চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ১৫ থেকে ২১ নভেম্বর পাপুয়া নিউ গিনি, ব্রুনাই ও ফিলিপিন্সে রাষ্ট্রীয় সফর করবেন এবং পাপুয়া নিউ গিনির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা উপলক্ষ্যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এসময় তিনি পাপুয়া নিউ গিনিতে আয়োজিত এপেকের ২৬তম শীর্ষনেতাদের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এই তিনটি দেশে প্রেসিডেন্ট সি'র প্রথম সফর এবং চার বছর পর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপ দেশের নেতাদের সঙ্গে তার বৈঠক। এ সফর চীন ও পাপুয়া নিউ গিনি, ব্রুনাই, ফিলিপিন্স এবং ওই অঞ্চলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে, টানা ছয় বছরের মতো প্রেসিডেন্ট সি এপেক শীর্ষনেতাদের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে উপস্থিত হবেন ও সভাপতিত্ব করবেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রতি চীনের উচ্চ গুরুত্ব প্রতিফলিত হয়। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ নিয়ে কিছু আলোচনা করবো।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপ দেশগুলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং উন্নয়নশীল দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই অঞ্চলের ফিজি, সামোয়া, ভানুয়াতুসহ ৮টি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে চীন। ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট সি ফিজিতে এই ৮ দেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে পারস্পরিক সম্মান, অভিন্ন উন্নয়ন অর্জনের কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। চার বছর ধরে চীন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপ দেশের সম্পর্ক দ্রুত উন্নত হচ্ছে, উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, বাণিজ্য বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক প্রযুক্তি, অবকাঠামো, সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী চেং চ্য কুয়াং বলেন, এবার প্রেসিডেন্ট সি'র সফর দু'পক্ষের সম্পর্ক আরো উন্নত করবে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন চালিকাশক্তি যোগান দেবে এবং সেই অঞ্চলের শান্তি স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
চেং চ্য কুয়াং জোর দিয়ে বলেন, চীন ও এসব দ্বীপ দেশের সহযোগিতা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা কাঠামোতে চালানো হবে। কল্যাণমূলক সহযোগিতা, কোম্পানির বিনিয়োগ ও সরকারি সহযোগিতার আচরণে প্রমাণিত হয় যে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর পারস্পরিক সমর্থন প্রয়োজন। চীন এসব দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বা সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে কোনো দেশের স্বার্থের কোনো ক্ষতি করতে চায় না, বরং একসঙ্গে অভিন্ন স্বার্থ সম্প্রসারণ করতে চায়। চীন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ইচ্ছাকে সম্মান করার শর্তে অন্যান্য দ্বীপ দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করা, তাদের চাহিদা ও অসুবিধা দূর করার জন্য টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রত্যাশা জানায়।
পাপুয়া নিউ গিনি এই প্রথমবার এপেকের শীর্ষনেতাদের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলন আয়োজন করেছে। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হলো- 'সহনশীল উন্নয়নের সুযোগ ধরে, ডিজিটাল ভবিষ্যতকে স্বাগত জানানো'। বিভিন্ন পক্ষ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একত্রীকরণ, ডিজিটাল অর্থনীতি, পারস্পরিক যোগাযোগ, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করবে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়ক চাং চুন বলনে, সম্মেলনকালে প্রেসিডেন্ট সি এপেকের বিভিন্ন সংলাপ বৈঠক ও সম্মেলনে ভাষণ দেবেন, বর্তমান বিশ্ব ও এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন পরিস্থিতিতে চীনের অভিমত ও ধারণা ব্যাখ্যা করবেন।
চাং চুন বলেন, আমরা আশা করি এবারের সম্মেলনে উন্মুক্ত অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঠিক উন্নয়নের পথ বজায় থাকবে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা ও সহযোগী অংশীদারি সম্পর্ক জোরদার করবে। সেই সঙ্গে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অভিন্ন লক্ষের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করবে এবং ২০২০ সাল পরবর্তী সহযোগিতা পরিকল্পনা প্রণয়ন করে এপেকের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে।
(তুহিনা/তৌহিদ)