সম্প্রতি আয়োজিত এই সম্পর্কিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী চাং হান হুই বলেন,
এবার চীন ও রাশিয়ার শীর্ষবৈঠক পরবর্তীতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের দিক নির্ধারণ করবে। দু'দেশের শীর্ষনেতা তিন মাসের মধ্যে তিনবার বৈঠক আয়োজন করেছেন এবং পারস্পরিক সফর বাস্তবায়ন করেছেন; তা চীন ও রাশিয়া সম্পর্কের গুরুত্ব প্রতিফলিত করেছে। এটি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সুষ্ঠু কর্ম-সম্পর্ক ও গভীর ব্যক্তিগত মৈত্রীর প্রতিফলন।
বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে বিভিন্ন সুযোগে দু'দেশের নেতারা ২৬ বার বৈঠক করেছেন। যা বড় দেশের শীর্ষনেতার বৈঠকের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর ফলে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্কও বড় দেশের সম্পর্কের দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।
আমরা ২০১৩ সালের মার্চ মাসের দিকে দৃষ্টি দেই। তখন নব-নির্বাচিত চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং রাশিয়াকে তার প্রথম বিদেশ সফরের গন্তব্যস্থান হিসেবে নির্ধারণ করেন। এটি ছিল 'সি-পুতিন' বৈঠকের সূচনা। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন,
আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর রাশিয়ায় প্রথম সফর করেছি। পুতিন হলেন আমার সঙ্গে বৈঠক করা প্রথম বিদেশ নেতা। আমি আর প্রেসিডেন্ট পুতিন আন্তরিকভাবে মতবিনিময় করেছি, আমাদের সুষ্ঠু বৈঠক হয় এবং আমরা ভালো বন্ধু।
ক্রেমলিন ভবন আড়ম্বরের সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়েছে। পুতিন আট ঘণ্টা সময় ধরে প্রেসিডেন্ট সি'র সঙ্গে ছিলেন। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রথম বারের মতো কোনো বিদেশি নেতার জন্য দরজা খুলেছে। ঠিক এবার সফরে দু'দেশের শীর্ষনেতা চীন-রাশিয়া সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে একমত হয়েছেন।
পাঁচ বছরে ক্রেমলিন থেকে গণমহাভবন পর্যন্ত, সোচি থেকে সিয়ামেন পর্যন্ত, বালি দ্বীপ থেকে ভিয়েতনামের দা নাং পর্যন্ত, দু'দেশের বিনিময় খুব ঘনিষ্ঠ, তাদের বৈঠকের আলোচ্য বিষয়ও খুব ব্যাপক। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থেকে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিস্থিতি, আর্থিক সহযোগিতা থেকে মানবিক বিনিময়। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে আকাশ-পাতাল পরিবর্তন ঘটলেও চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক দু'দেশের শীর্ষনেতার নেতৃত্বে আরো দৃঢ় এবং স্থিতিশীল হচ্ছে।
২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিনের নতুন মেয়াদ শুরু হয়। তিনি চীনকে নতুন মেয়াদে সফরের প্রথম দেশ হিসেবে নির্ধারণ করেন। সেই সফরে অর্থাত্ গত ৮ জুন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পুতিনকে দেশের সর্বোচ্চ মর্যাদার 'মৈত্রী পদক' প্রদান করেন। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,
২০০০ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট পুতিন পর পর ১৯ বার চীন সফর করেছেন এবং চীনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। তিনি হলেন চীনে সবচেয়ে বেশি সফরকারী নেতা এবং চীনা জনগণের সবচেয়ে পরিচিত বড় দেশের শীর্ষনেতা। নতুন সূচনায় আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য যৌথ চেষ্টা চালাতে আগ্রহী।
(শুয়েই/তৌহিদ)