জাতির জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, "আজকে আমি খুব খুশি। আপনারা অনেক দূর থেকে এসেছেন। যদিও এখন শীতকাল, তবে আগেরকার মতো তুষারের কারণে সড়ক-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি।"

তুলুং নদী ইয়ুনান প্রদেশের কুংশান জেলায় অবস্থিত। জায়গাটি চীনের সবচেয়ে দূরবর্তী এলাকাগুলোর অন্যতম। ২০১৪ সালের পয়লা জানুয়ারির আগে স্থানীয় লোকজন প্রেসিডেন্ট সি'কে একটি চিঠি লেখে। চিঠিতে তুলুং নদীর নীচ দিয়ে সড়ক-সুরঙ্গ চালুর সুখবর জানানো হয়। এক বছর পর প্রেসিডেন্ট সি ইয়ুনান পরিদর্শনের সময়, বিশেষ করে তুলুং জাতির লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন,

"তুলুং জাতির লোকসংখ্যা বেশি নয়, ৬৯০০ জনের কিছু বেশি। তবে আপনারা আমাদের ৫৬ জাতির পরিবারের সদস্য। আমাদের কাঁধে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান এবং চীনা স্বপ্ন বাস্তবায়নের পবিত্র দায়িত্ব আছে। আমাদের প্রত্যেক জাতিই সচ্ছল সমাজ বাস্তবায়ন করবে। সিপিসি বিভিন্ন জাতির উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। সিপিসি এবং সরকার সবসময় আপনাদের জীবনের ওপর গুরুত্ব দেবে।"

সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের আয়তন চীনের ভূখন্ডের ছয় ভাগের এক ভাগ। সেখানে ৪৭টি জাতির মানুষ বাস করে। অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের ওপর অনেক গুরুত্ব দেন প্রেসিডেন্ট সি। ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রেসিডেন্ট সি সিনচিয়াং-এর দক্ষিণাঞ্চলের কাসি এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি বলেন,

"আমার এবারের সফরের উদ্দেশ্য হলো, আমি নিজের চোখে দেখতে চাই, সরকারের কল্যাণনীতি সত্যি সত্যিই কার্যকর হয়েছে কি না। সিপিসি'র সব নীতিই জনগণের চাহিদা অনুযায়ী প্রণয়ন করতে হবে।"

সিনচিয়াং-এর সব জাতির মানুষের মধ্যে ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রেসিডেন্ট সি। তিনি জোর দিয়ে বলেন,

"জাতীয় ঐক্য হলো বিভিন্ন জাতির জনগণের প্রাণ-ভোমরা, সিনচিয়াং-এর উন্নয়নের মৌলিক ভিত্তি, এবং ১৩০ কোটি চীনা মানুষের অভিন্ন আকাঙ্খা। আমাদের উচিত, নিজের চোখকে লালনের মতো করে জাতীয় ঐক্যকে লালন করা। আমাদের উচিত, নিজের প্রাণকে রক্ষা করার মতো করে জাতীয় ঐক্যকে রক্ষা করা। আমাদের উচিত ডালিমের দানার মতো এক অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা।" (শুয়েই/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040