বাসস্থানের পরিবেশ উন্নয়নে চীনের অভিজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য: ইউএন-হ্যাবিচ্যাট–এর কার্যনির্বাহী পরিচালক
  2018-10-02 17:43:25  cri
অক্টোবর ২: পয়লা অক্টোবর হচ্ছে বিশ্ব বাসস্থান দিবস। এদিন কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ইউএন-হ্যাবিচ্যাট এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই পুরস্কারের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবজাতির বাসস্থানের পরিবেশের উপর গুরুত্বারোপ করা এবং বসবাসের নিরাপদ চেতনা বাড়ানো। চীনের চিয়াং সু প্রদেশের সু চৌ শহরকে পুরস্কৃত করা হয়। ইউএন-হ্যাবিচ্যাটের কার্যনির্বাহী পরিচালক মাইমুনাহ শরিফ বলেন, বর্তমানে বসবাসের পরিবেশ উন্নয়ন খাতে অনেক উন্নয়নশীল দেশ বেশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এই ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা অন্যদের জন্য উল্লেখযোগ্য। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো।

এ বছরের বিশ্ব বাসস্থান দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'শহরের আবর্জনা ব্যবস্থাপনা করা'। ইউএন-হ্যাবিচ্যাটের সর্বশেষ প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১০ সালে বিশ্বে প্রত্যেক মানুষ থেকে ০.৮ কিলোগ্রাম আবর্জনা তৈরি হয়। এর ব্যবস্থাপনা সুসংহত না হলে, ২০২৫ সালে বিশ্বে আবর্জনার বার্ষিক পরিমাণ হবে ৫৯০ কোটি টন। এটি মানবজাতির বসবাসের পরিবেশে ভয়াবহ হুমকি সৃষ্টি করবে। সেই সঙ্গে, অর্থের অভাব এবং অভিজ্ঞতার দুর্বলতাসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরের কারণে আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় অনেক চাপ পড়বে ব্যাপক উন্নয়নশীল দেশসমূহে। এ সম্পর্কে ইউএন-হ্যাবিচ্যাটের কার্যনির্বাহী পরিচালক মাইমুনাহ শরিফ বলেন,

'আবর্জনার ব্যবস্থাপনা অনেক দেশের সম্মুখীন সমস্যা। আমি মনে করি, এই ব্যাপারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে উত্স থেকে আবর্জনা তৈরি কমে যাওয়া। সুতরাং, আমাদের উচিত শিশুদেরকে ভালভাবে শেখানো। তরুণ প্রজন্মের অতিরিক্ত অপব্যয় করার অভ্যাস দূর করতে হবে'।

তিনি আরো বলেন, চ্যালেঞ্জ বেশি হলেও বসবাসের পরিবেশ উন্নয়ন খাতে বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে চীন। এ বছর শুধুমাত্র একটি শহর হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছে চীনের সু চৌ শহর। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'প্রথমে আমি চীনকে অভিনন্দন জানাতে চাই, যাতে আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় বেশ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আশা করি, বিশ্বের অন্যান্য শহরও সু চৌ শহরের মতো আবর্জনার ব্যবস্থাপনায় আরও বেশি চমত্কার উপায় খুঁজে বের করতে পারবে। অবশ্য একই রূপ সকল শহরের জন্য প্রযোজ্য হয় না। বিভিন্ন দেশের বাস্তবতা একই নয়, নিজের ব্যবস্থাপনার উপায় নিজেকে অনুসন্ধান করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় তিনটি বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তা হল অবিরাম উন্নয়ন, বুদ্ধিমান ও কল্যাণকর উদ্যোগ। আমার মনে সু চৌ শহরের যে বিষয়টি গভীর ছাপ ফেলেছে তা হল কমিউনিটির ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন পর্যায়ের সামর্থ্য প্রতিষ্ঠা সবই তথ্য ও প্রযুক্তিগত উপায়ের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে। এতে আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তি বেশি ভূমিকা পালন করেছে'।

এক ঐতিহ্যবাহী শিল্প কেন্দ্র থেকে এক সম্পদ আকারের বুদ্ধিমান শহরে পরিণত হওয়ায় সু চৌ শহর হচ্ছে চীনের শহরায়ন প্রক্রিয়ায় শহর রূপান্তর উন্নয়নের এক সংক্ষিপ্তসার। তিনি আরো বলেন, বিগত ৪০ বছরে চীনে শহরায়ন দ্রুত গতিতে উন্নত হয়েছে। এতে অর্থনীতি ও সামাজিক খাতে বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৭৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চীনের শহরায়ন হার ১৮ থেকে ৬০ শতাংশে বেড়ে গেছে। শহরের সংখ্যা ১৯৩ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৭টিতে। শহরে লোকসংখ্যার প্রবৃদ্ধি থেকে চ্যালেঞ্জ বয়ে আনতে হবে। এই ক্ষেত্রে চীনের সক্রিয় ও কার্যকর সমাধানের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,

'শহর উন্নয়নের ভারসাম্য এবং শহরের অবকাঠামো ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন খাতে ইতোমধ্যেই ধারাবাহিক কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে চীন। আমরা জানি, শহর উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বসবাস সমস্যা, পরিবহণ সমস্যা, দূষণ এবং আবর্জনা ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। এই ক্ষেত্রে চীন যে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে, তা সকলের জন্য উল্লেখযোগ্য'।

(ওয়াং হাইমান/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040