৯০ শতাব্দীর শুরুর দিকে, এখানে চীনের প্রথম শুল্ক রক্ষা অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৫ সালে এখানে চীনের প্রথম বৈদেশিক পুঁজি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৩ সালে চীনের প্রথম অবাধ বাণিজ্য এলাকা এখানে প্রতিষ্ঠিত হয় । চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি কাজে লাগানোর অনেক ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় শাং হাই সাক্ষী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শাংহাইয়ের পরিবর্তন সম্পর্কিত আলোচনায় শাংহাই লুও শি ওষুধ লিমিটেড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক এবং চীনা বংশোদ্ভূত একজন জার্মান চৌ হুং বলেন,
'বিশাল পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৮৩ সালে আমি জন্মগ্রহণ করি। সে সময় জন্মস্থান ওয়েন চৌ থেকে শাংহাইয়ে যেতে শুধু জাহাজ ব্যবহার করতে হতো। জার্মানি যেতে সময় লাগতো এক সপ্তাহ। বর্তমান বিমানে শুধু কয়েক ঘন্টার মাধ্যমে জার্মানিতে পৌঁছাতে পারি। অবশ্য শহরের অবস্থাও অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। যদি আমি বাইরে বেশি সময় থাকি, তাহলে শাংহাইয়ে ফিরে আসার পর এক অপরিচিত অনুভূতি আসে। কিন্তু, এক বছর জার্মানি ত্যাগ করলে, ফিরে আসার সময় আমি জার্মানির কোনো পরিবর্তন দেখি না'।
ছোটবেলা থেকে চৌ হুং বাবা-মার সাথে জার্মানিতে থাকেন এবং লেখাপড়া করেন। সাত বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২০১৭ সালের জুন মাসে গোটা চীনের প্রথম বৈদেশিক প্রযুক্তিবিদ ব্যুরো স্থাপন করে চীনের শাংহাই ফু তং কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে বিদেশি প্রযুক্তিবিদের জন্য ৯টি সুবিধাজনক উদ্যোগ প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে একটি হল শাংহাই অবাধ বাণিজ্য এলাকার পরীক্ষামূলক ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে চৌ হুংয়ের মতো বিদেশি প্রযুক্তিবিদের জন্য শাংহাইয়ের স্থায়ী বসবাস আইডি কার্ড পাওয়া। এই নীতি প্রবর্তনের পর, চৌ হুং দ্রুত আবেদন করেন এবং তিনি হচ্ছেন গোটা চীনে এই আইডি কার্ড পাওয়া প্রথম ব্যক্তি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন
'এটি আমার গৌরব। কারণ এই কার্ড কেবল যে আমার কর্মকাণ্ড ও জীবনের জন্য অনেক সুবিধা সৃষ্টি করেছে তা নয়, তা চীনে আরও বেশি সময় থাকার সুযোগও প্রদান করেছে'।
১৯৯০ সালের এপ্রিলে ফু তুংকে উন্মুক্ত করার ঘোষণা করে চীনা সরকার। ফু তংয়ে অর্থনৈতিক প্রযুক্তি উন্নয়ন এলাকা ও কিছু অর্থনৈতিক বিশেষ এলাকার নীতি পালন করা হয়। দুই বছর পর ফু তুং নতুন এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি প্রযুক্তিবিদের জন্য ধারাবাহিক সুবিধাজনক উদ্যোগ নির্ধারিত হয়। এ সম্পর্কে শাংহাই ফু তুং আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিবিদ উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাপরিচালক হুয়াং ই ফেই বলেন
'এই ক্ষেত্রে আমাদের তিনটি নব্যতাপ্রবর্তন রয়েছে। সংস্থার নবত্যাপ্রবর্তন, ব্যবস্থার নবত্যাপ্রবর্তন ও কর্মকাণ্ডের নবত্যাপ্রবর্তন। ব্যবস্থা নবত্যাপ্রবর্তন ক্ষেত্রে এ বছরের এপ্রিল মাসে 'প্রযুক্তিবিদ উন্নয়নের ৩৫টি ধারা' প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ৮টি ধারার প্রধান বিষয় হল বিদেশি প্রযুক্তিবিদরা শাংহাই অথচ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দায়িত্ব গ্রহণ করা। তাঁরা চীনে স্থায়ীভাবে বসবাসের আইডি কার্ড আবেদন করতে পারেন। ভবিষ্যতে, ফু তং আন্তর্জাতিক প্রযুক্তিবিদ বন্দর আরও ৫টি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করবে। এর মধ্যে রয়েছে গণসেবা, বাজার সেবা, যোগাযোগ ও বিনিময় প্রচার এবং অনলাইন সেবা প্রভৃতি।
পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে শাংহাই পৌর জনশক্তি সম্পদ ও সামাজিক সুনিশ্চয়তা ব্যুরো থেকে শাংহাইয়ে আসা বিদেশি প্রযুক্তিবিদের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি। (ওয়াং হাইমান/টুটুল)