৩১ জুলাই বাংলাদেশের সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের তেজগাঁওয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে চীনের ইউনান মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে যাওয়া ১৫জন চীনা শিক্ষার্থীর নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএনএম মেশকাত উদদীন-এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিনী ম্যাডাম ইয়ান উয়েনছুন। অতিথির বক্তব্য রাখেন এসইইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিনিধি সদস্য এম. কামালউদ্দিন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চীনের ইউনান মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ভাষা ও সংস্কৃতি অনুষদের উপ-ডিন অধ্যাপক ড. লু ফাং এবং চীনা এ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি মিস. ফান সাওরং।
চীনের ত্রয়োদশ জাতীয় ভোকাল সংগীত প্রদর্শনী আগামী ৬ থেকে ১৭ অগাস্ট হেইলোংচিয়াং প্রদেশের হার্বিন শহরে অনুষ্ঠিত হবে। ছয়টি নাটক এতে পরিবেশন করা হবে।
এবারের প্রদর্শনীতে বেল ক্যানো, লোকসংগীত ও পপ সংগীত-এ তিনটি প্রতিযোগিতা থাকবে।
৩১ জুলাই চীনের আনহুই প্রদেশের হ্য ফেই শহরে চীনা হাইওয়ে নির্মাণ বিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মাননা—লি ছুন পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। হুনান প্রদেশের চি ছা হাইওয়ে আই জাই অতিরিক্ত বড় সাসপেনশন ব্রিজ, ছিং তাও চিয়াও চৌ ওয়ান জিয়াওঝো বে সেতু, মানশান ইয়াংজি নদী হাইওয়ে ব্রিজসহ ২২টি প্রকল্প ২০১৬-২০১৭ বছরের লি ছুন পুরস্কার লাভ করেছে।
সেরা হাইওয়ে নির্মাণ খাতে লি ছুন পুরস্কার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ পুরস্কার তিনটি মান হলো, তারা হলো চমৎকার জরিপ, চমৎকার নকশা, গুণ প্রকৌশল। আর লি ছুন হলেন চীনের স্যুই রাজবংশের বিখ্যাত নির্মাণ প্রকৌশলী। লি ছুন পুরস্কার হলো চীনের হাইওয়ে নির্মাণ শিল্পের সর্বোচ্চ মানের পুরস্কার।
"গ্লোবাল পান্ডা পুরস্কার"-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ২৪ জুলাই ইন্দোনেশিয়ান ওয়াইল্ড লাইফ পার্কে অনুষ্ঠিত হয়।
চীনা পান্ডা 'ছাই থাও' ও 'হু ছুন' গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ায় নতুন জীবন শুরু করেছে। ইন্দোনেশিয়ার মানুষকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি এগুলো ক্রমবর্ধমান শান্তি ও বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
পান্ডাসহ বিপন্ন প্রাণী রক্ষার জন্য আরো অনেক মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করছে আন্তর্জাতিক সমাজ।
বেলজিয়ামের জ্যাকবস ২০০০ সালে 'গ্লোবাল পান্ডা সংস্থা' প্রতিষ্ঠা করেছে। এর প্রধান লক্ষ্য পান্ডা সুরক্ষার গুরুত্ব প্রচার করা।
বন্ধুরা, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার আগে ১৯১২ সাল থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চীন প্রজাতন্ত্র বলা হতো। আজ একটি মজার প্রতিপাদ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো—"চীন প্রজাতন্ত্রের দেবী"।
সেসময় শাংহাই বিনোদন স্থান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের হলিউডের পর বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী বিনোদন কেন্দ্র। ২০ শতাব্দীর ৩০-এর দশক হলো শাংহাই বিনোদন শিল্পের সোনালি যুগ। চীনা লোকেরা সেই যুগে শাংহাইকে বলতো 'পুরনো শাংহাই'। জানা গেছে, পুরানো শাংহাই যুগের প্রায় ৭ হাজার সংগীত সৃষ্টি হয়। একটু চিন্তা করে দেখুন, সেসময় সাত হাজার ভালো গানের কপিরাইট এখনও রয়ে গেছে। এটি খুব বড় একটি শিল্প।
সংগীতের পাশাপাশি ওল্ড শাংহাই চলচ্চিত্রগুলি সেই সময় ছিল বিশ্বসেরা। ২০ শতাব্দীর ৩০-এর দশকে সারা চীনে একশ'টির বেশি চলচ্চিত্র কোম্পানি ছিলো, এর মধ্যে অধিকাংশই শাংহাইয়ের কোম্পানি। সেজন্য তখন শাংহাইকে 'ওরিয়েন্টাল প্যারিস' বলা হতো। জাপানকে কোনভাবেই শাংহাইয়ের সঙ্গে তুলনা করা যেত না।
শাংহাই ফিল্ম স্টুডিওয়ের একটি পুরানো কারখানার ব্যবস্থাপক জানান যে, চীন প্রজাতন্ত্রে দু'টি বড় সৌন্দর্যের গল্প তার মনে আছে। প্রথমটি মজার, দ্বিতীয়টি দুঃখের। তাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর যুগ কেমন ছিল? তাদের জীবনের গল্পের শেষ কেমন হয়েছে?
