সিনচিয়াংয়ের ধর্মীয় ব্যক্তিদের সিল্ক রোড সেলিব্রেটিদের সঙ্গে সংলাপ
  2019-01-22 10:15:20  cri

সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপের উদ্যোগে সপ্তম 'রেশম পথ বরাবর দেশগুলোর বিখ্যাত ব্যক্তিদের চীন সফর' কর্মসূচির আওতায় চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী উরুমুচির ইসলামিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন অতিথিরা।

এই ইসলামী অনুষদের প্রশিক্ষণমূলক বিশেষায়িত একটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যান তুরস্ক, বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও মিশরসহ মোট ৬টি 'এক অঞ্চল, এক পথ' বরাবর দেশের সাংবাদিক প্রতিনিধিরা। তারা চীনের 'ধর্মীয় স্বাধীনতা নীতি' সম্পর্কে সরাসরি জানতে পারেন। তা ছাড়া, প্রতিনিধিরা চীনা ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস-চেয়্যারম্যান, সিনচিয়াংয়ের ইসলামিক কলেজের ডিনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

একটি স্কুল ভবনে প্রবেশ করে শিশুদের জোরে জোরে পড়া শুনতে পান। সিনচিয়াংয়ের ইনিং অঞ্চলের উইগুর ছেলে কাউসার হলো এই কলেজের পাঁচ বছর সিস্টেমের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর একজন শিক্ষার্থী। অর্ধেক বছরেই স্নাতক করতে পারে সে। ভবিষ্যতের কাজ সম্পর্কে কাউসার জানায়,

"আমি জন্মস্থানে ফিরে যাবো। এখানে যত বেশি শিখতে পারব, আমার জন্মস্থানের মানুষকে তত বেশি শেখাতে পারব।"

সিনচিয়াংয়ের ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক স্টাডিজের ডিন আবুদুরেখেভ বলেন, বর্তমানে ইনস্টিটিউটে মোট ৬৩০জন ছাত্রছাত্রী আছে। শিক্ষার বিষয়বস্তু: জাতীয় ভাষা এবং ধর্মীয় জ্ঞান। কলেজটি সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে ৮টি শাখা-কলেজ স্থাপন করেছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে মোট প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। ডিন আবুদুরেখেভ বলেন,

"স্কুলের সময়, সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য মাসিক ৬শ' ইউয়ান খাবার ভর্তুকি দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাসি, হ্যথিয়ান, খ্যচৌ, আখসু, দক্ষিণ সিনচিয়াংয়ের কৃষক পরিবারের শিক্ষার্থীদের আবাসন ফি মওকুফ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি সেমিস্টারে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর ৪ হাজার ইউয়ান বৃত্তির সুযোগ রয়েছে।"

ধর্মীয় কর্মীদের শিক্ষার পাশাপাশি কলেজটি সিনচিয়াংয়ের সব ইসলামী অনুষদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়। ২০১৮ সালে ২৩০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং ২০১৯ সালে ২০০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনের পর তুরস্কের এটিভি'র সংবাদদাতা এরদুল কুরুকাই বলেছেন,

"আমরা খুব সুন্দর ক্যাম্পাস দেখেছি, খুব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেখেছি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, ছাত্রছাত্রীরা কোরান শরীফ পড়ছে।"

স্কুল ভবনের বাইরে হেঁটে হেঁটে আপনি দেখতে পারেন যে কাছেই একটি সুন্দর মসজিদ। এটি সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সরকারি কলেজ ছাত্রছাত্রীদের স্বাভাবিক ধর্মীয় কার্যক্রম নিশ্চিত করার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত। এখানে একইসঙ্গে ১২০০ শিক্ষার্থী ধারণ করতে পারে। প্রতিনিধিদলের মুসলিম সাংবাদিকরা এদিনে সেখানে নামায পড়েন।

প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনের পর অন্য সাংবাদিকরা বলেন,

"চীন সরকার নাগরিকদের স্বাধীন ধর্মীয় অধিকারকে সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনও প্রণয়ন করেছে। এর উদ্দেশ্য হলো, আইনানুসারে জনগণের স্বাভাবিক ধর্মীয় কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করা। যারা চীনের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য প্রচার করে, তাদের উচিত সিনচিয়াং পরিদর্শন করা। স্থানীয় পরিস্থিতি সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরা; এতে চীনের সিনচিয়াংয়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি দূর হবে।"

মিশরের আল আহরাম একতাসদী ম্যাগাজিনের জার্নাল সম্পাদক সামিয়া মনসুর এবং পাকিস্তান এফএম৯৮-এর চীন-পাকিস্তান মৈত্রী বার্তার তাসওয়ার বাবর মনে করেন, পশ্চিমা গণমাধ্যমে চীনের জাতিগত ও ধর্মীয় নীতিমালার বিরুদ্ধে অনেক নেতিবাচক ও অসত্য রিপোর্ট রয়েছে। কিন্তু তারা সিনচিয়াংয়ে আসলে জানতে পারবে যে, পশ্চিমা মিডিয়ার প্রতিবেদন ভিত্তিহীন।

"যারা নেতিবাচক মন্তব্য লিখে তাদের এখানে আসতে হবে। আসার পর তার জানতে পারবে যে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ভুল।"

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040