কফি হাউসের আড্ডাঃ অনলাইনে হয়রানী আমাদের জীবন থেকে কতদূর?
  2018-10-19 15:48:08  cri


জীবন চলার পথে 'কত স্বপ্নের রোদ ওঠে, আর কত স্বপ্ন মেঘে ঢেকে যায়! কতজন এলো-গেলো কতজনই আসবে- কফিহাউসটা শুধু থেকে যায়।' প্রিয় বন্ধুরা, কফিহাউসও থাকবে আর এই ২০ মিনিট আমি আছি আপনাদের সঙ্গে। শেয়ার করবো জীবনের অনেক কথা।

সুপ্রিয় শ্রোতা আমি ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা। সাপ্তাহিক 'কফিহাউসের আড্ডা' অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। এ সপ্তাহে আড্ডার বিষয় হচ্ছে: অনলাইন হয়রানী আমাদের জীবন থেকে কতদূর। আজকের আড্ডায় আমার সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন সহকর্মী জনাব আলিমুল হক এবং জানাব মোহাম্মদ তৌহিদ।

১. বর্তমান চীন এবং বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের অবস্থা

আপনারা জানেন, চীনের স্থানীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেকেই ব্যবহার করছে। এখন চীনে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে, টেনসেন্ট কিউ কিউ, গত বছরের তার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০ কোটি ছাড়িয়েছে। তাছাড়া সিনা ওয়েইবো-অর্থাত সিনা কোম্পানির মাইক্রো-ব্লগের ব্যবহারকারী ১৪ কোটি ছাড়িয়েছে। আর টেনসেন্ট কম্পানির ওয়েচেট, তা ২০১১ সাল চালু হওয়ার পর এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে তালিকায়ভূক্ত ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬০ কোটি ছাড়িয়েছে, চীনে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে প্রায় ৯৩ শতাংশ ওয়েচেট ব্যবহার করে। তাছাড়া টেনসেন্ট কোম্পানির কিউ-জন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ৬৩ কোটি ছাড়িয়েছে। এ সংখ্যা থেকে বোঝা যায়, কত জন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত এবং সে মাধ্যমগুলো মানুষের জীবনে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে।

এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রতিদিন জীবনে নিত্য জিনিস পরিণত হয়েছে। অনেকে সকাল উঠে প্রথম কাজ হলো মোবাইলে ওয়েচেট খুলে কোমেন্টস দেখা।

২. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো মানুষের জীবনে কতটুকু ইতিবাচক ভূমিকা রাখে, কতটুকু নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে?

ক্যান্টার কম্পানি ২০১৪ সালে চালিত একটি জরীপ থেকে দেখা গেছে, ৭৬.৮ শতাংশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মনে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রভাব ইতিবাচক, আর শুধু ৬.৭শতাংশ মনে করে নেতিবাচক। ইতিবাচক দিকগুলো হল, বাস্তবতার চাপ থেকে মুক্তি দেওয়া এবং জীবনকে আরো সুবিধাজনক তুলে দেওয়া। নেতিবাচক দিকগুলো হল বই পড়ার সময় কমে যাওয়া এবং ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপত্তা অনিশ্চিত হওয়া। আরেক দিক হল আসল জীবনে মানব যোগাযোগের মান কমিয়ে দেয়া।

সুবিধাজনক দিক: তথ্য পাওয়া, দূরে থাকা পরিচিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা....

৩. অনলাইন হয়রানী মানে কি? কারা এখান থেকে বেশি প্রভাবিত হয়?

১৯৯৮ সালে অবশ্য আজকের মতো কোন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না ইন্টারনেটে, কিন্তু ক্লিনটন-মনিকা কেলেঙ্কারির খবর ইন্টারনেটেই প্রথম ছড়িয়েছিল এবং রাতারাতি দুনিয়া জুড়ে তা ছড়িয়ে পড়ে। আজকাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এত উন্নত হয়েছে যে, এখন যেন কেউই তাকে এড়াতে থাকতে পারে না।কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সাইবার বুলিয়িং বা অনলাইন হয়রানীর ঘটনাও বেড়ে যাচ্ছে। এবং এতে বিশেষ আঘাত পেয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহারকারীর প্রধান গ্রুপ, অর্থাত্ যুবকযুবতীর ওপরে।

আজকেও অনলাইনে একটি খবর দেখলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রী হীনমন্যতায় ভুগে আত্মহত্যা করেছে। তার ব্যক্তিগত এবং তার পরিবারের সদস্যরা গোপনীয়তা রক্ষার জন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে এ খবর গোপন করে। কিন্তু সেদিন রাতে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্রছাত্রী এ মেয়েটির তথ্য সব জেনে ফেলেছে, কারণ তারা সবাই 'ইয়েক ইয়াক' নামক একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। মেয়েটির আত্মহত্যার এ খবর কেউ একজন সেখানে পোস্ট দিলে সবাই জেনে ফেলে।

এটা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর আরেক দিক। তাছাড়া, বর্ণ বৈষম্য কথাবার্তা, কথা দিয়ে যৌথ হয়রানী, ক্ষতিগ্রস্ত তথ্য ছাড়ানো এসব আইনলাইন হয়রানীর ভিন্ন দিক।

বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটেছিল?

৪. কিভাবে অনলাই হয়রানী কমিয়ে দেয়া যায়?

সরকার বা কর্তৃপক্ষ: অনলাইন তত্ত্বাবধান জোরদার করা, সংশ্লিষ্ট আইনকানুন সম্পূর্ণকরণ করা।

ব্যক্তিগত: ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো, স্কুল ছেলেমেয়েদের এমন ঘটনা ঘটলে তাদের পরিবারের সদস্য বা শিক্ষককে শীগগির জানানো। সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো প্রমাণ হিসেবে রাখা। নিজের বা বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সদস্যদের তথ্য অনলাইনে না দেয়া। অনলাইনে তথ্য ছড়ানোর সময় বিবেচনা করে ছড়ানো।

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040