১৯ জুলাই সেনেগালের রাজধানী ডাকারে ফরাসি ভাষায় চায়না ফিল্ম এন্ড টিভি ড্রামা আফ্রিকান প্রজেকশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের পশ্চিম ইউরোপ স্টেশনের প্রধান কাও শি চুন এবং সেনেগাল জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্রের মহাপরিচালক রাসিন তালা 'চীনা থিয়েটার' চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি অনুযায়ী, সেনেগালের জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্র 'চীনা থিয়েটার' প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে। চীনা ভাষা থেকে ফরাসি ভাষায় এসব চলচ্চিত্র ও টিভি নাটক অনুবাদ করেছে চীন আন্তর্জাতিক বেতার। প্রথম দফায় একটি টিভি নাটক, ৫টি প্রামাণ্য অনুষ্ঠান, ৫টি চলচ্চিত্র ও ৫টি কার্টুন প্রচার করা হবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলের তথ্য কার্যালয়ের বিশেষ প্রতিনিধি জাং ইয়ান বিন, সেনেগালের তথ্যমন্ত্রী আবুউলায়ে বিবি ও সেনেগালে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত জাং সুনসহ বিভিন্ন মহলের একশরও বেশি প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জাং ইয়ান বিন বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সেনেগাল সফরের প্রাক্কালে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন খুবই তাত্পর্যপূর্ণ।
তিনি জানান, এ কর্মসূচির মাধ্যমে চীনের চলচ্চিত্র ও নাটক আফ্রিকার দেশে অনুবাদ ও প্রচারিত হবে। আফ্রিকার মানুষ চীনের চলচ্চিত্র ও নাটক পছন্দ করবে বলে আশা করেন তিনি। এই পদক্ষেপ চীন-আফ্রিকা বন্ধুত্বের নতুন সাক্ষী হবে।
ইয়ুননান প্রদেশের খুনমিং শহরের ফুলের বাজারে বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে বর্তমানে বাজারটির স্থান বিশ্বে তৃতীয়। এখানকার ফুলের দামের ওপর নির্ভর করে গোটা চীনের বাজারে ফুলের দাম।
ইয়ুননান চীনের বৃহত্তম ফুল উত্পাদনকেন্দ্র। কৃষকদের কল্যাণে এখানে ২০০২ সালের শেষ দিকে ফুলের নিলামকেন্দ্র স্থাপিত হয়। এখন ইয়ুননানে নিলামের মাধ্যমেই মূলত ফুল বিক্রি হয়।
বর্তমানে ২৫ হাজার কৃষক ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান নিলামকেন্দ্রে ফুল সরবরাহ করে থাকে। ২০১৭ সালে প্রতিদিন গড়ে বিক্রির পরিমাণ ছিল গড়ে ৯৬ কোটি ৫০ লাখ ইউয়ান।
খুনমিং ফুল-নিলামকেন্দ্রের প্রশাসনিক পরিচালক কাও হুং লিং বলেন, কৃষকদের নিলামকেন্দ্রে আসতে হয় না। তাঁরা অ্যাপের মাধ্যমে সব তথ্য পেয়ে যান এবং ব্যাংকের এসএমএসের মাধ্যমে জেনে যান তাদের আয়।
সম্প্রতি সিআরআই'র সংবাদদাতা চীনের তিব্বতে সফর করেছে। বিভিন্ন জাতীয় বৈশিষ্ট্যময় আকর্ষণীয় স্থান পরিদর্শন করেছে। এবারে শুনুন শালু মঠ বিষয়ক একটি সাংস্কৃতিক খবর।
শালু মঠ চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত এলাকার শিকাজে-এ অবস্থিত। চীনের হান ও তিব্বতি স্থাপত্যশিল্প এখানে দারুণভাবে সমন্বিত হয়েছে। ১০৮৭ সালে এই মঠ তৈরি করা হয়। এটি তিব্বতের বৌদ্ধধর্মের শালু শাখার কেন্দ্র ও তাও মতবাদের স্থান। শালু মঠের মেঝের আয়তন ১হাজার ৫শ বর্গমিটার। এখানে হান ও তিব্বতি জাতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নিদর্শন রয়েছে।
শালু মঠে মূর্তি এবং সমৃদ্ধ ভাস্কর্য রয়েছে। এতে নেপাল ও ভারতের শৈল্পিক সৌন্দর্য অনুভব করা যায়। তা চীন, নেপাল ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ সংস্কৃতির বিনিময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
শালু মঠের সুন্দর ছতি দেখতে চান? আমাদের 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' ওয়েবপেইজ ক্লিক করুন।
পান্ডা অনেক সুন্দর, কিউট একটি পশু। অনেক লোক চিড়িয়াখানায় গিয়ে শুধু পান্ডা দেখতে চান। অনেক মানুষ পান্ডার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে খেলার সুযোগ লাভ করতে চায়। আচ্ছা, আজকের অনুষ্ঠানে এ ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
সম্প্রতি এক মেয়ে তার সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টে পান্ডার যত্ন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে। এ পোস্টটি ৭ হাজারও বেশি ফরোয়ার্ড এবং পাঁচ হাজারের বেশি লাইক পেয়েছে। তাহলে শুনুন এ স্বেচ্ছাসেবক ও পান্ডার এক দিনের গল্প।
পান্ডা এত কিউট, আপনারা অবশ্যই মনে করেন যে পান্ডার যত্ন নেওয়া অনেক সুখের একটি কাজ, তাইনা?
