যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে-দেওয়া-বাণিজ্যযুদ্ধ মেক্সিকো-চীন সহযোগিতার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে
  2018-08-15 14:18:33  cri
সম্প্রতি চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), মেক্সিকো ও ক্যানাডার রফতানিপণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে বিশ্বব্যাপী সমালোচিত হয়। মেক্সিকোর বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক 'বৈদেশিক বাণিজ্য ব্যাংক' সম্প্রতি 'মেস্কিকো পরিস্থিতি' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সংরক্ষণবাদের কারণে 'উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি'র আলোচনা পুনরায় শুরু এবং বিভিন্ন রফতানিপণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের নীতি মেক্সিকোর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এর নেতিবাচক প্রভাবে ২০১৯ সালে মেক্সিকোর অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি ০.৬ শতাংশ হ্রাস পাবে। সম্প্রতি মেক্সিকোয় চায়না চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড টেকনোলজির জেনারেল ম্যানেজার মাদাম কারলা লয়ো এ-বিষয়ে চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে-দেওয়া-বাণিজ্যযুদ্ধ আসলে মেক্সিকোর সামনে চীনের সঙ্গে সহযোগিতার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একতরফাবাদ ও বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ নীতি সম্পর্কে মেক্সিকোর বাণিজ্যমহলের অনেকে সাধারণভাবে মনে করেন, বাণিজ্য-যুদ্ধের শিকার দেশগুলোর উচিত পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করা। মেক্সিকোয় চায়না চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড টেকনোলজির জেনারেল ম্যানেজার মাদাম কারলা লয়ো এ-সম্পর্কে বলেন, "আসলে যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে-দেওয়া-বাণিজ্যযুদ্ধ মেক্সিকো ও চীনের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। দু'দেশ পরস্পরকে বাণিজ্য-যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের জন্য বিকল্প বাজার সরবরাহ করতে পারে। এর মাধ্যমে দু'দেশই উপকৃত হবে।"

বাজার, বিনিয়োগ ও জ্বালানিসম্পদের জন্য মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। সেজন্য উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তির আলোচনায় মেক্সিকো বরাবরই অনেকটা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে। এ-সম্পর্কে লয়ো বলেন, "মেক্সিকোর উচিত অন্যান্য দেশের জন্য নিজের বাজার উন্মুক্ত করা এবং আরও বেশি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করা। যুক্তরাষ্ট্র ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (টিপিপি) থেকে সরে এসেছে, যেটি মেক্সিকো প্রথম দিকেই স্বাক্ষর করে। মেক্সিকোর উচিত বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে দেশের বাজারের পরিবেশ উন্নত করা। যদি উত্তর আমেরিকা অবাধ বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার ফলাফল সন্তোষজনক না হয়, তখন মেক্সিকোর উচিত হবে চীনসহ এশীয় দেশগুলোর ওপর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া। এটি হল বাণিজ্য-যুদ্ধ মোকাবিলার প্ল্যান বি।"

মাদাম লয়ো আরও বলেন, মেক্সিকোর উচিত বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো। মেক্সিকো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি দেখেছে। যেমন, নতুন জ্বালানিসম্পদের ক্ষেত্রে চীনের অগ্রগতি বিরাট। মেক্সিকো হল চীনের একটি সম্ভাব্য বাজার। দু'দেশ যানবাহন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা চালাতে পারে। মেক্সিকোর উচিত এ-ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানো।

মেক্সিকোর নতুন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বলেছেন, বিশ্বের সব হ্যাট ও জুতা মেক্সিকোতে তৈরি করা উচিত। এ-মন্তব্য চীন-মেক্সিকো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যবসায়ীর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। তবে মাদাম লয়ো মনে করেন, লোপেজ মেক্সিকোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদ বিশ্বাস করেন না। লোপেজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর বলেছেন, তিনি আগের সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরিত সকল আন্তর্জাতিক চুক্তি মেনে চলবেন। মাদাম লয়ো বিশ্বাস করেন, চীন ও মেক্সিকো দ্রুতগতির রেলপথসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার সুযোগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট হবে। (ছাই/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040