সিপিসি'র অষ্টাদশ জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন আয়োজনের পর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বহুবার চীনের সার্বিক সংস্কার ও উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় নব্যতাপ্রবর্তনের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, নব্যতাপ্রবর্তন হল একটি জাতির উন্নয়নের আত্মা; একটি দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের চালিকাশক্তি; এবং চীনা জাতির সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। তীব্র প্রতিযোগিতার এই বিশ্বে নব্যতাপ্রবর্তনই কেবল একটি জাতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে, শক্তিশালী করতে পারে।
২০১৮ সাল হচ্ছে চীনের সংস্কার ও উন্মক্তকরণ নীতি কার্যকর হওয়ার ৪০তম বার্ষিকী। গত মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট সি পুনরায় প্রেসিডেন্টপদে নিযুক্ত হন। সে-মাসে চীনের ত্রয়োদশ জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রথম প্রতিনিধি সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি বলেন,
"চীনা জনগণ সৃজনশীল। কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসে, চীনা জনগণ বরাবরই ছিল পরিশ্রমী, আবিষ্কারক ও সৃজনশীল। চীনে লাওজি, কনফুসিয়াস, ঝুয়াংজি, মেনসিয়াস, মোজি, সুজি ও হানফিজিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিখ্যাত মহান চিন্তাবিদ ছিলেন। চীন কাগজ নির্মাণ-কৌশল, বন্দুকের বারুদ, মুদ্রণ-কৌশল ও কম্পাসসহ বিভিন্ন আবিষ্কারের মাধ্যমে মানবসভ্যতার অগ্রগতিতে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ভূমিকা রেখেছে। চীনা মানুষের আছে চু রাজবংশের গান, হান রাজবংশের কবি, থাং রাজবংশের কবিতা, সং রাজবংশের কবি, ইউয়ান রাজবংশের সংগীত এবং মিং ও ছিং রাজবংশের উপন্যাসসহ বিভিন্ন মহান সাহিত্যকর্ম। চীনা মানুষ মহাপ্রাচীর, তুচিয়াংইয়ান বাঁধ, মহাখাল, নিষিদ্ধ নগর ও পোতালা প্রাসাদ নির্মাণ করেছে। বর্তমানেও চীনা জনগণ নব্যতাপ্রবর্তনের ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যাচ্ছে। চীনা জনগণের এই গুণ চীনের দ্রুত উন্নয়নকে সম্ভব করেছে এবং বিশ্বের দরবারে চীনকে সম্মানের স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে। আমি বিশ্বাস করি, ১৩০ কোটিরও বেশি চীনা মানুষ নব্যতাপ্রর্বনের এই ধারা অব্যাহত রাখলে, আমরা আরও অলৌকিক ঘটনার জন্ম দিতে পারব।"
সি চিন পিংয়ের দৃষ্টিতে বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিযোগিতা আসলে নবায়ন ও উদ্ভাবনের প্রতিযোগিতা। তিনি বলেন, এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে, চীনাদেরকে উদ্ভাবন-চালিত উন্নয়ন-কৌশল উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে নব্যতাপ্রবর্তন, শিল্পে নব্যতাপ্রবর্তন, প্রতিষ্ঠানে নব্যতাপ্রবর্তন, বাজারে নব্যতাপ্রবর্তন, পণ্যে নব্যতাপ্রবর্তন, শিল্প-কাঠামোয় নব্যতাপ্রবর্তন ও পরিচালনা-ব্যবস্থায় নব্যতাপ্রবর্তন ত্বরান্বিত করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে চীনা বৈশিষ্ট্যময় উদ্ভাবনের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। বস্তুত, চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি কার্যকর হওয়ার পর বিগত ৪০ বছর ধরেই চীনা জনগণ চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ক্রমশ জোরদার করে গেছে এবং অব্যাহতভাবে উন্নয়নের পথে সকল বাধা অতিক্রম করেছে। আর এই সংগ্রামে চীনা জনগণের মূল শক্তি ছিল নব্যতাপ্রবর্তন ও সৃজনশীলতার গুণ।