মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের জবাব দিলেন চীনের তাইওয়ানের গণমাধ্যম-উপস্থাপক
  2018-10-07 20:05:10  cri
অক্টোবর ৭: চীনের তাইওয়ানের গণমাধ্যম-উপস্থাপক হুয়াং চি সিয়ান তাইওয়ানের 'চায়না টাইমস' পত্রিকায় চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক অভিযোগ কড়া জবাব দিয়েছেন।

"মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বক্তব্যের প্রতিবাদ' শীর্ষক সম্পাদকীয়তে তিনি লেখেন:

"সম্মানিত ভাইস-প্রেসিডেন্ট, আপনি দেশের মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রাক্কালে চীনের বিরুদ্ধে অবাস্তব অভিযোগ তুলেছেন, যা খুব দুঃখজনক।

আপনি বাস্তব ও সম্পূর্ণ ইতিহাস সম্পর্কে হয়ত জানেন না বা জানলেও ইচ্ছা করে তা এড়িয়ে গেছেন। চীন কখনও যুক্তরাষ্ট্রকে ঋণগ্রস্ত করেনি এবং সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে আসছে। ইতিহাস থেকে বোঝা যায়, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা সবসময় মানবজাতির শান্তির জন্য অনুকূল। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য তা আরও বেশি কল্যাণকর।

আপনি ১৯০০ সালে চীনের ক্ষতিপূরণের কথা উল্লেখ করেছেন। সেসময় আটটি দেশের জোটবাহিনী চীনের নিষিদ্ধ নগরে অনুপ্রবেশ করে এবং লুটপাট চালায়। শুধু তাই নয়, উল্টো এই আট দেশ চীনের কাছ থেকে ৪০ কোটি ৫০ লাখ মুদ্রা 'ক্ষতিপূরণ' আদায় করে। এই অনুপ্রবেশে যুক্তরাষ্ট্র সেনা পাঠায়নি। অথচ ক্ষতিপূরণের ৭.৩২ শতাংশ অর্থ তারা আদায় করে। যুক্তরাষ্ট্রের ওই আচরণ দুর্বল চীনকে আরও দুর্বল করে দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড বাড়ানোর কাজ শেষ হয়েছে, সেজন্য দেশটি চায় বিশ্বে আর্থ-বাণিজ্যিক স্বার্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব অর্জন করতে।

দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় জাপানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে চীনকে সাহায্য করেনি যুক্তরাষ্ট্র। পার্ল হারবারে গোপন হামলা চালানোর আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র জাপানকে সাজ-সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করা অব্যাহত রাখে। পার্ল হারবার ঘটনার পর জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য পায়নি। চীন প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়লেও, যুক্তরাষ্ট্র কোনো কথা বলেনি।

আজকের চীন তার স্থিতিশীল উন্নয়ন আগ্রাসন ও উপনিবেশবাদের মধ্য দিয়ে অর্জন করেনি। চীনা মানুষের মেধা, পরিশ্রম ও উত্সর্গের মধ্য দিয়ে তা অর্জিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও চীনাদের এ পরিশ্রম থেকে লাভবান হয়েছে। চীনারা ৩০ শতাংশ আইফোন কিনেছে। প্রতিটি আইফোনের গড় মূল্য ৩০০ মার্কিন ডলার। অথচ চীন এ থেকে মাত্র ১০ ডলার করে শ্রমের মূল্য হিসেবে পেয়ে থাকে। বাকি ২০০ ডলারেরও বেশি যুক্তরাষ্ট্রেই ফেরতা যায়।

আমরা জানি যে, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকে দখল করতে চায়। সেজন্য চীনের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিয়ে তার আশঙ্কা রয়েছে। চীনকে দমনের জন্য দেশটির বিরুদ্ধে চারদিক থেকে অবরোধ চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ আচরণ অবিবেচনাপ্রসূত। যুক্তরাষ্ট্রের হেজিমনিজাম অগ্রহণযোগ্য। অন্যদিকে, চীন নিজকে গড়ে তুলতে এবং অন্যান্য দেশের মানুষের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করতে যা করছে, তা মানবজাতির জন্য অনুকূল। (রুবি/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040