হ্যপেই প্রদেশের হানদান শহরের ছি জেলার তুং ছেন গ্রামে গিয়ে সবার মনে ফেলা প্রথম ছাপ হল পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্নতা। সব জায়গায় জানালার সাজ-সজ্জার জন্য কাটা কাগজ দেখা যায়, সবখানে চোখে পড়ে বসন্ত উত্সবের আমেজ। ছি পিং হ্য'র স্ত্রী ওয়াং কুই ছিন সাংবাদিকের স্বাগত জানিয়ে বাইরে আসেন। তিনি ছোট চুল এবং বেশ স্বাস্থ্যবান। তিনি সাংবাদিককে পরিবারের মৌলিক তথ্য জানিয়ে দেন। তিনি বলেন,
আমার স্বামী কয়েক বছর আগে কাজের সময় এক দুর্ঘটনায় কোমরের নিচে থেকে পক্ষাঘাত হয়েছে। এই দুর্ঘটনার পর পরিবারের বোঝা বেশি হয়ে যায়। সে আর কাজ করতে পারে না, পরিবারের বোঝা সবই আমার কাঁধে। পরে দীর্ঘসময় মাঠে কাজ করার কারণে আমার কোমরেও সমস্যা দেখা দেয়। এখন আমার মাঝে মাঝে অস্ত্রোপচার করতে হয়। আমার মেয়ে এবং ছেলে স্কুলে যায়। এই কারণে পরিবারের অবস্থা খুব দরিদ্র।
ছি পিং হ্য'র পরিবারের অবস্থা দেখে গ্রামের কর্মকর্তা তাদের সাহায্যের জন্য স্বল্প আয়ের পরিবারের ভর্তুকির আবেদন করেন, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার ফি কিছুটা মওকুফ হয়। শরীর সুস্থ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জীবন সম্বন্ধে ছি পিং হ্য'র নতুন পরিকল্পনা তৈরি হয়। যদিও এখন তিনি হাটাহাটি করতে পারেন না, তবে ইলেকট্রিক ত্রিচক্রযান চালাতে পারেন তিনি। তিনি ত্রিচক্রযান চালিয়ে সড়কে কিছু জিনিস বিক্রি করতে চান। নিজের স্বামী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন, ওয়াং কুই ছিন স্বামীকে অনেক সমর্থন করেন। তিনি বলেন,
সে মাঝে মাঝে একাই বাইরে গিয়ে জিনিস বিক্রি করে। মাঝে মাঝে আমি তাকে সাহায্য করি। সে ব্যাটারি, বোতাম এমন ছোট জিনিস বিক্রি করে। এখন আমার পরিবার দারিদ্রমুক্ত হতে পেরেছে, এর প্রধান কারণ হল সরকারের সাহায্য, এতে অবশ্য আমাদের নিজের চেষ্টাও আছে।
সরকারের সাহায্য এবং পরিবারের যৌথ চেষ্টায় ২০১৮ সালে তার পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে দারিদ্রমুক্ত হয়। দারিদ্রমুক্তির ফলাফল দৃঢ় করা এবং তাদের আবার দরিদ্র হওয়া প্রতিরোধের জন্য স্থানীয় সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে। ছি পিং হ্য পরিবারের বিশেষ অবস্থা বিবেচনা করে গত বছর সরকার ওয়াং কুই ছিনকে একটি দাতব্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। ওয়াং কুই ছিন বলেন,
'এখন আমি প্রতিদিন গ্রামের অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য টহলের কাজ করি। এই কাজ খুব তাত্পর্যপূর্ণ। প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা তত্ত্বাবধান করতে হয়।
ওয়াং কুই ছিন সাংবাদিককে জানান, এই কর্মসংস্থানের বার্ষিক বেতন ৬ হাজারেরও বেশি ইউয়ান। স্বামীর ছোট জিনিস বিক্রির আয়সহ প্রতি বছর সন্তোষজনক আয় পেতে পারি এখন। পরিবারের জীবনও অনেক ভালো হয়েছে। এখন চীনাদের ঐতিহ্যবাহী বসন্ত উত্সব ঘনিয়ে আসছে। এটি তাদের দারিদ্রমুক্ত হওয়ার পর প্রথম বসন্ত উত্সব। ওয়াং কুই ছিন অনেক আগেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। তিনি বলেন,
আগে টাকা ছিলোনা, অনেক কিছু কিনতে পারতাম না। কাপড় কিনতে পারতাম না, ভালো খাবার কিনতে পারতাম না। সরকার আমাদেরকে কিছু তেল ও চাল দেয়। এই বছর আমি ছেলেমেয়ের জন্য নতুন কাপড় কিনেছি, ফল ও মাংস কিনেছি। এখন ভালো জিনিস এবং পুষ্টিকর জিনিস খেতে পারি, আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে জীবন।
(শুয়েই/টুটুল)