গত সপ্তাহের অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা শুনেছিলাম, ইয়ুন চি ফান হাসপাতালে হাজির হন। ইয়ুন আর চিয়াং পরস্পর অনেক বেশি কথা বলতে চায়, কিন্তু কেউ কথা বলেনি। নীরব হয়ে তারা দীর্ঘ সময় ধরে একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।
ইয়ুন কাগজপত্র দেখে হাসপাতালে গিয়ে চিয়াংয়ের কাছে আসেন। অনেক বছর পার হয়েছে; অপ্রত্যাশিতভাবে, তারা ৪০ বছর পর আবার পরস্পরের দেখা পেয়েছেন। কিন্তু চিয়াং জানতেন না যে ইয়ুন আসলে সবসময় থাইপেইতে ছিলেন। সেজন্য চিয়াং কুনমিংয়ে ইয়ুনের কাছে হাজার হাজারটি চিঠি পাঠালেও ইয়ুন একটিও চিঠি পাননি। চিঠি পাননি তাই উত্তর দেননি। এই ৪০ বছরে তারা বিয়ে করেছেন; কিন্তু ভিন্ন মানুষকে। ৪০ বছর আগে, এত বিশাল শাংহাইয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হন। কিন্তু এত ছোট থাইপেই- অথচ ৪০ বছর একে অপরের সাথে দেখা হয়নি কখনও। হাসপাতালে তারা কি বেশি কথা বলেন? না, ইয়ুনের ছেলে হাসপাতালের বাইরে তার জন্য অপেক্ষা করছে। সে আসে, সে আবার চলে যায়। চিয়াং এত বেশি জিজ্ঞাসা করতে চায় কিন্তু একটি প্রশ্ন এখনও বলার সময় হয়নি।
বন্ধুরা গল্পটি এখনে শেষ। পুনর্মিলন আনন্দ এবং উত্তেজনা, তাইনা?
না। চল্লিশ বছরেও গভীর অনুভূতি মুছে ফেলা যায়নি! মানুষের মধ্যে বড় পার্থক্য আছে। কোন কোন মানুষ ইয়ুনের মতো অতীত ভুলে যান এবং সামনে এগিয়ে যান; কোনো কোনো মানুষ অতীতের মধ্যে চিরকাল বসবাস করেন!
বন্ধুরা, যদি আপনি নিজের জন্য কোনটি বাছাই করবেন?
বন্ধুরা, নাটকটির পরিণাম এখানেই শেষ। এখন শুনুন সাংস্কৃতিক খবর পর্ব।
১.
'২০১৮ জার্মান ফেয়ারি টেল সপ্তাহ' ও জার্মানিতে চীনা দূতাবাসের কর্মসূচি:
'২০১৮ জার্মান ফেয়ারি টেল সপ্তাহ' তত্পরতা ১৫ নভেম্বর জার্মানিতে চীনের দূতাবাসে শুরু হয়। বার্লিন থেকে ৪০ জনেরও বেশি জার্মান শিক্ষার্থী জার্মানিতে চীনা দূতাবাসের আমন্ত্রণে দূতাবাসে যান এবং চীনা পরীর কাহিনী শোনেন, চীনা চলচ্চিত্র দেখেন এবং চীনা শিশুদের সঙ্গে সময় কাটায়। চীনা পরীর কাহিনী শোনার পর, শিশুদের মনে প্রশ্ন জেগে ওঠে, "চীনের লোকেরা কেন চপস্টিক্স দিয়ে খায়? চীনা শিশুরা প্রতিদিন কি করে? তারা কি খেলাধুলা পছন্দ করেন? চীনের সবচেয়ে বিখ্যাত প্রাণী কি? চীনে বিটল আছে কি?"
