হাঙ্গেরিতে চীনা দূতাবাস ২০১৯ সালের লুনার নিউ ইয়ার রিসেপশন, অর্থাত্ তৃতীয় "চীনা বসন্ত" সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাঙ্গেরিতে চীনা দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত তুয়ান চিয়ে লং বলেছেন, ২০১৯ সাল হলো চীন-হাঙ্গেরি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সহযোগিতা ইতিহাসের সেরা ও নতুন উন্নয়ন সুযোগ গ্রহণ করবে। দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা চালানোর জন্য, চীন-হাঙ্গেরি বন্ধুত্বের দৃঢ়তা ও ঐকমত্যকে উচ্চতর করার জন্য বেশ কয়েকটি উদযাপন, বিনিময় এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
"শুভ নববর্ষ। শুকর বছর আনন্দময় হবে। সবকিছু মসৃণভাবে অনুষ্ঠিত হোক এবং পছন্দসইভাবে বিকশিত হোক।"
"চীনা বসন্ত" সাংস্কৃতিক উৎসবে বুদাপেস্টের হাঙ্গেরিয়ান দ্বিভাষিক বিদ্যালয়ের চীনা ও হাঙ্গেরীয় শিশুদের পাঠানো চীনা নববর্ষের শুভেচ্ছা।
২০১৯ "চীনা বসন্ত" চীন-হাঙ্গেরি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীর প্রথম বড় স্কেলের ব্যাপক সাংস্কৃতিক ইভেন্ট হিসাবে রঙিন আয়োজন, মাল্টিমিডিয়া পান্ডা প্রদর্শনী, অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার প্রদর্শনী, চা সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা, চীনা ঔষধের ক্লিনিক এবং এরকম অন্যান্য কার্যক্রম আছে। ড্রাগন ও সিংহ নাচ, ড্রামস এবং বেইজিং অপেরা হিসাবে প্রথাগত চীনা প্রোগ্রামও রয়েছে।
চীনা শিক্ষার্থী কাও মিন হাঙ্গেরিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অধ্যয়ন করছেন। সে গত বছর এবং এই বছর "চীনা বসন্ত" অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন। কাও বলে,
"'চীনা বসন্ত' স্প্রিং ফেস্টিভাল খুবই আকর্ষণীয়। আমি গত বছরও অংশগ্রহণ করেছি। বিদেশে এমন একটি প্রাণবন্ত স্প্রিং ফেস্টিভাল থাকায় অনেক ভালো হয়েছে। দেশে আমি আমার পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে পারি এবং মাঝে মাঝে মন্দির মেলায় যেতে পারি। এখানেও মন্দির মেলায় যাবার মতো ভালো অনুভূতি হয়।"
মা জুন উয়েই হাঙ্গেরিয়ান-চাইনিজ দ্বিভাষিক স্কুলের সিনিয়র দ্বিতীয় গ্রেডের ছাত্র। সে নয় বছর ধরে চীনা ভাষা শিখছে। সে মনে করে প্রথাগত চীনা নববর্ষ এবং পশ্চিমা ক্রিসমাস একই। সব পরিবার ও বন্ধুরা মিলিত হয় এবং প্রাণবন্ত আবহাওয়া বিরাজ করে।
"আমি জানি যে চীনের লোকেরা স্প্রিং ফেস্টিভালে ডাম্পলিং খায়, লাল প্যাকেট দেয় এবং পটকা বাজি খেলে। আমি চীনা খাবার এবং রঙিন পারফরম্যান্স পছন্দ করি। যেমন- শাস্ত্রীয় নাচ, আবৃত্তি ইত্যাদি।"
হাঙ্গেরিয়ান-চীনা দ্বিভাষিক স্কুলের ভাইস চ্যান্সেলর ভিক্টোরিয়া প্রতি বছর স্কুলের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দেয় এবং ক্যাম্পাসে স্প্রিং ফেস্টিভাল উদযাপন করে। তিনি মনে করেন, হাঙ্গেরীয়রা চীনা সংস্কৃতি অনেক বেশি পছন্দ করে।
"হাঙ্গেরীয়রা চীনা সংস্কৃতির সঙ্গে আরও পরিচিত হয়ে উঠছে। তারা বিভিন্ন ধরণের ঐতিহ্যবাহী রান্না উপভোগ করতে পারে এবং চীনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারে। আমরা সবাই চাইনিজ সংস্কৃতির প্রশংসা করি। যেমন নাচ, সিংহ নাচ, মার্শাল আর্ট ইত্যাদি; যা চীনের প্রাচীন ইতিহাসকে প্রতিফলিত করে এবং আমরা খুব খুশি।"
"চীনা বসন্ত" সাংস্কৃতিক উত্সব অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছেন হাঙ্গেরীর সংসদের নির্বাহী সহসভাপতি মিসেস মাত্রেইল। তিনি বলেন, যখন নববর্ষ আসে, চীনারা সুন্দর জামাকাপড় পরবে, ঘর পরিষ্কার করবে, এবং আনন্দের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে। একই সময়ে, এটি কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীলতার একটি নতুন চেতনাতেও উত্ভাসিত হয়ে উঠবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন,
"আমরা হাঙ্গেরিয়ানরা ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছি। আমরা দেখেছি, অনেক পরিকল্পনা এবং অনেক বিশাল সম্ভাবনা ও সুযোগ। চীন ও হাঙ্গেরি যুক্ত হয়েছে। এই জটিল এবং পরিবর্তনশীল বিশ্বে আমাদের উচিত, দু'দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা রক্ষা করা ও বজায় রাখা।"