শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরে সদস্য-দেশগুলো পারস্পরিক আস্থা ও কল্যাণ, সমতা, আলোচনা, বৈচিত্র্যপূর্ণ সভ্যতাকে সম্মান এবং যৌথভাবে উন্নয়নের 'শাংহাই চেতনা'-এ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা জোরদার করে আসছে, যাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এবং বিভিন্ন সদস্য-দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা যায়। তাজিকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূত ইউয়ে বিন বলেন, শাংহাই সহযোগিতার সদস্য বাড়ানোর পর সংস্থাটির আকার আরো বড় হয়েছে, জনসংখ্যা আরো বেড়ে গেছে, অর্থনৈতিক পরিমাণ আরো বেশি হয়েছে। সংস্থাটি একটি নতুন উন্নয়নের পর্যায়ে উঠে গেছে। তথাপি সামাজিক ব্যবস্থা, দেশের আকার, উন্নয়নের মানদণ্ড বা জাতি, ধর্ম ও সংস্কৃতি আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়েছে। সংস্থাটির সুবিধা বাড়ানো হল আমাদের নতুন দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, এবারের সম্মেলনে বিভিন্ন পক্ষ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা নিয়ে একই কন্ঠ প্রচার করবে, যাতে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রভাবিত শক্তি জোরদার করা যায়। ইউয়ে বিন বলেন, সংস্থাটি একপক্ষবাদ ও সংরক্ষণবাদের বিরোধিতা করে। বিভিন্ন সদস্য-দেশ আরো উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতির কাঠামো এবং আরো ঘনিষ্ঠ মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গড়ে তুলতে চায়।
শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা চীনের অবদান ছাড়া সাফল্য অর্জন করতে পারে না। এ সম্পর্কে তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কৌশল গবেষণা-কেন্দ্রের প্রথম উপ-পরিচালক সাফারোভ সাংবাদিককে বলেন, আঞ্চলিক বড় দেশ ও শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার একটি প্রতিষ্ঠাতা দেশ হিসেবে ১৭ বছরে চীন সংস্থাটির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য অনেক অবদান রেখেছে। চীন এখন সংস্থাটির নেতৃত্ব স্থানে রয়েছে। সংস্থাটির অধিকাংশ প্রস্তাব চীন করেছে। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ ও ইউরেশিয়া সংস্থার কর্মসূচি সংযুক্ত করার প্রস্তাবও চীন করেছে। বর্তমানে চীন ব্যাপক অর্থ দিয়ে সংস্থাটির সদস্য-দেশগুলোর অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা, সামরিক ও প্রযুক্তির সহযোগিতা জোরদার করছে।
বিস্তারিত ও কার্যকর সহযোগিতা পরিকল্পনার মাধ্যমে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের একত্রিত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা হয়। এটি অধিকাংশ সদস্য-দেশের স্বার্থের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। সেজন্য এ বিষয় হবে এবারের সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। এটিও হল অধিকাংশ সদস্য-দেশের অভিন্ন প্রত্যাশা। 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ হল উন্মুক্ত, ন্যায্য, স্বাধীন ও পারস্পরিক কল্যাণের উন্নয়নের পরিকল্পনা। এটি মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ও সমাজ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ত্বরান্বিতের ভূমিকা পালন করবে। ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে আরো বেশি বাস্তব দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা হবে।
তাজিকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সেদেশে শাংহাই সহযোগিতার সদস্য-দেশগুলোর প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের সপ্তদশ সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং দেশটিতে সফরের উদ্দেশ্যে গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুশানবেতে পৌঁছান চীনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং।
শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার কাঠামোয় তাজিকিস্তান ও চীনের সহযোগিতা ফলপ্রসূ। দু'দেশের সহযোগিতায় অবকাঠামো, শিল্প, কৃষি, শিক্ষা ও পর্যটন অন্তর্ভুক্ত। দু'দেশের সহযোগিতা হল সংস্থাটির কাঠামোয় সহযোগিতার আদর্শ। প্রধানমন্ত্রী লি'র এবারের সফর দু'দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতায় নতুন চালিকাশক্তি বয়ে আনবে। (ছাই/টুটুল)