২১ জানুয়ারি রাত ১২টা ২৯ মিনিটে 'কে ৪০৫১' রেলগাড়ি বেইজিং স্টেশন থেকে রওনা হয় এবং বসন্ত উত্সবের যাতায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
বেইজিং থেকে নানথোং পর্যন্ত এই সাধারণ গতির রেলগাড়িটি হলো বসন্ত উত্সবের যাতায়াতের জন্য অস্থায়ীভাবে চালু হওয়া প্রথম রেলগাড়ি। যাত্রার মোট সময় ১৮ ঘণ্টা।
গত শতাব্দীর ৭০ দশকের শেষ দিকে বসন্ত উত্সবের যাতায়াত শুরু হয়। চীনের সংস্কার উন্মুক্তকরণ নীতির কল্যাণে অনেক লোক বাইরে কাজ করেন এবং লেখাপড়া করেন। ফলে বসন্ত উত্সবের যাতায়াতের প্রয়োজন দেখা দেয়। চীনা নববর্ষের আগে শহরে কাজ করা এবং লেখাপড়া করা লোকেরা ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতি অনুযায়ী জন্মস্থানে ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হন। বসন্ত উত্সবের পর তারা আবার শহরে ফিরে যান। ফলে বিশ্বের বৃহত্তম 'মানব স্থানান্তর' বা 'মানব মাইগ্রেশনের' রেকর্ড তৈরি হয়। ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি বছর বসন্ত উত্সবে যাতায়াতকারী লোকসংখ্যা ৩০০ কোটি পার্সন-টাইমসের কাছাকাছি পৌঁছায়।
বসন্ত উত্সব চলাকালে বেইজিংয়ের রেলগাড়ির পরিবহন ক্ষমতা বাড়াতে 'কে ৪০৫১ নম্বর' রেলগাড়ির মতো মোট ৭৫টি ট্রেন চালু করা হয়েছে। যা প্রধানত চিনান, ছাংছুন ও হারবিনসহ বিভিন্ন শহরে চলাচল করে। চায়না রেলওয়ের বেইজিং গ্রুপের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন,
'চলতি বছর বসন্ত উত্সবের পরিবহনের জন্য সিআর ট্রেন প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সোমবার বেইজিং দক্ষিণ স্টেশন থেকে অস্থায়ীভাবে সিআর ট্রেন চালু হয়েছে।'
বসন্ত উত্সবের সময় যাত্রীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হিসেবে চীনের রেলপথের যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা ৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। পরিবহন ক্ষমতা বাড়ানো ছাড়াও টিকিট কেনা, স্টেশনে প্রবেশ করা এবং ট্রেনে ওঠাসহ প্রত্যেক কাজে সুবিধাজনক সেবার কারণে যাত্রীদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরিবেশ আরও সুষ্ঠু হয়েছে। বেইজিং স্টেশনে ডিজিটাল টিকিট পাওয়া এবং স্টেশনে প্রবেশ করার যান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যাপক যাত্রী সুবিধা দিয়েছে। বেইজিং স্টেশনের মুখপাত্র সিয়ে জিং ই বলেন,
'আমরা টিকেট অফিসে নতুন করে ৪৫টি স্বয়ংক্রিয় টিকেটসেবা ভেন্ডিং মেশিন বাড়িয়েছি। তা ছাড়া, আরও ১৮টি স্বয়ংক্রিয় সার্ভিস গেট স্থাপন করা হয়েছে।'
যাত্রীদের আরও নিরাপদ, সুষ্ঠু যাত্রা নিশ্চিত করতে রেলপথ ও বেসামরিক বিমান পরিবহন কিছু সৃজনশীল ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের সেবা সুবিন্যাস্ত করেছে। চীনের বেসামরিক বিমান প্রশাসন চীনের বেসামরিক বিমান পরিবহন ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি দিয়ে সারা দেশের প্রধান বিমানবন্দরে 'কাগজহীন' যাতায়াত বাস্তবায়িত করা হয়, যা যাত্রীদেরকে অনেক সুবিধা দেয়।
তিনি বলেন,
'২২৯টি বিমানবন্দরে নিজ-চেক ইন বুথ এবং ইলেকট্রনিক বোর্ডিং পাস ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ১২টি এয়ারলাইন্সের ৩০০টিরও বেশি বিমানে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়েছে। টিকেট ফেরত দেওয়া অথবা সময় পেছানোর মতো কার্যক্রম আরও সহজ করা হয়েছে।'
(লিলি/তৌহিদ)