বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
  2018-12-29 15:37:54  cri

বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় সারাদেশ। কারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন? ক্ষমতাসীন মহাজোট, নাকি তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট? এ প্রশ্নের নিষ্পত্তি করতেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। শুক্রবার সকালে নির্বাচন ভবনে ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্র ও গণমাধ্যম বুথ পরিদর্শনে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, সব দল ও সবচেয়ে বেশি প্রার্থী এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। উৎসবমুখর ভোট হবে, এটাই আশা করছি। আসলেই কি শান্তিপূর্ণ ও উত্সবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কি? বিস্তারিত থাকছে আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

নির্বাচনী প্রচারণায় দেশজুড়ে সহিংসতা হলেও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে ভোটের সার্বিক প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে কমিশন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। অন্যদিকে উদ্বেগ আর উত্কণ্ঠায় রয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

আগামীকালের নির্বাচনকে ভোট উত্সবে পরিণত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, নির্বাচন অবশ্যই উত্সবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার সকালে নির্বাচন ভবনে ফলাফল ঘোষণা কেন্দ্র ও গণমাধ্যম বুথ পরিদর্শনে গিয়ে এ-কথা বলেন তিনি। সিইসি বলেন, নির্বাচনের প্রচারণা শুক্রবার সকাল আটটা থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন প্রার্থী ও প্রার্থীর সমর্থক সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যার যার অবস্থান থেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। কাউকে কোনো ধরনের বাধা কেউ দিতে পারবে না। নির্বাচন নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে বিএনপি ও বিরোধীপক্ষের এ অভিযোগের ব্যাপারে সিইসি বলেন, তাদের অভিযোগ অবশ্যই ভুল প্রমাণ হবে। ভোটাররা সবাই উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে ভোট দিবে।

এবারের নির্বাচনে ১৮৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে নিবন্ধিত ৩৯ দলের ১৭৩৩ জন ও স্বতন্ত্র ১৮২ জন রয়েছেন। রাজনৈতিক দল সমর্থিত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রসাশনের বাধা উপেক্ষা করে নিজস্ব পোলিং এজেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা নিয়ে ব্যস্ত। ভোটে মূল লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যে।

নির্বাচনে নিবন্ধিত সব দল অংশ নিয়েছে। পাশাপাশি অনিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল প্রধান দুই জোটের সঙ্গী হয়ে নির্বাচনে লড়ছে। এর বাইরে বাম মোর্চা ও কয়েকটি ইসলামি দলের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়িয়েছেন।

ভোটগ্রহণ উপলক্ষ্যে রবিবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ব্যাংকও বন্ধ রাখা হয়েছে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ হয়েছে শুক্রবার বিকাল ৫টা থেকে, এ নিষেধাজ্ঞা বলবত্ থাকবে ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত। জনগণের ভোগান্তি কমাতে এটিএম বুথগুলোতে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশনা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। যানবাহন চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কমিশনের অনুমোদিত পরিচয়পত্রধারীর বাইরে কোনো যান চলাচল করবে না।

এদিকে সরকার নিয়ন্ত্রিত দেশের পুলিশ ও প্রশাসনে দলীয়করণের অভিযোগের প্রসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, পুলিশের দিকে দেখুন তারা কী করছে? পুলিশ এখন দলীয় লাঠিয়ালে পরিণত হয়েছে। এর অবসান হওয়া দরকার। আমি পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে এতো বিপুল সংখ্যক গ্রেফতার দেখিনি। এটা 'সম্পূর্ণ স্বৈরতন্ত্র'। আমরা ভারতের প্রকৃত সহযোগিতা চাই।

তিনি বলেন, আমি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘোষণাকারী নই। আমি ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধ। আমি শুধু দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। আমি ভোটের দিনের অপেক্ষায় আছি। ভোটের দিন একটি স্বাধীনতার দিন। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে তা হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতার দিন। এখন গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে স্বাধীনতা অর্থপূর্ণ হবে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ কোটি ২৩ লাখ নতুন ভোটার রয়েছেন। নতুন ভোটারসহ মোট ভোটার ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৫ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৩১২ জন।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040