এদিন বিকেল ৪টায় বেইজিংয়ের গণমহাভবনের পূর্ব গেটের চত্বরে নরওয়ের রাজার জন্য সম্বর্ধনানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এর পর দু'জন আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেন। চীন-নরওয়ে সম্পর্কের উন্নয়নে দীর্ঘকাল ধরে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় রাজা পঞ্চম হেরাল্ডসহ রাজপরিবারের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট সি। দু'দেশের মৈত্রীকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় রাজার প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট সি আরও বলেন,
"চীন-নরওয়ে সম্পর্ক ২০০৬ সালে স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে তা ক্রমশ উন্নত হয়েছে। দু'পক্ষের উচ্চ পর্যায়ের আদান-প্রদান ঘনিষ্ঠতর এবং পারস্পরিক আস্থা ক্রমশ জোরদার হয়েছে। চীন-নরওয়ে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি আলোচনায়ও অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। দু'দেশের মধ্যে সামুদ্রিক পরিবেশ রক্ষা, উত্তর মেরু, সংস্কৃতি ও পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে এগিয়ে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবিক যোগাযোগ আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, রাজার এবারের সফর নতুন সময়পর্বে দু'দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তি যোগাবে। আর এই চালিকাশক্তি দু'দেশের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রীর ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে।"
প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, দু'পক্ষকে অব্যাহতভাবে পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা জোরদার করতে হবে; পারস্পরিক সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাস্তব সহযোগিতা গভীরতর ও জোরদার করতে হবে। নরওয়ের সঙ্গে 'এক অঞ্চল, এক পথ' কাঠামোতে সহযোগিতা চালাতে ইচ্ছুক চীন। আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার পাশাপাশি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক কাঠামোতে যোগাযোগ ও সমন্বয় জোরদার করতে হবে দু'পক্ষকে। অর্থনীতির বিশ্বায়ন, বহুপক্ষবাদ, টেকসই উন্নয়ন এবং বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে এগিয়ে নিতে দু'পক্ষের হাতে হাত রেখে যৌথ প্রচেষ্টা চালানো দরকার। উত্তর মেরু কাউন্সিল কাঠামোতে নরওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা চালাতে চীন ইচ্ছুক। চীন ও ইউরোপের সম্পর্কের সুষ্ঠু ও স্থিতীশীল উন্নয়নে এবং চীন-উত্তর ইউরোপের সহযোগিতায় নরওয়ে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করবে বলে চীন আশা করে।
প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, শীতকালীন অলিম্পিক গেমসসংক্রান্ত প্রস্তুতিমূলক কাজে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে নরওয়েকে স্বাগত জানায় চীন।
রাজা পঞ্চম হেরাল্ড বলেন, চীনে রাষ্ট্রীয় সফরে আসতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথমবার চীন সফর করেন। এর পর তিনি বহুবার চীন সফর করেছেন। চীনের দ্রুত উন্নয়ন ও বিশাল পরিবর্তন তাঁর চোখের সামনেই ঘটেছে। এবারের সফর থেকে এটা স্পষ্ট যে, চীন ও নরওয়ের সম্পর্ক পুনরায় স্বাভাবিক পথে চলে এসেছে এবং এতে প্রবল প্রাণশক্তি সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন,
"চীনের আতিথেয়তায় আমি ও আমার স্ত্রী মুগ্ধ। চীন ও চীনের জনগণকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এবারের সফর দু'পক্ষের সহযোগিতা ও বিনিময়কে জোরদার করবে বলে আমি আশা করি।"
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিক গেমস তাঁর মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। চীনের সঙ্গে শীতকালীন অলিম্পিক গেমস সম্পর্কে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেও আগ্রহী নরওয়ে। ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিক গেমস সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে চীনকে সবধরনের সহায়তা দেবে তাঁর দেশ।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)