চীন-ভারত সুষ্ঠু সম্পর্ক ব্রিক্সের জন্য কল্যাণকর: ভারতীয় শিক্ষাবিদ
  2018-07-26 13:11:14  cri
ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষনেতৃবৃন্দের দশম বৈঠক ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে শুরু হয়েছে। ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের দিক দিয়ে চীন ও ভারত এগিয়ে আছে। এই দেশদুটি ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতামূলক-ব্যবস্থার উন্নয়নে কী কী ভূমিকা রাখছে? এই ব্যবস্থায় চীনের ভূমিকাকে কিভাবে দেখছেন ভারতীয়রা? সম্প্রতি ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্বিদ্যালয়ের চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গবেষণালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হেমন্ত আদলাখা এ-সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

এবারের জোহানেসবার্গ শীর্ষসম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: 'আফ্রিকায় বিক্স: চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবে সহনশীল প্রবৃদ্ধি ও যৌথ সমৃদ্ধি খুঁজে বের করা'। এই সম্পর্কে অধ্যাপক হেমন্ত মনে করেন, চতুর্থ শিল্প-বিপ্লবের সফল দৃষ্টান্ত হিসেবে চীন ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। এমনকি, নিজের উন্নয়ন ও অভিজ্ঞতা ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করছে চীন। তিনি বলেন,

"বিগত দশ বছরে ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা স্থিতিশীল ছিল। এর মানে এই যে, বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ইতোমধ্যেই পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্থানান্তরিত হয়েছে। বিশেষ করে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলো এক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আর এতে চীন নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। ব্রিক্সভুক্ত পাঁচটি দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কাঠামো ও ব্যবস্থার দিক থেকে চীন সবচেয়ে স্থিতিশীল। সেই সঙ্গে, চীন অন্য চারটি সদস্যদেশের সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক অংশীদার। সুতরাং, অনেক ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চীনের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা কেবল যে চীনের জন্য ভাল, তা নয়; বরং অন্য চারটি ব্রিক্সভুক্ত দেশের জন্যও কল্যাণকর।"

তিনি আরও বলেন, ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে চীন। ব্রিক্স গ্রুপ প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে, চীনের সদিচ্ছা নিয়ে অনেক সন্দেহ প্রকাশ করেছিল পশ্চিমা দেশগুলো। ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। এখন এটা স্পষ্ট যে, ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর উন্নয়নে চীনের ভূমিকা সর্বোচ্চ।"

বিগত দশ বছরে উন্নয়নশীল দেশগুলোর যৌথ উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়েছে ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার স্থিতিশীল উন্নয়ন। বিশেষ করে ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর নতুন উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। এতে ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সকল সদস্যদেশ এবং বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ, বিশেষ করে ভারত লাভবান হয়েছে। এ সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন

"সড়ক নির্মাণসহ কিছু বড় আকারের প্রকল্পে নতুন উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যাপক আর্থিক সহায়তা পেয়েছে ভারত। এটি কেবল যে ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চালিকাশক্তি যুগিয়েছে, তা নয়; বরং তা ভারতের মানুষের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করেছে। সুতরাং, নতুন উন্নয়ন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা ভারতের জন্য কল্যাণকর প্রমাণিত হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি অন্য চারটি সদস্যদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও অংশীদারিত্বের সম্পর্কও অব্যাহতভাবে গভীর থেকে গভীরতর করেছে ভারত। চীন ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অব্যাহত উন্নয়ন ভারতের জন্য একটি ভাল ব্যাপার।"

তিনি আরও মনে করেন, ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতামূলক ব্যবস্থার মধ্যে দুটো বড় নবোদিত বাজারদেশ হিসেবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও ভারতের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা, মানবিক যোগাযোগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রের সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে। দু'দেশের শীর্ষনেতৃবৃন্দ বহুবার বৈঠক করেছেন এবং চীন ও ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের দৃঢ় ভিত্তি সৃষ্টি করেছেন। গেল বছর দু'দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রথমবারের মতো ৮৪০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। (ওয়াং হাইমান/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040