সংবাদ পর্যালোচনা প্রসঙ্গ: বোআও এশিয়া ফোরাম
  2018-09-25 15:36:44  cri

চলতি বছরের মার্চ মাসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দেশবিদেশের তথ্যমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ২০১৮ সাল হবে চীনের কূটনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত, চীনে ইতোমধ্যেই তিনটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে: বোআও এশিয়া ফোরামের বার্ষিক অনুষ্ঠান; শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ছিংতাও শীর্ষসম্মেলন; এবং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরামের বেইজিং শীর্ষসম্মেলন। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা আলোচনা করব বোআও এশিয়া ফোরাম নিয়ে।

২০১৮ সালে হাইনানের একটি লোকসংগীত চীনে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। হাইনানের আঞ্চলিক ভাষায় গাওয়া এ-গানটি ইন্টারনেটে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

১০ এপ্রিল, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বোআও এশিয়া ফোরাম, ২০১৮-এর বার্ষিকী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং একটি ভাষণ দেন। ভাষণের শুরুতে তিনি এই হাইনান লোকসংগীতের কথা উদ্ধৃত করে বিশ্বের ৬৩টি দেশ থেকে আসা বন্ধুদেরকে স্বাগত জানান । তিনি বলেন, 'সুন্দর এ-ঋতুতে নানান দেশের অতিথিরা এই বোআও এশিয়া ফোরাম, ২০১৮-এর বার্ষিক সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন।'

বোআও এশিয়া ফোরাম বিগত ১৮ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। চলতি বছর চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি চালুর ৪০তম বার্ষিকী। ১০ এপ্রিল বোআও ফোরামের ভাষণে প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেন, সকল দেশের উচিত যুগের প্রবণতা অনুসরণ করে উন্মুক্ত বাণিজ্যের নীতি অবলম্বন করা; সংস্কার ও নব্যপ্রবর্তনের পক্ষে কাজ করা; এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাওয়া। চীন সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবে এবং নিজেকে বহির্বিশ্বের জন্য আরও উন্মুক্ত করবে। এশীয় ও বিশ্বের নানান দেশের সঙ্গে এশিয়া ও বিশ্বের সুন্দর ভবিষ্যত একযোগে গড়ে তুলতে চীন কাজ করবে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,

"মানবসমাজের উন্নয়ন-প্রক্রিয়া আমাদেরকে জানিয়েছে যে, নিজেকে উন্মুক্ত করার মাধ্যমে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব। সংস্কার ও নবায়ন মানবসমাজের উন্নয়নের মৌলিক চালিকাশক্তি। শান্তি, উন্নয়ন, ও সহযোগিতার মাধ্যমে সকলের কল্যাণ করা সম্ভব। অর্থনীতির বিশ্বায়ন একটি অপরিবর্তনীয় প্রবণতা এবং সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ চীনের মৌলিক নীতি। চীনের উন্মুক্তকরণের দরজা কখনও বন্ধ হবে না, বরং এ-দরজা আরও বড় হবে।"

৪০ বছরের সংস্কার ও উন্মুক্তরণের মাধ্যমে শুধু চীন লক্ষ্যনীয় সাফল্য অর্জন করেছে তা নয়, বিশ্বের জন্যও বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণে যে-সংকেত ছিল, তা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

ফোরামে অংশগ্রহণকারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলেরর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিন লাগার্দে সাংবাদিকদের বলেন,

"প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অর্থ, বিমা ও গাড়িসহ নানান খাতকে আরও উন্মুক্ত করা হবে; বাণিজ্যিক বাধা কমিয়ে আনা হবে; ব্যবসার জন্য আরও ন্যায্য পরিবেশ তৈরি করা হবে; মেধাস্বত্ব রক্ষায় আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, ইত্যাদি। আমি বিশ্বাস করি, গত ৪০ বছরের সফলতার ভিত্তিতে চীন আগামী ৪০ বছরেও আরও সফলতা অর্জনে সক্ষম হবে।"

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মুখপাত্র কিথ রকওয়েল বলেন, "আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট সি'র ভাষণ খুবই উত্সাহব্যঞ্জক। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আশা করি, এই ব্যবস্থাগুলো বর্তমান পরিস্থিতি উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রধান সদস্যদেশগুলোর মধ্যে মতভেদ দূর করতে সাহায্য করবে।"

এদিকে, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কেং শুয়াং স্পষ্টভাবে বলেন, চীন বাস্তব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উন্নয়ন ও বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। প্রেসিডেন্ট সি চীনকে আরও উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। এর মানে, চীনের উন্নয়ন বিশ্বের জন্যও সুযোগ। চীন নিজের উন্নয়নকে বিশ্বের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে ইচ্ছুক। (শিশির/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040