0903minyue
|
কুছিনের গঠন অত্যন্ত মনোরম। এর আওয়াজ মসৃণ ও উজ্জল এবং সুর সুক্ষ ও পরিবর্তনশীল। প্রাচীনকালের লোকেরা কুছিন বাজানোর সময় নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতেন। কু ছিন বাজানোর আগে তাদের স্নান করতে, নতুন কাপড় পরতে এবং ধূপকাঠি জ্বালাতে হতো। তারপর দুটো পা গুছিয়ে বসে কুছিন পায় বা টেবিলে রেখে বাজাতে হতো। কুছিন বাজানোর সময় বাম হাত দিয়ে তার টানা হয় এবং ডান হাত দিয়ে তার চেপে সুর নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বাজানোর সময় পুরোপুরিই কুছিনের প্রতীক অনুসরণ করতে হয়। সুরের নির্ভুলতা নিশ্চিত করার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।
চীনের প্রাচীনকালের পণ্ডিতরা কুছিন সংগীতের সংগে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। প্রাচীনকালের বহু দলিলপত্রে প্রতীয়মান হয় যে, চীনের পণ্ডিতরা বরাবরই কুছিন সংগীতের প্রধান শরীক ছিলেন। কু ছিনের আবিষ্কার, বাজানো, উপভোগ আর প্রচলনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন তাঁরা।
কুছিনের গঠন খুবই নিয়মমাফিক। এটি একটি বিশেষ কৌশলও বটে। চীনের থাং আর সুং রাজবংশের আমল ছিল কুছিনের স্বর্ণযুগ। সেই সময় চমত্কার কৌশলসম্পন্ন ও সুমধুর সুরসম্পন্ন কুছিন তৈরি হয়। তবে প্রাচীন কুছিন তৈরির প্রচলন আজ আর নেই। এখনো কিছু সংখ্যক প্রাচীন কুছিন রয়ে গেছে। তবে সেগুলোর অধিকাংশই শিল্পীদের নিজেদের তৈরি বলে কুছিনের বিভিন্ন অংশের অবস্থান আর মাত্রা একক নয়। গত কয়েক দশকে চীনে কুছিন তৈরির কাজ আবার শুরু হয় এবং এর সংস্কার করা হয়। ফলে এই সুপ্রাচীন বাদ্যযন্ত্র নতুন জীবন লাভ করেছে।
কুছিনের প্রকাশ-শক্তি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। আনন্দ, রাগ, বেদনা আর প্রফুল্লতার অনুভূতি এবং প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা কুছিনের মাধ্যমে জীবন্তভাবে প্রকাশ করা যায়। কুছিন বাজানোর উপায় নানা ধরনের। এটি এককভাবে বাজানো যায়, 'সিয়াও'-এর সংগে সমবেতভাবে বাজানো যায় আবার প্রাচীন গানগুলোর জন্যে আবহ সঙ্গীত হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে সংরক্ষিত কুছিনের সুরগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক হচ্ছে আবহ সঙ্গীত।
আজকের অনুষ্ঠানে কুছিনের যে সুর আপনাদেরকে শোনাবো সেটি হলো 'হু চিয়া শি পা পাই'। হান রাজবংশের শেষ দিকে এ সঙ্গীতটি সৃষ্টি করা হয়। সেসময় যুদ্ধের কারণে অনেককেই নিজ নিজ বাড়িঘর ছেড়ে অনেক দূরে চলে যেতে হতো। এই সঙ্গীতে সুরকার তার জন্মস্থানের কথা মনে পড়ার বেদনার অনুভূতি প্রকাশ করেন এতে। শুনুন তাহলে সঙ্গীতটি।
(স্বর্ণা/তৌহিদ)