চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা বৈশ্বিক ভারসাম্য বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল: পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
  2018-10-29 14:32:24  cri

চীনের প্রথম আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা ৫ নভেম্বর শাংহাইয়ে শুরু হবে। বর্তমানে পাকিস্তানের ১১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান এ মেলায় অংশ নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা মনে করেন, এবারের মেলা চীন তথা বিশ্বের সঙ্গে পাক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার সুযোগ খুঁজে বের করা এবং চীনে পাকিস্তানের রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হবে। তা ছাড়া, এই মেলা বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভারসাম্য বাস্তবায়নের জন্য অনুকূল হবে বলে তারা মনে করেন। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় এ নিয়ে শুনবেন একটি প্রতিবেদন।

চলতি বছর কাপড়, চাল, ফল ও ভেষজ ওষুধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত পাকিস্তানের ১১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান শাংহাইয়ে অনুষ্ঠেয় চীনের প্রথম আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় অংশ নেবে। পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মাদ ইউনুস দাঘা বলেন, পাক প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৭৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মেলায় অংশ নেবে। ১১টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নেওয়া ছাড়াও, আরো অনেক শিল্পপতি ব্যবসা নিয়ে সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী। দাঘা বলেন,

'এবার আমরা নতুন ক্ষেত্র উন্নয়ন করতে চাই। ওষুধ তৈরি, পেট্রোকেমিক্যাল ও ইস্পাত উত্পাদনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা চীনের পুঁজি বিনিয়োগ পেতে চাই। বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের প্রেক্ষাপটে চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সহযোগিতা চালানোর মাধ্যমে আমাদের জন্য আরো বিশাল সফলতা ও সুযোগ বয়ে আনা সম্ভব হবে।'

দাঘা বলেন, পাকিস্তানের টেক্সটাইল ও কৃষি পণ্যসহ বিভিন্ন দ্রব্যের গুণগত মান বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। বর্তমানে চীনের প্রতি পাকিস্তানের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি আছে। তাই চীনে পাকিস্তানের রপ্তানি বাড়াতে আরো বেশি সুবিধাজনক নীতি প্রণয়ন করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন,

'বর্তমানে আমরা চীন থেকে ১৭০০কোটি মার্কিন ডলারের দ্রব্য আমদানি করেছি। তবে চীনে আমাদের রপ্তানি ২০০ কোটিরও কম। চীনে আমাদের আরো বেশি দ্রব্য রপ্তানি করতে চাইলে দেশটির সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে হবে।'

পাকিস্তানের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে চীন ও পাকিস্তানের বাণিজ্য ঘাটতি শুধুমাত্র চীনের প্রতি পাকিস্তানের রপ্তানির প্রযুক্তিগত সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই নয়, বরং পাকিস্তানের শিল্পের কাঠামো ও উন্নয়নের পর্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। বর্তমানে চীন সরকার দু'দেশের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার যথাসাথ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। চলতি বছরের ৮ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানে বাণিজ্য বেগবান করতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিদল পাঠায়। চীনের দশটিরও বেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠান পাকিস্তানের সঙ্গে সি-ফুড ও চামড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তির পরিমাণ ১৫ কোটিরও বেশি মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া, দু'দেশ অবাধ বাণিজ্য চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা নিয়ে ১০ দফা আলাপ-আলোচনা করেছে এবং পণ্যের কর কমানো এবং শুল্কের পরিসংখ্যান বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক মতৈক্যে পৌঁছেছে।

দাঘা মনে করেন, এবারের চীনের আন্তর্জাতিক আমদানি মেলা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক ভারসাম্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে এবং এতে চীনা নেতৃবৃন্দের দূরদর্শিতা প্রমাণিত হয়। তিনি বলেন,

'চীনের আমদানি মেলায় সহযোগিতার অংশীদারের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার ইচ্ছা প্রকাশিত হয়। পাকিস্তানের জন্য এটি হলো চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক বিনিময় বাড়ানো বিশেষ করে রপ্তানি বাড়ানোর বিশাল সুযোগ। এমন প্রস্তাব ও উদ্যোগ অবশ্যই বিশ্বের বাণিজ্যের সহায়ক হবে এবং সকল দেশ এতে উপকৃত হবে।'

দাঘা আরো বলেন, চীনের এবারের আমদানি মেলা পাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ এক আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম যুগিয়েছে, এটাই হলো ব্যাপক পাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দৃষ্টি আকর্ষণের একটি প্রধান কারণ। এই মেলা বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে পাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চালানোর সুযোগ প্রদান করেছে বলে তিনি মনে করেন।

(লিলি/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040