সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম ২০১৯-এর বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন
  2019-01-23 15:01:26  cri

২০১৯ বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন গতকাল (মঙ্গলবার) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে উদ্বোধন করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলো জনগণকেন্দ্রিক একটি 'বিশ্বায়ন ৪.০' বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছে। বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিন 'হট টপিক' ছিল 'চীন'।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগের দিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল দাভোসে 'ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট'-এর আপডেট কন্টেন্ট প্রকাশ করে। এতে ২০১৯ ও ২০২০ সালের বিশ্ব অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রত্যাশা কমিয়ে ৩.৫ ও ৩.৬ শতাংশ ধরা হয়। বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মধ্যে ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে-- এ প্রেক্ষাপটে সংরক্ষণবাদ, একতরফাবাদ ইত্যাদি সারা বিশ্বে ক্রমাগত জোরদার হচ্ছে। এ সম্পর্কে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ক্লাউস শওয়াব গতকাল সকালে বার্ষিক সম্মেলনের দেওয়া বিশেষ ভাষণে বলেন, বিশ্বায়ন একটি বাস্তবতা এবং বহুপক্ষবাদ লাখ লাখ মানুষের দারিদ্র্য নিরসনে ভূমিকা রাখে। কিন্তু বিশ্বায়নও কিছু লোককে ক্ষতিগ্রস্ত এবং দরিদ্র করেছে। বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়, সব পক্ষকে বিশ্বায়ন পুনরায় সংহত করতে হবে। 'বিশ্বায়ন ৪.০' র উচিত জনগণকেন্দ্রিক, আরো সমুন্নত এবং টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া। এটি বিশ্বের সমৃদ্ধি এবং টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য।

২২ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বাণিজ্যিক মহল, একাডেমিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়াসহ বিভিন্ন মহলের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞ প্রায় ৩ হাজার লোক 'বিশ্বায়ন ৪.০: চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগের জন্য একটি বিশ্বব্যাপী স্থাপত্য নির্মাণ' প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রায় ৪'শ আলোচনা সভা চালাবে। বহুপক্ষবাদের বিশ্বে একটি টেকসই এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজের একটি নতুন মডেল নির্মাণ করা নিয়ে আলোচনা হবে।

বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিনে 'হট টপিক' ছিল 'চীন'। এদিন সকালে 'বৈশ্বিক আর্থিক ঝুঁকি পুনর্বিবেচনার' একটি আলোচনায় চীনের অর্থনীতি কেন্দ্রীয় বিষয় হয়ে ওঠে। আলোচনায় ছিল চীনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি হ্রাস। চীনের সিকিউরিটিজ রেগুলেটরি কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান ফাং সিং হাই জানান, চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যবিষয়ক সমস্যা এবং রিয়েল এস্টেট বাজারের বৃদ্ধির গতি কমায় চীনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গতি কমেছে। কিন্তু ২০১৯ সালে চীনের জিডিপি বৃদ্ধির প্রায় ৬ শতাংশ হতে পারে বলে আশা করা যায়। এই বৃদ্ধির হার ধীর নয়। ফাং সিং হাই বলেন, চীনের অর্থনীতি ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলে এখনও রাজস্ব নীতিতে পরিবর্তনের অনেক সুযোগ রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চীন আর্থিক খাতসহ তার উন্মুক্ততা আরও প্রসারিত করবে। এদিন বিকেলে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ সংক্রান্ত এক ফোরামও সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

নিজস্ব সমস্যার কারণে দাভোস ফোরামে অংশগ্রহণ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গতকাল বিকেলে ভিডিওর মাধ্যমে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে একটি ভাষণ দেন। তিনি অব্যাহতভাবে "যুক্তরাষ্ট্র প্রথম" এবং বহুপক্ষবাদবিরোধী অবস্থানের পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে ওয়াশিংটনে চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ভালোভাবে মতবিনিময়ের প্রত্যাশা করেন তিনি। কিন্তু প্রতিনিধি দলের মধ্যে কোনো ব্রেকথ্রু থাকা-না থাকা নিয়ে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি।

আজ বুধবার বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন ২০১৯-এ আসবেন জার্মান চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মার্কেল, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং ছি শানসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরা।

(জিনিয়া/তৌহিদ/লিলি)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040