জাতীয় দিবসের সাত দিনের ছুটিতে অনেক চীনা পর্যটক বিখ্যাত স্মৃতিস্তম্ভ ও যাদুঘর গিয়েছেন। বর্তমানে চীনা মানুষ সংস্কৃতির ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। জাতীয় দিবসের ছুটিতে হুপেই প্রদেশ ভ্রমণ করেছেন মাদাম ফেং। তিনি হুপেই যাদুঘর, চিনচৌ যাদুঘর ও চীনের বিখ্যাত প্রাচীন ভবন হুয়াংহ্যালৌ পরিদর্শন করেছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
আমি সাত দিনের ছুটিতে হুপেই প্রদেশের উহান ও চিনচ্য শহর ঘুরে বেড়িয়েছি। আমার খুবই ভালো লেগেছে। উহান শহরে অবস্থিত হুপেই যাদুঘরে প্রাচীন চীনা শ্রেষ্ঠ বাদ্যযন্ত্র বিয়ানজং সংরক্ষণ করা হয়েছে! আমি বিয়ানজংয়ের বাজানো সংগীত শুনেছি। হুয়াংহ্যালৌ খুবই সুন্দর। ভবনটির উপর থেকে ইয়াংয্যি নদী দেখা যায়। আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ইতিহাস ও সংস্কৃতির পাশাপাশি কোনো কোনো প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ চীনা মানুষের নান্দনিক রুচির প্রকাশ ঘটিয়েছে। ইনার মঙ্গোলিয়ার চিনছিউ পোলার বন প্রচুর পর্যটক আকর্ষণ করেছে। কোনো কোনো পর্যটক তিব্বতে অবস্থিত নামচা বারওয়া পিক ভ্রমণ করেছেন। আরো অনেক পর্যটক মোওথুও ও আলিতে ভ্রমণ করেছেন।
পর্যটনের মান উন্নয়নের কারণ হলো, চীনা মানুষের ভোগ চরিত্রের পরিবর্তন। সম্প্রতি প্রকাশিত 'জাতীয় দিবসে পর্যটন ভোগ বৃদ্ধির প্রতিবেদনে' বলা হয়, চীনা পর্যটকরা ব্যক্তিগত, গ্রুপ ও কাস্টমাইজ ট্যুরে বেশি আগ্রহী।
জাতীয় দিবসের ছুটিতে বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে চীনা মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্যের তালিকায় শীর্ষ দশটি দেশ হলো- ফ্রান্স, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও চেক প্রজাতন্ত্র।
ভ্রমণের সময় চীনা পর্যটকের কাছে আলিপে বেশ জনপ্রিয়। বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশে চীনা মোবাইল পেমেন্ট পদ্ধতি আলিপে ব্যবহার করা যায়। সম্প্রতি আলিপের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চীনের জাতীয় দিবসের সময় ব্রিটেনের বিসেস্টার শপিং ভিলেজে আলিপের মাধ্যমে খরচের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯০ গুণ বেড়েছে! জাপানের ওসাকায় দোতোন্বোরি শপিং এলাকায় আলিপের মাধ্যমে কেনাকাটা ৭০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিমানবন্দরে ৫৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আলিপের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি জা সিয়াও ছেং বলেন, চীনা পর্যটকদের বিদেশে মোবাইল পেমেন্টের ক্ষেত্রে এলাকা, ভোক্তা গ্রুপ ও টাইপের নতুন বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশে মোবাইল পেমেন্ট ব্যবহারকারী চীনা ভোক্তাদের বয়স পরিবর্তন হয়েছে। আগে ২০ থেকে ৪০ বছরের তরুণ-তরুণী বেশি ব্যবহার করত। কিন্তু এ বছর আরো বেশি বয়সী ভোক্তারা তা ব্যবহার করছেন। বিশেষ করে, ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী ভোক্তার সংখ্যা ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় পর্যায়ের শহুরে মোবাইল পেমেন্ট ব্যবহারকারী ভোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। এ বছরের ছুটিতে ফুচিয়ান প্রদেশের রাজধানী ফুচৌর বিদেশে মাথাপিছু ভোক্তার পরিমাণ সারা চীনের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে। এটি প্রথমবারের মতো বেইজিং, শাংহাই ও কুয়াংচৌর চেয়েও বেশি হয়েছে।
চীনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের পর্যটকের ভোক্তার সামর্থ্যও উন্নীত হচ্ছে। এ ছাড়া, চীনা ভোক্তার রুচি ও ধারণা পরিবর্তন হচ্ছে। চীনা পর্যটকরা আরো উচ্চ মানের পর্যটনের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন।
(ছাই/তৌহিদ)