জার্মান শিশুদের সুন্দর প্রশ্নের পিছনে রয়েছে চীন সম্পর্কে তাদের আগ্রহ। চীনের চারটি শিশু প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়েছে এবং পরিবেশ অনেক প্রাণবন্ত ও আনন্দদায়ক ছিল। একটি জার্মান শিশু বলে যে আজকের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সে জানতে পেরেছে যে, চীনের জনসংখ্যা এক বিলিয়নেরও বেশি। চীনের শিশুদের জীবন তাদের থেকে আলাদা নয়। তাদের ক্লাসে তাদের হোমওয়ার্ক করতে হয় এবং চীনে সুন্দর দৈত্য- প্যান্ডাস আছে। দুই শিশু বলে যে তারা ইতিমধ্যে চীনা ভাষা শিখতে শুরু করেছে। যখন তারা বড় হয়ে উঠবে, তখন তাদের চীনে যেতে হবে।
জার্মান ফেয়ারি টেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিশার বলেন, দেশের মধ্যে বোঝা এবং যোগাযোগ প্রচার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শিশুরা। তারা পরীর কাহিনী থেকে শিখবে যে, বিভিন্ন দেশে তাদের স্বপ্ন ও জীবনগুলিতে সাধারণ মিল রয়েছে। এভাবেই তারা পারস্পরিক বোঝার গভীরতা অর্জন করবে। এই ধরনের কাজের মাধ্যমে, বিশেষ করে পরী গল্পগুলির মাধ্যমে একটি নতুন দেশ ও সংস্কৃতি জানার জন্য শিশুদের একটি শুভসূচনা।
২.
ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত শাংহাই সমসাময়িক নান্দনিক শিল্প প্রদর্শনী:
চীনের আর্ট প্রাসাদ, শাংহাই একাডেমি অব ফাইন আর্টস এবং ব্রাসেলস চীন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যৌথভাবে আয়োজিত "এক অঞ্চল, এক পথ" আন্তর্জাতিক বিনিময় ও সহযোগিতা সিরিজ প্রদর্শনীর মধ্যে 'শাংহাই স্কুল সমসাময়িক নান্দনিক এবং যুব শিল্প' শিরোনামে এক আর্ট প্রদর্শনী সম্প্রতি শাংহাই শহরে অনুষ্ঠিত হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ১৫০-এরও বেশি চীনা ও বিদেশি অতিথি।
এবারের প্রদর্শনীতে ২৭ জন তরুণ শিল্পীর মোট ৪৮টি কাজ প্রদর্শন করা হয়। পেইন্টিং, ভাস্কর্য, ইনস্টলেশন, ভিডিও, ডিজিটাল আর্ট এবং ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের মতো বিভিন্ন শিল্প রূপে, ঐতিহ্যগত চীনা সংস্কৃতির উন্নয়ন, শিল্প ও বিজ্ঞান সমন্বয়, এবং মানুষ ও জনসাধারণের পরিবেশের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিফলিত হয়েছে।
৩.
বার্লিন 'চা সংস্কৃতি উৎসব' চীনা সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিয়েছে:
"বার্লিনে আমিও চা খাই। চীন আমার দ্বিতীয় জন্মস্থান। যখন আমি চা খাই, তখন আমার চীনের স্মৃতি চায়ের সঙ্গে ভেসে ওঠে।" এ কথা বলেন অ্যালেক্স লুডভিগ, তিনি অনেক বছর ধরে চীনে অধ্যয়ন করেছেন।
সম্প্রতি জার্মানির বেশ কয়েকজন মানুষ চা সংস্কৃতিতে উত্সাহীদের নিয়ে প্রথম 'বার্লিন চা সংস্কৃতি উত্সব' আয়োজন করে। উত্সবটি একটি গির্জা থেকে শুরু হয়ে স্থানীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। এতে চা প্রদর্শনী, চা আর্ট সেমিনার, চা অনুষ্ঠান ও ধ্যান, পেইন্টিং এবং চা, থাইচি এবং চাসহ বিভিন্ন চা-থিমযুক্ত কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। মোট দুই হাজার মানুষ এতে অংশগ্রহণ করে।
এই চা সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজকদের মধ্যে লুডভিগ একজন। তিনি চা সংস্কৃতি উত্সবের বিভিন্ন প্রকল্প সাংবাদিকদের কাছে চীনা ভাষায় বর্ণনা করেন।
"পেইন্টিং, কবিতা, ধ্যান, সংগীত বা শিক্ষার সঙ্গে চা ভালোভাবেই যায়; বিশেষত চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি অনেক ক্ষেত্রে যা চাতে সাধারণ কিছু আছে।" লুডভিগ বলেন, "আমি চা সংস্কৃতি থেকে শান্তি পাই।"
লুডভিগ সাংবাদিকদের বলেন, বিশেষ করে তিনি ছোটবেলা থেকেই চা পছন্দ করতেন।
অতএব, চা-এর প্রতি তার বাড়তি আগ্রহ আছে। পরে তিনি চীনে এসে লেখাপড়া করে এবং চা সংস্কৃতি অধ্যয়ন করেন।
বর্তমানে বার্লিনে একটি চীনা সংস্কৃতি সংস্থায় কাজ করছেন তিনি।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/তৌহিদ)