উত্তর: না!
এ স্বেচ্ছাসেবকের প্রথম দিনের কাজ ছিল পান্ডার মল পরিষ্কার করা! সারা দিন ধরে পান্ডার মল পরিষ্কার করেছে। দ্বিতীয় দিন স্বেচ্ছাসেবক মেয়েটি আর হাত উঠাতে পারে না। কারণ, তার হাত ব্যথা হয়ে ছিল।
তবে, দ্বিতীয় দিন তার কাজ ছিল ভিন্ন। মল ত্যাগ করা পান্ডাকে খাওয়ানো। কিন্তু পান্ডার একটি অভ্যাস আছে। তারা বরাবরই গাছে উঠতে পছন্দ করে। মেয়েটি মনে করে যে, এটা পান্ডা নয়, এটা কোয়ালা হবে। আর তার পর্যবেক্ষণ অনুসারে কখনো কখনো কোনো পান্ডা মাটিতে বসে ৩০ মিনিট বাঁশ খায়। বাঁশ পান্ডার প্রিয় জিনিস। আর কী সে পছন্দ করে?
ঘন বরফ! পান্ডা তাপ খুব ভয় পায়, সেজন্য বাঁশ খাওয়ার পাশাপাশি কিছুটা ঠাণ্ডার জন্য সে বরফের টুকরা জড়িয়ে ধরে ঘুমায়।
আর লক্ষণীয় একটি ব্যাপার হলো, পান্ডার যত্ন নেওয়া স্বেচ্ছাসেবক মেয়েটি পান্ডাকে জড়িয়ে ধরতে পারে না! এর কারণ হলো, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পান্ডাকে রক্ষা করা। যদি স্বেচ্ছাসেবকের দক্ষতার অভাব থাকে তাহলে পান্ডার ক্ষতি হবে। আর অন্যদিকে, পান্ডা আসলে ভালুক প্রজাতির একটি পশু। পান্ডার সঙ্গে খেলার সময় ভলান্টিয়াররা আহত হতে পারে!
আচ্ছা তাহলে এ স্বেচ্ছাসেবকের কাজের জন্য কীভাবে আবেদন করতে হয়?
খুবই সহজ। শুধু একটি মেডিকেল রিপোর্ট এবং একটি আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। চীনের তিনটি বিশাল পাণ্ডা ঘাঁটি আছে। কিন্তু এর মধ্যে শুধু Dujiangyan পান্ডা ঘাঁটি স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
গত সপ্তাহের 'জ্ঞানের কথা'র পর চলতি সপ্তাহে আপনাদেরকে 'চীনা জ্ঞান' পর্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিবো।
চীনের < Analects of Confucius >-এ এটি একটি কথা আছে: পনেরো বছর বয়সে, আমি আমার মনকে শেখার জন্য উন্মুখ ছিলাম। পনের বছরের পর, ত্রিশ বছর বয়সে স্বাধীন হতে হবে। ৪০ বছর বয়সে, বিশ্বকে বুঝতে শুরু করি। যখন আমি পঞ্চাশ, তখন আমি স্বর্গের যাওয়ার ইচ্ছা করতাম। ৬০ বছর বয়সে, আমার কান সত্যকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য একটি বাধ্যগত অঙ্গ হয়। আর ৭০ বছর বয়সে, আমি পুরানো পথে হেঁটে যাওয়ার পাশাপাশি হৃদয়ের বাসনা অনুসরণ করতে পারি।
এটা কনফুসিয়াসের কথা, কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম, যুগে যুগে লোকেরা কনফুসিয়াসের কথার বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন। চীনের একজন বিখ্যাত পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, সুরকার কাও সিয়াও সুং এক সাক্ষাত্কারে কনফুসিয়াসের কথার মধ্যে '৪০ বছর বয়সে, বিশ্বকে বুঝতে শুরু করি' নিয়ে তার নিজের মতামত শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন,
"আমি ভাবলাম যে, যখন আমি ৪০ বছর বয়সে এসে দাঁড়িয়েছি, আমি অবশ্যই কনফুসিয়াসের কথার মতো এ বিশ্বকে বুঝতে পারি। কিন্তু এ বয়সে পৌঁছেছি, আমি জানতে পারি যে, আগে বিশ্বের অনেককিছু না বুঝলেও সত্যিই কি ৪০ বছর বয়সে হঠাৎ বুঝতে পারা যায়? অসম্ভব। তাহলে পার্থক্য কী? আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমরা সব বিষয়, প্রতিটি লোককে বুঝতে চেয়েছিলাম। এমনকি এ সমাজ, এ যুগকে বুঝতে চাইতাম। কিন্তু আমরা তা পারতাম না। এমনকি, আপনার প্রিয় মানুষ আপনার বিপরীত দিকে বসে থাকে! তার গভীর মনে কী ভাবছে, তা জানি না। যদি কিছু জিনিস থাকে যা আমরা বুঝতে পারি না, তাহলে আমরা ভয় পাই। বছরের পর বছর চলে গেলে, হঠাত্ আমরা যেন বুঝতে পারি যে, সে 'ভয়' হলো আমাদের যৌবন। যৌবন হারানোর পর ভয় জেগে ওঠে মনে।"
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/তৌহিদ)