সংবাদ পর্যালোচনা প্রসঙ্গ: একজন বাংলাদেশিসহ ৬ বিদেশি সাংবাদিকের সিনচিয়াং সফর
  2019-01-18 13:34:23  cri

সফরের নাম 'রেশমপথের পুনরাবিষ্কার' বা 'রিডিসকভারি অব সিল্ক রোড'। এটি ছিল এ ধরনের সপ্তম সফর। অংশগ্রহণ করেন একজন বাংলাদেশিসহ ৬ জন বিদেশি সাংবাদিক। তারা সফর করেন চীনের সিনচিয়াং; অনুভব করেন সিনচিয়াংয়ের সংস্কৃতিকে।

সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্বশাসিত এলাকার কাসগর শহরের শুফু জেলার সিনচিয়াং জাতীয় বাদ্যযন্ত্র গ্রামে, স্থানীয় সংখ্যালঘু জাতির গায়ক পশ্চিম এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার গানের মাধ্যমে, চায়না মিডিয়া গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত সপ্তম 'রেশমপথের পুনরাবিষ্কার' শীর্ষক কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিদেশি সাংবাদিকদের স্বাগত জানান। ৬ সাংবাদিকের একজন হচ্ছেন পাকিস্তানের এফএম৯৮-এর উপস্থাপক তাছাওয়ার জামান বদর। তিনি সফরের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সিন চিয়াং জাতীয় বাদ্যযন্ত্র গ্রামের ইতিহাস ১৫০ বছরেরও বেশি। এখানে ২৭৩টি পরিবারের ৫০০ জনের বেশি সদস্য ২৭ ধরনের জাতীয় বাদ্যযন্ত্র তৈরি করে আসছে। ২০০০ সালে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদ এ গ্রামকে 'সিনচিয়াং জাতীয় বাদ্যযন্ত্র গ্রাম' নাম দেয়।"

আপনারা এখন যে সংগীত শুনছেন তা উইগুর জাতির ঐতিহ্যবাহী সংগীত 'বারো মুকামের' একটি অংশ। বারো মুকামে রয়েছে গান, কবিতা, সংগীত, নাচ ও বাদ্যযন্ত্রের বাজনা। এর ইতিহাস এক হাজার বছরের বেশি এবং এটি বিশ্ব অবৈষয়িক ঐতিহ্যের অন্যতম। অন্যদিকে তুরস্কের ইজমির সাংবাদিক কমিটির চেয়ারম্যান মিসকেত দিকমেন 'ব্যাক টু দা সিল্ক রোড' শীর্ষক একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখার পর চীনা বন্ধুকে আলিঙ্গন করেন এবং তার চোখ ভরে যায় পানিতে। তিনি বলেন, "সিনচিয়াং সফর আমার ভাল লাগছে। লোকসংগীত শুনেছি এবং স্থানীয় লোকের সঙ্গে নেচেছি। আমার খুব ভালো লেগেছে। এখানকার গানের সুরের সঙ্গে আমাদের তুর্কি সংগীতের সুরের মিল আছে। সংস্কৃতি আমাদেরকে যুক্ত করে।"

সফরকালে বিদেশি সাংবাদিকরা কাসগর পুরাতন নগর পরিদর্শন করেন। এ নগরের ইতিহাস ২ হাজার বছরের বেশি এবং মোট আয়তন ৮.৩৬ বর্গকিলোমিটার। এখানে বাসিন্দার সংখ্যা ২২১ হাজার। পাকিস্তান এফএম৯৮-এর উপস্থাপক তাছাওয়ার জামান বদর বলেন, "আমি খুব খুশি হই যখন দেখি যে, চীনে গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণও একসাথে চলছে এবং এতে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। চীনের ছাপান্ন জাতির সংস্কৃতি, পোশাক, স্থাপত্যশৈলী, জীবনরীতি ও খাওয়ার অভ্যাস সংরক্ষিত আছে। কাসগর ও উরুমুছি সফরের মাধ্যমে আমি বুঝতে পারি, সংস্কৃতির প্রতি মানুষের ভালবাসার কারণে ঐতিহ্য এখনও বেঁচে আছে এবং তা এখনও প্রাণবন্ত।"

কাসগর শহরের নাইজার বাগ জেলার ১৪ নম্বর গ্রামের কিন্ডারগার্টেনের শিশুরা নাচ ও গানের মাধ্যমে চীনের থাং রাজবংশ আমলের কবি মেং হাও রানের বিখ্যাত কবিতা 'বসন্তকালের সকাল' পরিবেশন করে। পাশে একটি ক্লাসরুমে শিশুরা উইগুর ভাষার নার্সারি ছড়াগুলি পাঠ করছে। আফগানিস্তানের কান্দাহার সাপ্তাহিক পত্রিকা ওরবান্দের প্রধান সম্পাদক আব্দুল মতিন আমিরি বলেন, "যখন আমরা কিন্ডারগার্টেন পরিদর্শন করি, তখন আমি খুব অভিভূত হয়েছি। কারণ, শিশুরা চীনা সংস্কৃতি শিখছে এবং অন্যদের সামনে তা প্রদর্শন করছে। এর আগে আমরা সিনচিয়াংয়ের একটি মাধ্যমিক স্কুলে গিয়েছি। সেখানে হস্তলিপিশিল্প ক্লাসে, একটি মেয়ে হান ভাষা ও উইগুর ভাষায় লিখেছে: 'পুরাতন জ্ঞান শেখার মাধ্যমে নতুন বুদ্ধি পাওয়া'। এর মাধ্যমে যেন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর সেটা হচ্ছে: ইতিহাস ভুলে যাবেন না; সবসময় নিজের সংস্কৃতিকে লালন করবেন; এবং ভুলে যাবেন না আপনি কোথা থেকে এসেছেন।" (শিশির/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040