চীন-নেপাল সামাজিক সংস্থার গণজীবিকা বিষয়ক প্রকল্প বিনিময় সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  2018-07-30 15:34:05  cri

গতকাল (রোববার) চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ (China NGO Network for International Exchanges) ও নেপাল সামাজিক কল্যাণ কমিটির উদ্যোগে চীন-নেপাল সামাজিক সংস্থার গণজীবিকা বিষয়ক প্রকল্প বিনিময় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চীনের ২৫টি সামাজিক সংস্থা ও নেপালের ৩৪টি সামাজিক সংস্থা শিক্ষা, দারিদ্র্যবিমোচন, চিকিত্সা ও দুর্যোগ প্রতিরোধ ও উদ্ধারসহ নানা ক্ষেত্রের চাহিদা নিয়ে মতবিনিময় করেছে।

চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জের মহাসচিব চু রুই সম্মেলনে দেওয়া এক ভাষণে বলেন, চীন ও নেপালের সামাজিক সংস্থা প্রথমবারের মতো গণজীবিকা প্রকল্প নিয়ে বড় আকারের সম্মেলন করেছে। তিনি বলেন, গেল কয়েক বছরে, দু'দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের সাথে সাথে দু'দেশের সামাজিক সংস্থাগুলোর মধ্যে বিনিময়ও বেড়েছে। দারিদ্র্যবিমোচন, শিক্ষা, দুর্যোগ প্রতিরোধ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ নানা ক্ষেত্রে কার্যকর কার্যক্রম চালিয়েছে।

নেপালের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী থাম্মায়া তাঁর ভাষণে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে চীনের সাফল্যের উচ্চ মূল্যায়ন করেন এবং চীনের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা থেকে তাঁর দেশের শেখা উচিত্ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, চীন-নেপাল সম্পর্কের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। শুধু দেশের সরকার নয়, দু'দেশের জনগণের বিনিময়ও প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

সম্মেলনে চীনের ১১টি সামাজিক সংস্থা নেপালের সামাজিক সংস্থার সঙ্গে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী ও যুবকর্মের প্রশিক্ষণসহ নানা ক্ষেত্রে বিনিময় সহযোগিতা চুক্তি বা স্মারকলিপি স্বাক্ষর করেছে।

এর আগে বেইজিং সি আই চ্যারিটি ফাউন্ডেশন বা সিএসিএফ তিন বছরের মতো নেপালি সামাজিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। তারা নেপালে ৪০০টি মাউন্টেন সাইকেল এবং বিদ্যুত্ সাশ্রয়ী বাতি ও ১০০০ স্কুল ব্যাগ দান করেছে। তারা এখন চীন-নেপাল মৈত্রীবিষয়ক একটি গণকল্যাণ চলচ্চিত্র তৈরি করবে। নতুন সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে সিএসিএফ-এর পরিচালক চাও সিয়াং বলেন, এবার আমারা নেপালের সামাজিক সংস্থার সঙ্গে চারটি প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এগুলো হলো, শিক্ষা সহায়তা, বল ও ক্রীড়া সামগ্রী দান, দূরবর্তী অঞ্চলের শিশুদের সাইকেল দান এবং নিরাপদ পানীয় জল প্রকল্প।

নেপাল আরনিকো সোসাইটি সংস্থার সদস্যরা সবাই চীনে লেখাপড়া করেছে এবং চীন তাদের জন্য খুব পরিচিত স্থান। আরনিকো সোসাইটি ও শেনচেন ইয়ুথ চাওনিজ সোডালিটি তিন বার 'ভালবাসা এবং আলো' শিরোনামে গণকল্যাণমুখী অনুষ্ঠান আয়োজন করে। তাদের সাহায্যে নেপালের ২৬০ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন করা হয়েছে। চীনের সামাজিক সংস্থার সহযোগিতা সম্পর্কে আরনিকো সোসাইটি'র চেয়ারম্যান সার্‌ব উত্তম শেরেসথা বলেন, আমারা যে কোনো একটি চীনা সামাজিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা করলে আমাদের জনগণ উপকৃত হবে। পাশাপাশি, দু'দেশের জনগণের মৈত্রী জোরদার হবে। নেপালি মানুষ হয়তো জানবে না যে, কোন চীনা সংস্থা তাদেরকে সাহায্য করেছে; তবে তারা জানে চীন তাদেরকে সাহায্য করছে।

চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জের উপদেষ্টা ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈদেশিক যোগাযোগ উপমন্ত্রী ওয়াং ইয়া জুন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আশা করেন, চীন-নেপাল সামাজিক সংস্থা নানা প্রকল্পে যৌথভাবে কাজ করবে এবং স্থিতিশীলভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। তিনি বলেন, নেপালের সামাজিক কল্যাণ কমিটি ও চায়না এনজিও নেটওয়ার্ক ফর ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

নেপালের সামাজিক কল্যাণ কমিটি প্রথমবার বিদেশি সামাজিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করলো। এটি নেপালের পক্ষ থেকে চীনকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রমাণ এবং দু'দেশের সামাজিক সংস্থার বিনিময়ের জন্য ভালো ও সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আশা করি, সংস্থা দু'টির সহযোগিতা জোরদার হবে এবং দু'দেশের সামাজিক কার্যক্রমে সহযোগিতা বাড়বে। (শিশির/তৌহিদ)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040