প্রসঙ্গ: চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর
  2018-07-25 11:15:41  cri
গতকাল (মঙ্গলবার) দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী প্রিটোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসা আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী মৈত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন দু'জন শীর্ষনেতা। তাঁরা একমত হন যে, উভয় পক্ষ উচ্চ পর্যায়ের আদান-প্রদান জোরদার করবে, পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা গভীরতর করবে, বাস্তব সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এবং জনগণ পর্যায়ের বিনিময় বাড়াবে। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

এদিন সকালে প্রেসিডেন্টভবনের সামনের মহাচত্বরে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের জন্য জাঁকজমকপূর্ণ সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সম্বর্ধনানুষ্ঠানের পর, দু'জন শীর্ষনেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং তাঁরা যৌথভাবে সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠকের ফলাফল তুলে ধরেন। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবশালী উন্নয়নশীল দেশ ও নবোদিত বাজারদেশ। দু'পক্ষের মধ্যে ইতোমধ্যেই আন্তরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে; পারস্পরিক আস্থা বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট সি বলেন,

"চলতি বছর চীন-দক্ষিণ আফ্রিকা কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ২০তম বার্ষিকী। বিগত ২০ বছরে দু'দেশের সম্পর্ক সুষ্ঠুভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়েছে। চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সম্পর্ক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক থেকে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এবং সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে রূপান্তরিত হয়েছে। এদিকে চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্র নতুন সময়পর্বে প্রবেশ করেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাও নতুন উন্নয়নের পথে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। এ-অবস্থায় চীন-দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কের নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে।"

সি চিন পিং আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট সিরিলের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। নতুন সময়পর্বে দু'দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য অর্জিত হয়েছে। দু'পক্ষকে পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা জোরদার করতে হবে; 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ এবং চীন ও আফ্রিকার সহযোগিতামূলক ফোরামের কাঠামোতে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। এ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট সি বলেন

"প্রভাবশালী, শক্তিশালী, ও উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থানে অনেক মিল রয়েছ। দু'পক্ষের উচিত কৌশলগত সহযোগিতা অব্যাহতভাবে জোরদার করা, বহুপক্ষবাদ সমর্থন করা, বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থা রক্ষা করা, এবং সম্মিলিতভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর যৌথ স্বার্থ রক্ষা করা।"

সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামফোসা বলেন, বিগত ২০ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও চীনের সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আওতা ছাড়িয়েছে। এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত তাত্পর্য রয়েছে। দু'দেশের মধ্যে আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক পর্যায়ে ফলপ্রসূ সহগোগিতাও চলেছে। দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কল্যাণে দু'দেশের জনগণ সত্যিকারভাবে লাভবান হয়েছে ও হচ্ছে। তিনি বলেন,

"জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় চীনকে ধন্যবাদ জানাই আমি। ২০১৯ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্যদেশ হিসেবে দু'বছরের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। জাতিসংঘ ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার আওতায়, বৈশ্বিক সমস্যা মোকাবিলা করতে, চীনের সঙ্গে সহযোগিতা ও যোগাযোগ বজায় রাখবে দক্ষিণ আফ্রিকা।"

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরকালে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় দশম ব্রিক্স শীর্ষসম্মেলনে অংশ নেবেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। প্রেসিডেন্ট সি বলেন, এবারের জোহানেসবার্গ সম্মেলন ব্রিক্সভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে তাত্পর্যবহ। (ওয়াং হাইমান/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040