রোববারের আলাপন-190106
  2019-01-06 19:27:32  cri


আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন 'রোববারের আলাপন'। আপনাদের সঙ্গে আছি এনামুল হক টুটুল এবং শিয়েনান আকাশ।

আকাশ: শুভ নববর্ষ ভাইবোনেরা!

টুটুল: শুভ নববর্ষ সবাইকে!

আকাশ: বন্ধুরা, নতুন বছর উপলক্ষ্যে চীনে তিনদিন জাতীয় ছুটি থাকে। টুটুল, এ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে কতদিন ছুটি থাকে?

টুটুল:

আকাশ: আচ্ছা, আমি আশা করি আমাদের ভাইবোনেরা এই ছুটিতে বা নতুন বছর উদযাপন উপলক্ষ্যে চমত্কার সময় কাটিয়েছেন।

টুটুল: ভাই, আপনি কোথায় কোথায় গিয়েছেন ছুটিতে?

আকাশ: আমি বাবামাকে নিয়ে পাহাড় আরোহণ করেছি। খুবই সুন্দর দৃশ্য।

টুটুল: কিন্তু ঠাণ্ডা না ভাই?

আকাশ: হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলেছ, অনেক ঠাণ্ডা এবং প্রচণ্ড বাতাস। কিন্তু এটা হলেও অনেক সুন্দর এবং মজার। ভাই, তুমি কোথায় কোথায় গিয়েছ? কুয়াং চৌতে আবার গিয়েছিলে?

টুটুল:...

আকাশ: আচ্ছা, অনেকে আমাকে অভিযোগ করে বলেন, ইস, আবার ছুটি শেষে কাজে ফিরে যেতে হবে। আমি আপনাদের বলতে চাই, এমন চাকরি করুন বা এমন কিছু করুন যা আপনি আপনার হৃদয় থেকে ভালোবাসেন বা পছন্দ করেন।

জাপানের বিখ্যাত একজন ফুটবলার হিদেতোশি নাকাতা একটি খুব মজার কথা বলেছেন, বন্ধু, যদি তুমি বলো যে জীবনে লেগে থাকতে হবে, এটা ঠিক। কিন্তু একটি জিনিস বা কাজ যদি মন থেকে পছন্দ করো, তাহলে লেগে থাকা দরকার নেই বা চাপ লাগবে না, তাইনা? এমনিতেই আপনি তখন মন প্রাণ দিয়ে এ কাজ করতে থাকবেন এবং অনেক আনন্দ পাবেন।

টুটুল:...

আকাশ: এ ছাড়া, জীবনে আনন্দের জন্য আরেকটি প্রস্তাব দিতে চাই।

টুটুল: কি ভাই?

আকাশ: আপনি শর্মা খেতে খেতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনবেন।

টুটুল: ...

সংগীত

টুটুল: বন্ধুরা, ১৯৬৯ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা বিভাগ যাত্রা শুরু করে। ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে বেইজিংয়ে বাংলা বিভাগের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি ছোট উদযাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে সিআরআই দক্ষিণ এশিয়া সম্প্রচার কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ, অন্য বিভাগসমূহের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলা বিভাগের সবাই অংশ নেন।

গান

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা বিভাগে কর্মরত চীনারা একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন। তারপর বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ প্রফেসর শি চিং উ এবং প্রফেসর পাই খাই ইয়ুয়ান ভাষণ দেন।

প্রফেসর শি চিং উ বলেন...

প্রফেসর পাই খাই ইয়ুয়ান বলেন...

