চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম-সম্পর্কিত চুক্তি অনুযায়ী চীন নাইজেরিয়াসহ আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে মানবসম্পদবিষয়ক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা চালাতে থাকে। নাইজেরিয়ায় চীনা দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সিলারের কার্যালয় প্রতি বছর সেদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চীনে পরিদর্শন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহায়তা করে। এতে অবকাঠামো, রেলপথ পরিবহন, জল সংরক্ষণ ও জলবিদ্যুৎ নির্মাণ ও পরিচালনা, টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গণকূটনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত। ২০১৮ সাল পর্যন্ত চার হাজার তিনশো জনেরও বেশি নাইজেরিয়ান চীনে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন।
২০১৬ সালের প্রথম দিকে নাইজেরিয়ার বিদ্যুৎ, প্রকৌশল ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বিদ্যুত্ শক্তি গবেষণালয়ের ইউজেনিয়া চিনেনেয়ে এনডুক চীনে এসে গণকূটনীতি বিষয় শেখা শুরু করেন। তিনি মনে করেন এটি হল তাঁর জীবন পরিবর্তনের সুযোগ। কারণ এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি চীনের আসল অবস্থা ও নীতি সম্পর্কে অনেক জানতে পারেন। তিনি অনুভব করেন যে, চীন কিভাবে একটি স্পন্দনশীল দেশে পরিণত হয়েছে যা আজ বিশ্বের কাছে প্রশংসনীয়।
তিনি বলেন, জনবহুল দেশ চীনের দ্রুত বৃদ্ধি ও সাফল্য সম্পর্কে আমি আগ্রহী। এবারের প্রশিক্ষণ আমাকে চীনের কূটনীতি বুঝতে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমি চীনের বিভিন্ন কূটনীতিকদের বিভিন্ন ভাষণে চীনা গণকূটনীতি সম্পর্কে জেনেছি। এটি হল আসল সংলাপের ভিত্তিতে স্থাপিত পারস্পরিক আদান-প্রদান।
এরপর তিনি চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির বৃত্তি পান। এখন পিএইচডি বৃত্তিও পেয়েছেন তিনি। চীনে শেখার মাধ্যমে তিনি চীনের কূটনৈতিক দর্শন সম্পর্কে ব্যাপক বুঝতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, 'আমি বিশেষ করে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের কথা বলবো। এটি হল সংশ্লিষ্ট উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থনৈতিক ও অবকাঠামো উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ এবং চীনের কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমি মনে করি, প্রত্যেকের উচিত এ উদ্যোগের প্রশংসা করা। চীন বর্তমানে বিশ্বের কাছে সম্প্রীতিময়, শ্রদ্ধা, আনুগত্য, মানবতা ও সংযমের ধারণা প্রদর্শন করছে। এ ধারণা হল চীনের উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের স্তম্ভ।'
চীনে লেখাপড়ার সময় ইউজেনিয়া অনেক প্রদেশ ও শহর ভ্রমণ করেন। তিনি চীনা সংস্কৃতি অনেক জেনেছেন। মাস্টার্সে অধ্যয়নের সময় তিনি চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী সমিতির সামাজিক কল্যাণ সমিতি গড়ে তোলেন। সমিতির সদস্যরা বয়স্কদের সান্ত্বনা, শিশুদেরকে সহায়তা এবং স্থানীয় এলাকায় বিনামূল্যে ইংরেজি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। ইউজেনিয়া চিলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সম্মেলনে অংশ নেন। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উদ্যোগে 'মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি' গড়ে তোলার উদ্যোগ তিনি বলেন, 'চীন অব্যাহতভাবে বিশ্বে নিজের ভূমিকা পালন করছে। আমরা হলাম অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটির মানুষ, আমাদের উচিত একসঙ্গে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষের কমিউনিটি গড়ে তোলা।' (ছাই/টুটুল)