১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় 'চীন-মায়ানমার মৈত্রী' নামক চীনা নববর্ষের স্প্রিং ফেস্টিভাল গালা মিয়ানমারের ইয়াংগুনের স্কাইনেট টিভির চিত্রশালায় অনুষ্ঠিত হয়। চীন ও মিয়ানমারের শিল্পীরা এক সাথে দর্শকদের জন্য একটি চমত্কার পারফর্মেন্স দেখান। গালা রেকর্ডিং শেষ হওয়ার পর, এটি স্প্রিং ফেস্টিভালে ইউননান স্যাটেলাইট টিভি এবং মিয়াননমার স্কাইনেট টিভি স্টেশন সম্প্রচারিত হবে। গালায় মিয়ানমারে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত হং লিয়াং মিয়ানমারের বন্ধুদের চীনের প্রথাগত চীনা নববর্ষের সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেন।
"স্প্রিং ফেস্টিভাল চীনা জনগণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী উত্সব। প্রতি বছর, প্রত্যেক পরিবারের সদস্য, যেখানেই থাকুক-না-কেন, বাড়িতে যায় এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। প্রতিটি পরিবার একতা এবং জাতির সব মানুষের ঐক্যের ভিত্তি স্থাপন করে এই উত্সব। বসন্ত উত্সব উদযাপনের মাধ্যমে আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি যে, চীন ও মিয়ানমারের প্রতিটি পরিবার খুশি ও সুখী হবে।"
চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলের তথ্য অফিস, মিয়ানমারের চীনা দূতাবাস, ইউননান প্রাদেশিক সরকার, মিয়ানমারের প্রচার বিভাগ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলের তথ্য অফিসের বহিরাগত প্রচার ব্যুরোর উপ-পরিচালক লিং লি ভাষণে বলেন, এ ধরনের সাংস্কৃতিক বিনিময়ে কাজে লাগিয়ে চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বের হাত ধরে দ্রুত ভালো প্রতিবেশী এবং ভালো ভাই হবে।
"চীন সবসময় প্রতিবেশী দেশগুলোর বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দিয়েছে। আমি আশা করি, মিয়ানমারের অর্থনীতি উন্নত হবে এবং দেশটির জনগণের সুখ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে আরও সহযোগিতা বজায় থাকবে এবং দুই দেশের মানুষের আরও কল্যাণ হবে। দু'পক্ষের সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও ঘনিষ্ঠ হবে। বেসরকারি মৈত্রী আরও উন্নত হবে। দু'দেশ একসঙ্গে চীন-মিয়ানমার মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করবে, যাতে দুই দেশ সবসময় ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু, ভালো অংশীদার এবং ভালো ভাই হয়।"
গালায় দু'দেশের শিল্পীদের পাশাপাশি তিনজন বিশেষ অতিথিও ছিলেন। তাঁরা হচ্ছেন প্রবীণ প্রেমিয়ার চৌ এনলাইয়ের ভাতিজি চৌ পিংদে, মিয়ানমারের সাবে প্রধানমন্ত্রী উবা সয়ের মেয়ে নায় ইয়ে সয়ে এবং মিয়ানমারের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে দান দান নু।
মিয়ানমারের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে দান দান নু'র বয়স প্রায় ৭০ বছর। তিনি বলেন,
"আমি আজ অনেক পুরানো ছবি দেখেছি, অনেক মুগ্ধ হয়েছি। আমি এটা দেশে খুব খুশি যে, আমার বাবার প্রজন্মের মৈত্রী এখনও রয়েছে, আরও দৃঢ় হচ্ছে। আজকের গালা চিত্তাকর্ষক। মিয়ানমারের দর্শকদের সামনে সরাসরি চীনা সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। আমি আশা করি এ ধরনের অনুষ্ঠান আরও বেশি আয়োজন করা হবে। উভয় পক্ষের সংস্কৃতি দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা বাড়াবে।"
গালা শেষ হলে মিয়ানমারের ধর্মবিষয়ক ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আং ক এবারের পার্ফমেন্সের উচ্চ পর্যায়ের মূল্যায়ন করেন। তিনি মনে করেন, আরও সাংস্কৃতিক বিনিময় চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা গভীর করতে পারে।
"প্রাচীনকালের রেশম পথ রয়েছে। বর্তমানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ পেশ করেছেন। আমি বিশ্বাস করি 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগে অংশগ্রহণ মিয়ানমারকে বিপুল উন্নয়ন ও সুবিধা দেবে। মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক মিল রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে উত্সাহ দেবে।"