আকাশ: বন্ধুরা, প্রফেসর পাই ঠিকই বলেছেন, সময় বয়ে যায় নদীর মত। ইতোমধ্যে ৫০ বছর ধরে আপনারা বাংলা অনুষ্ঠান শুনছেন। আমি খুব সৌভাগ্যবান যে বাংলাদেশে থাকার সময় কয়েকজন পুরনো শ্রোতাবন্ধুর সাথে আমার পরিচয় হয়। তাদের দেখে আমার অনেক আনন্দ লাগে, তাদেরকে অনেক আপন মনে হয়। তারা খুব সাবলীলভাবে আমাদের বিশেষজ্ঞদের নাম বলতে পারেন। যেমন- ফেং শিউ ছিয়ান, পাই খাই ইয়ুয়ান, থান ইয়াও খাং, চিয়ানচিং ছেং প্রমুখ। শ্রোতাবন্ধুদের মুখে এসব নাম শুনে আমি অনেক মুগ্ধ।

বন্ধুরা, প্রথমে আমরা আপনাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। ৫০ বছর ধরে আপনারা পরিবারের মত আমাদের সাথে আছেন এবং আমাদেরকে সমর্থন করছেন। আমরা ভবিষ্যতে আরো সুন্দরভাবে অনুষ্ঠান তৈরির চেষ্টা করবো। আশা করি আপনারা সবসময়ই আমাদের সঙ্গে থাকবেন।

টুটুল:...

সংগীত

টুটুল: বন্ধুরা, নতুন বছরে বাংলাদেশের জনগণকে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চাং চুও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০১৯ নববর্ষ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন দূতাবাসের সকলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।

২০১৮ সাল হচ্ছে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। দু'দেশ উচ্চ পর্যায়ের আদানপ্রদান বজায় রেখে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ করেছে। ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দু'পক্ষের বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। তা এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১.৩ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তির পরিমাণ ৮.৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। তা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থানে রয়েছে। পদ্মা সেতুসহ ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের নির্মাণকাজ চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে করছে। চীন সরকারের ইতিবাচক উদ্যোগে দু'দেশ সংস্কৃতি, সামরিক, পর্যটন, খেলাধুলা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করেছে।

২০১৯ সাল হচ্ছে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি। আমরা অব্যাহতভাবে অভিন্ন উন্নয়ন এবং 'উইন-উইন' কৌশল ধারণ করে নিজের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা এবং সুযোগ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণের কাছে শেয়ার করবো।

বাংলাদেশ সরকারের উত্থাপিত 'সোনার বাংলা স্বপ্ন' ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উত্থাপিত 'চীনা স্বপ্ন'-এর অনেক মিল রয়েছে। বাংলাদেশকে চীনের উন্নয়নের "উচ্চগতির ট্রেন'-এ উঠে অভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা স্বাগত জানাই। ভবিষ্যতে চীনের ভালো সুনাম অর্জনকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশ নিতে উত্সাহিত এবং সমর্থন করি। পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে চীনে বাণিজ্যের সুযোগ বা সহযোগিতা খোঁজাকে আমরাও স্বাগত জানাই। দু'দেশের বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষি, অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দু'পক্ষের হাতে হাত রেখে মিলিতভাবে স্থাপন করা হয়। দু'দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অব্যাহতভাবে চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব, 'উইন-উইন' ও সহযোগিতার চেতনা অনুসরণ করে সেতুর মত দু'দেশের ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব আরো উন্নত করবে বলে আমি আশা করি। কামনা করি বাংলাদেশের জনগণের জীবন সুন্দর ও সমৃদ্ধ হবে এবং আরো উন্নত হবে চীন-বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব।

আকাশ: ভাই, এটা দেখার পর আমার মনে অনেক অনুভূতি তৈরি হয়েছে। আমি ছয় বা সাত বছর আগে যখন বাংলাদেশে প্রথম গিয়েছিলাম, তখন উত্তরায় চীনা মানুষ দেখতে পেতাম না। যদি রাস্তা বা সুপারমার্কেটে কোনো চীনা মানুষ দেখতাম, তাহলে অনেক কথা বলতাম। অনেক আপন মনে করতাম। কিন্তু এখন উত্তরায় সব জায়গায় চীনা মানুষ দেখা যায়। এ ছাড়া কনফুসিয়াস ক্লাসরুমে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ছিলো ৬০জন, ২০১৮ সালের মার্চে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬৮জন। দু'দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের আদানপ্রদান বা সহযোগিতার মান দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আমি আশা করি এবং কামনা করি দু'দেশের বন্ধুত্ব আরো সমৃদ্ধ হবে এবং সহযোগিতার মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের জীবনমান আরো উন্নত হবে।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040