প্রথমে শুনুন রুয়ান লিন ইয়ু'র গল্পের সুন্দর ঘটনাটি।
চীন প্রজাতন্ত্র যুগের প্রতিটি দেবী অনেক সুন্দরী ছিলেন। কিন্তু তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা ছিল আলাদা। কারণ তাদের চরিত্র ছিল আলাদা ধরনের। প্রতিটি দেবী জীবন শেষের আগে তাদের শেষ কথা থেকে মানুষের চরিত্রের বিশাল পার্থক্য বোঝা যায়। মৃত্যুর আগে অনেকের মনে কোনো দুঃখ ছিল না। যেমন বিখ্যাত অভিনেত্রী হু ডিয়েই, তার চীনা নাম প্রজাপতির উচ্চারণ একই, মৃত্যুর আগে হু ডিয়েই বলেছিলে 'প্রজাপতি উড়ে গেছে'।
কিন্তু অন্যদিকে রুয়ান লিন ইয়ু নিজের প্রাণত্যাগের আগে একটি দীর্ঘ আত্মহত্যা নোট লিখে যান। এতে তার জীবনের নানা ধরনের দুঃখ-দুর্দশার কথা তুলে ধরা হয়েছে।
রুয়ান লিন ইয়ু এত বিখ্যাত, তার জীবন এত বিশেষ হওয়ায় তার গল্প অনুসারে অনেক চলচ্চিত্রের শুটিং করা হয়। যদি রুয়ান লিন ইয়ু বর্তমান বিনোদন দৃশ্যের মধ্যে থাকে, সে আত্মহত্যা করবে না। রুয়ানের সমস্যা হলো তার অতিরিক্ত আত্মসম্মান। কেন তিনি আত্মহত্যা করবেন? তার জীবনে দু'টি ভালবাসার ঘটনা আছে। কিন্তু তখনকার মিডিয়া তার ভালবাসা নিয়ে অনেক মন্তব্য করেছে, প্রবন্ধ ছেপেছে, এমনকি সমালোচনাও করেছে। আসলে রুয়ান লিন ইয়ু'র অভিজ্ঞতার চেয়ে হু ডিয়েই'র জীবন দুঃখ আরো বেশি। কিন্তু হু ডিয়েই'র একটি শক্তিশালী হৃদয় আছে। সোনালি যুগের পুরানো শাংহাই উন্নত সংগীত ও চলচ্চিত্র শিল্প ছাড়াও 'গুজব', ম্যাগাজিন এমনকি প্যাপেরাজিও ছিল বেশ উন্নত। জানা গেছে, অন্য এক দেবী চৌ সুয়ান'র বিবাহবিচ্ছেদের প্রতিবাদ হিসেবে একটি বিশেষ ম্যাগাজিন প্রকাশিত হয়। সেজন্য ব্যক্তিত্ব ভাগ্য নির্ধারণ করে। রুয়ান লিন ইয়ু'র চরিত্র সংবেদনশীল এবং দুর্বল, অন্যদিকে হু ডিয়েই'র চরিত্র শক্ত এবং আশাবাদী।
রুয়ান লিন ইয়ু'র প্রথম ভালবাসা হয় ঝাং পরিবারের চতুর্থ-র্যাংকিং তরুণ মাস্টারের সঙ্গে। তখন রুয়ান লিন ইয়ু তার মার সাথে সেবিকা হিসেবে ঝাং পরিবারে যান। এটি একটি পুরানো সমাজের ঐতিহ্যের মতো। মা সেবিকা হিসেবে বড় পরিবারে কাজ করে। তার মেয়ে বড় হওয়ার পর সে বড় পরিবারের এক তরুণ মাস্টারের সাথে ভালবাসায় জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দু'জনের সামাজিক অবস্থার মধ্যে বিশাল ব্যবধান থাকায় তারা বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু গোপনে তারা একসাথে বাস করতে থাকে। ধীরে ধীরে রুয়ান লিন ইয়ু বিনোদন জগতে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। অন্যদিকে তরুণ মাস্টার কোনো কাজ করে না। অবশেষে তরুণ মাস্টারকে তাঁর জীবন যাপনের জন্য রুয়ান লিন ইয়ু'র বেতনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। অবস্থা আরো গুরুতর হয়ে ওঠে। তরুণ মাস্টার জুয়া খেলা শুরু করে! তার এই কাজ রুয়ান লিন ইয়ুর হৃদয়ে আঘাত করে। পরে রুয়ান লিন ইয়ুন একজন চা-ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচিত হন, তার প্রেমে পড়েন। এ তথ্য জানার পর তরুণ মাস্টার অসন্তুষ্ট হয়ে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সে যুগে পূর্ব বা পশ্চিমা দেশে মাস্টার ও চাকরের মধ্যে অনুভূতি ছিল অনৈতিক। রুয়ান লিন ইয়ু'র জন্য সবচেয়ে অসহ্য জিনিস হলো তরুণ মাস্টার ও চা ব্যবসায়ী দু'জন এক সাথে আশা করে যে রুয়ান আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দেবে। তা বিখ্যাত মহিলা তারকা হিসেবে রুয়ানের জন্য একটি বড় অপমান! আদালতে হাজির করার আগের সে রাতে ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
বন্ধুরা, "চীন প্রজাতন্ত্রের দেবী"র প্রথম পর্ব এখানেই শেষ। আগামী সপ্তাহে অন্যান্য দেবীর গল্প শোনাবো।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/তৌহিদ)