২০১৮ সাল হলো চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের গভীর উন্নয়নের একটি বছর। দু'দেশের উচ্চ পর্যায়ের বিনিময় বজায় রয়েছে, আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ২০১৮ সালের প্রথম দশ মাসে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়, যা আগের বছরের তুলনায় ২১.৩ শতাংশ বেশি হয়েছে। বাংলাদেশে চীনা শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি প্রকল্পের মূল্য ৪.৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে চীনের অলাভজনক সরাসরি পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ ১৪ কোটি মার্কিন ডলার; যা আগের বছরের তুলনায় ১.৮৫ গুণ বেশি হয়েছে। বাংলাদেশে চীনের পুঁজি বিনিয়োগে ব্যাপক উন্নতি দেখা যাচ্ছে। চীনা কোম্পানির তৈরি পদ্মা সেতু, রেলপথ প্রকল্প, পায়রা পাওয়ার স্টেশন, কর্ণফুলী নদীর টানেল, চট্টগ্রামে চীনা শিল্প উদ্যানসহ ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন সরকার ও বাংলাদেশের চীনা দূতাবাসের সক্রিয় সমর্থনে সংস্কৃতি, বাহিনী, পর্যটন, ক্রীড়া ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে দু'দেশের সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে।
২০১৯ সাল হলো গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। আমরা অব্যাহতভাবে যৌথ উন্নয়নের পথে অবিচল থাকবো, পারস্পরিক উপকারিতা এবং উভয় কল্যাণের উন্মুক্ত কৌশল অনুসরণ করবো, নিজ উন্নয়নের অভিজ্ঞতা ও সুযোগকে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বিনিময় করবো। বাংলাদেশ সরকারের উত্থাপিত 'সোনার বাংলা' স্বপ্ন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের উত্থাপিত 'চীনা স্বপ্ন' ও 'দুটি একশ বছরের স্বপ্নের' মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। চীনের উন্নয়নের 'দ্রুত গাড়িতে' বাংলাদেশকে যোগ দেওয়ার জন্য স্বাগত জানাই আমরা। যাতে যৌথ উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যায়। ভবিষ্যতে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ চীনা কোম্পানিকে বাংলাদেশে পুঁজি বিনিয়োগে সমর্থন ও উত্সাহ দেবে চীন এবং সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও নির্মাণকাজে অংশ নেবে। চীনও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে চীনে বাণিজ্যিক সুযোগ খোঁজা এবং সহযোগিতার জন্য স্বাগত জানায়। যাতে অর্থ-বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষি ও অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু'দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে দু'দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করা যায়।
চীন ও বাংলাদেশ হাতে হাত রেখে গভীর মৈত্রী স্থাপন করেছে। আমি আশা করি, চীন ও বাংলাদেশের বন্ধুভাবাপন্ন ব্যক্তি অব্যাহতভাবে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী এবং পারস্পরিক উপকারিতা ও কল্যাণের মর্মে সেতুর ভূমিকা পালন করবে, চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী প্রচারকারী, বাস্তবায়নকারী এবং নির্মাণকারী হবে, যাতে দু'দেশের ঐতিহ্যিক মৈত্রী বংশানুক্রমে বজায় থাকে।
বাংলাদেশের জনগণের জীবন সুখী ও উন্নত হোক!
চীন-বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী অমর হোক!
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত
জাং জুও
(শুয়েই/তৌহিদ)