পাকিস্তানি পণ্য চীনে রপ্তানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে: পাকিস্তানে চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সিলার
  2018-10-30 14:28:48  cri
চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা আগামী ৫ থেকে ১০ নভেম্বর শাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে। পাকিস্তান প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে এ মেলায় অংশ নেবে। পাকিস্তানে চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সিলার ওয়াং জি হুয়া সম্প্রতি সিআরআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, এবারের মেলার ওপর পাকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের গুরুত্ব রয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে একটি সরকারি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন এবং এতে ভাষণ দেবেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ওয়াং আশা করেন, পাকিস্তানের শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীন আন্তর্জাতিক আমদানি মেলার এ প্ল্যাটফর্ম ভালভাবে কাজে লাগিয়ে পাক দ্রব্য ও সেবা প্রচার করবে, এতে আরো বেশি চীনা নাগরিক পাকিস্তানের পণ্য দ্রব্য সম্পর্কে জানতে পারবে। ফলে চীনা বাজারে প্রবেশ করতে পারবে পাক পণ্য দ্রব্য। পাশাপাশি এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুষ্ঠুভাবে উন্নয়নের জন্য আরো শক্তি যোগাবে।

কাউন্সিলার ওয়াং জি হুয়া বলেন, পাকিস্তান চীনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কস্থাপন অফিস এবং পাক আয়োজক সংস্থা, পাক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য উন্নয়ন কর্মসূচির অভিন্ন চেষ্টায় পাকিস্তান পক্ষ এবারের মেলার সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতি কাজ প্রায় শেষ করেছে। এবারের মেলায় পাকিস্তানের কয়েকডজন শিল্পপ্রতিষ্ঠান অংশ নেবে, তাছাড়া ৬০টিও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান চীন-পাক এন্টারপ্রাইজ সরবরাহ এবং চাহিদা ডকিং কার্যক্রমে অংশ নেবে। প্রধান অতিথি দেশ হিসেবে, 'উদীয়মান পাকিস্তান' প্রতিপাদ্য হিসেবে এক বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করবে এবং 'পাকিস্তান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ' নামক বাণিজ্যিক ফোরাম আয়োজন করবে।

এবার পাকিস্তানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রদর্শিত দ্রব্যে রয়েছে টেক্সটাইল, খাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ক্রীড়া পণ্য, চাল ইত্যাদি প্রধান রপ্তানি পণ্য। কাউন্সিলার ওয়াং জি হুয়া বলেন, পাকিস্তান হলো বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তুলা উৎপাদনকারী দেশ, তৃতীয় বৃহত্তম তুলা সুতা উত্পাদনকারী দেশ এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম কাপড় উত্পাদনকারী দেশ। তাছাড়া পাকিস্তানের টেক্সটাইল শিল্প চেইন অপেক্ষাকৃত সম্পূর্ণ। বিশ্বের নির্দিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্ষমতা আছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বৈশিষ্ট্য আছে। এশিয়াতে পাকিস্তানের বৃহত্তম অস্ত্রোপচার যন্ত্র উত্পাদন শিল্প রয়েছে। পাকিস্তান চিকিৎসা ডিভাইসের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম উত্পাদন ঘাঁটির একটি।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০১৫ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পাকিস্তানে রাষ্ট্রীয় সফর করার পর, দু'দেশের সার্বক্ষণিক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক আরো উন্নীত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা নতুন উন্নয়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। বর্তমানে চীন একটানা ৪ বছর ধরে পাকিস্তানের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদারে পরিণত হয়েছে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের অনেক প্রধান পণ্য আছে, কিন্তু পরিবহন, পণ্য প্যাকেজিং, বাজার সম্প্রসারণ, কোয়ান্টাইন পরীক্ষাসহ বিভিন্ন ব্যাপারে কিছু সমস্যা রয়েছে বলে চীনে পাকিস্তানের রপ্তানি পণ্য বেশি নয়। এ নিয়ে কাউন্সিলার ওয়াং জি হুয়া বলেন, বর্তমানে চীন ইতিবাচক ব্যবস্থা নিচ্ছে। চীনে পাকিস্তানের রপ্তানি বাড়ানো হবে, উভয় পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য সুষম উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হবে। যেমন চীনের বাজারে পাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশে পাকিস্তানকে সহায়তা দেয়া হবে, যৌথভাবে পণ্য গবেষণা ও উন্নয়ন এবং বাজার চালু করা হবে। চীন-পাক শুল্ক এবং দেশের পণ্যের গুণগত মান তদারকি ও পর্যবেক্ষণ ব্যুরোর যোগাযোগ জোরদার করা হবে। তাছাড়া চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পাকিস্তানে বিনিয়োগে উত্সাহ দেয়া হবে। পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের জন্য ভিসা সুবিধাজনক ব্যবস্থাও দিবে চীন।

চলতি ৮ থেকে ১১ অক্টোবর চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি বাণিজ্য প্রচার গ্রুপ পাকিস্তানে পাঠিয়ে ঔষধ, পেট্রোকেমিক্যাল, বাণিজ্য এবং কৃষি পণ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান পাকিস্তানের শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তির পরিমাণ ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া, চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য এলাকার দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা নিয়ে দশ দফা বৈঠকও আয়োজিত হয়েছে। (জিনিয়া/টুটুল/লিলি)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040