গত সপ্তাহে আমরা বলেছিলাম, আদালতে হাজির করার আগের রাতে ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় রুয়ান লিন ইয়ু। আপনাদের অজানা একটি ব্যাপার হলো, ওই ব্যবসায়ী কিন্তু খুব খারাপ একটি কাজ করেন। রুয়ান ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যার কয়েক মাস আগে রুয়ানের মেয়ে বন্ধুর সঙ্গে বসবাস করতে শুরু করে ওই ব্যবসায়ী। রুয়ান এ তথ্য জানতে পারে। তার মনে অনেক আঘাত লাগে। আরো ভয়াবহ একটি কথা হলো, সেই ব্যবসায়ীর চাপে রুয়ানের মেয়ে বন্ধুটি রুয়ানের লেখা অনুকরণ করে একটি আত্মহত্যা নোট লেখে। আর সেই আত্মহত্যা নোট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেই ব্যবসায়ীর লক্ষ্য ছিলো রুয়ান লিন ইয়ু'র মৃত্যুর মাধ্যমে তার সম্পর্ক ত্যাগ করা। কিন্তু জনমতের চাপের সামনে দাঁড়াতে না পেরে সে আত্মহত্যা করে। 'মানুষের বক্তব্য ভীতিকর শক্তি' আত্মহত্যা নোটের এ বাক্যটি এখনোও বিখ্যাত। তাহলে রুয়ান লিন ইয়ু'র নিজ-লেখা আত্মহত্যার নোটে কি লেখা রয়েছে?
রুয়ানের সঙ্গে সেই ব্যবসায়ী অনেকবার দুর্ব্যবহার করেছে। সে ব্যবসায়ী এতে ভয় পান যে, এ খবর ছড়িয়ে গেলে অভিজাত সমাজে তার সুনাম নষ্ট হবে। এসব চিন্তা করে সে জাল আত্মহত্যা নোট তৈরি করে।
কিন্তু কেউ কেউ মন্তব্য করে যে, ভালবাসার কষ্টের পাশাপাশি রুয়ান তার ক্যারিয়ার নিয়ে চ্যালেঞ্জর সম্মুখীন হয়। তখন নির্বাক ছবির যুগ প্রায় শেষ। আসলে রুয়ান লিন ইয়ু'র ম্যান্ডারিন ভালো ছিল না। অনুভূতির চাপ, জনগণের মতামতের চাপ, কর্মজীবনের চাপ, রুয়ানের চরিত্র- সব মিলিয়ে রুয়ান লিন ইয়ু জীবনের শেষ কাজটি করেন।
আমি উল্লেখ্য করেছি যে, চীন প্রজাতন্ত্রের অন্য আরেক দেবী হু ডিয়েই'র ভাগ্য আসলে রুয়ান'র চেয়ে আরো কষ্টের। কিন্তু হু ডিয়েই'র একটি চমত্কার পরিবার ছিল। তার চরিত্রও আরো আশাবাদী এবং সে খুব স্মার্ট। হু ডিয়েই'র উপযাচক অনেক বেশী। কিন্তু ধনী পরিবারের মাস্টারের সঙ্গে বিয়ে করতে আগ্রহী নয় হু। কারণ, সে জানে যে ধনী পরিবারের মাস্টারের মধ্যে ফুর্তিবাজ অনেক বেশি থাকে।
আসলে সে যুগে বেশিরভাগের নারী তারকার ভাগ্যে দুঃখজনক পরিণতি দেখা যায়। যুদ্ধের কারণে স্থানচ্যুতি অনিবার্য হয়ে পড়ে! আজ হয়তো তুমি সবচেয়ে বিখ্যাত ছবিতে অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় করছো, আগামীকাল যুদ্ধ শুরু হলে শাংহাই ত্যাগ করে হংকংয়ে পালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু পরের দিনে হংকংয়েও যুদ্ধ শুরু হয়। জাপানি সেনাবাহিনী হু ডিয়েইকে চেনে। সেজন্য তাকে জাপানি দর্শকদের জন্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করার চাপ দেওয়া হয়। অবশ্যই হু ডিয়েই তা নাকচ করে। কিন্তু, এজন্য তাকে হংকং ত্যাগ করতে হয়।
বন্ধুরা, "চীন প্রজাতন্ত্রের দেবী"র দ্বিতীয় পর্ব এখানেই শেষ। আগামী সপ্তাহে অন্যান্য দেবীর গল্প শোনাবো। এখন শুনুন আমার সহকর্মী তৌহিদের উপস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক পর্ব।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/তৌহিদ)