বিশ্বের দ্বিতীয় সরকারি আঞ্চলিক মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থা- 'এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থা' প্রতিষ্ঠার ১০ম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে গতকাল (বুধবার) বেইজিংয়ে উচ্চ পর্যায়ের ফোরামের আয়োজন করা হয়। এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য 'মহাশূন্য সহযোগিতার মাধ্যমে মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন'। ফোরামে উন্নয়নশীল দেশ মুক্ত ও সমানভাবে মহাশূন্য প্রযুক্তি ও তথ্য লাভ এবং ব্যবহার করা, যোগ্য ব্যক্তির লালন-পালন করা- ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ-দিন 'এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থার ২০৩০ উন্নয়ন পরিকল্পনা' প্রকাশিত হয়। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা এ বিষয় নিয়ে কিছু আলোচনা করবো।
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থা। এর সদরদপ্তর চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত। এটি ইউরোপীয় মহাশূন্য ব্যুরোর পর দ্বিতীয় সরকারি আঞ্চলিক মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থা। প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে সংস্থাটি তথ্য শেয়ারিং নেটওয়ার্ক, দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্কসহ ৬টি নেটওয়ার্ক গঠন করেছে। তা ছাড়া, মহাশূন্য ক্ষেত্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কর্মীদের ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট আইন, নীতি ও প্রযুক্তি বিনিময়ের প্ল্যটফর্ম গড়ে তুলেছে এবং ৩০টিরও বেশি দেশ এতে অংশগ্রহণ করেছে।
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থার কৌশল পরিকল্পনা ও প্রকল্প ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মানোপ অর্পিমায় বলেন, এই প্রকল্পে অনেক সহযোগিতা করার জন্য চীনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাতে হয়। যেমন, বর্তমান যৌথ বহুমুখী ছোট উপগ্রহ প্রকল্প, চীনের উপগ্রহের তথ্য সব সদস্য দেশে বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের কিছু সদস্যদেশের নিজস্ব উপগ্রহ আছে। যেমন থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, তুরস্ক, পেরু। পাকিস্তান ও থাইল্যান্ড তাদের উপগ্রহের তথ্য অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে বিনিময় করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
গত ১০ বছরে এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাগতিক দেশ হিসেবে চীন 'এক অঞ্চল, এক পথ' মহাশূন্য তথ্য করিডোর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে। আশা করি যৌথভাবে মহাশূন্য দক্ষতা, দ্রুত দুর্যোগ মোকাবিলা দক্ষতা ও যোগাযোগ বিনিময় উন্নত করা হবে। চীন ইতোমধ্যে সংস্থার সঙ্গে উপগ্রহ থেকে তোলা ২২০ হাজার ছবি দিয়েছে, যা সদস্য দেশগুলোর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, পরিবেশ পর্যবেক্ষণ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৃষি উত্পাদন মূল্যায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় এবং তাদের গবেষণা কাজে সুবিধা দেয়।
ফোরামে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলো ২০৩০ উন্নয়ন পরিকল্পনা স্বাক্ষর করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যৌথভাবে পরবর্তী ১০ বছরের সহযোগিতার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি যোগাযোগ, রিমোট-সেন্সিং, আবহাওয়া, যানচালনার নির্দেশনাসহ উপগ্রহ প্রযুক্তি ও তথ্যের ব্যবহারের ভিত্তিতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য প্রযুক্তি সেবা নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
চীনা মহাশূন্য ব্যুরোর মহাপরিচালক চাং খ্য চিয়ান বলেন, চীন আশা করে, সদস্য দেশ ও আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে এই খাতে যোগ্য ব্যক্তিদের লালন-পালন জোরদার করা হবে ও মহাশূন্যের তথ্যের ব্যবহার সম্প্রসারণ করা হবে। সেই সঙ্গে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় মহাশূন্য সহযোগিতা সংস্থা ও এই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অব্যাহতভাবে মেধা ও শক্তি দিয়ে চীন ভূমিকা পালন করবে।
(তুহিনা/তৌহিদ)