এ দিন থিয়েনচিন ব্যালে দল 'Swan Lake(Danse des cygnes)', 'La Esmeralda' এবং 'Le Corsaire'সহ বিভিন্ন ক্ল্যাসিকাল ব্যালে নাচ পরিবেশন করে। তা ছাড়া দর্শকরাও 'The Red Detachment of Women', 'A Moonlit Night on the Spring River' ও 'Heart of a Teenage Girl'সহ বিভিন্ন চীনা সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যময় ব্যালে নৃত্যনাটক উপভোগ করেন।
থিয়েনচিন ব্যালে দল ১৯৯২ সালে গঠিত হয়। এ ব্যালে দলটি হলো চীনের পাঁচটি শীর্ষ ব্যালে দলের একটি, এবং এর প্রধান বিষয় হলো ক্লাসিক্যাল ব্যালে এবং আধুনিক চীনা ব্যালে। দেশি-বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক মঞ্চে অনেকবার পুরস্কার পেয়েছে থিয়েনচিন ব্যালে দল।
প্যারিস আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রীয় ফোরামের বার্ষিক সভা ২৬ জুন প্রথমবার প্যারিসের চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অনুষ্ঠিত হয়। ফ্রান্সে ৩০টিরও বেশি দেশের দূতাবাসের সাংস্কৃতিক অফিস এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রায় ৫০জন প্রতিনিধি এতে উপস্থিত ছিলেন।
প্যারিস আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক সেন চুং ওয়েন এক স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ফোরাম বরাবরই বিভিন্ন বৈদেশিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা করে প্যারিসের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক তত্পরতা প্রচার করেছে ও করছে। প্যারিসের চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আশা করে বার্ষিক সভা আয়োজনের মাধ্যমে প্যারিসে বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের যোগাযোগ জোরদার হবে, পারস্পরিক বিনিময় ও সহযোগিতা আরও জোরদার হবে। নাগরিকদের সাংস্কৃতিক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে আরও বেশি বিদেশি বন্ধু এ প্ল্যাটর্ফমের মাধ্যমে প্যারিসে চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
বার্ষিক সভায় বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক কেন্দ্র 'বিদেশি চলচ্চিত্র প্রদর্শনী সপ্তাহ', 'সাহিত্য সন্ধ্যা', 'বৈদেশিক সংস্কৃতি সপ্তাহ' এবং 'সঙ্গীত উত্সব'সহ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে প্রস্তাব ও পরিকল্পনা পেশ করেছে। অনেক গঠনমূলক প্রস্তাব বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সভার পর অংশগ্রহণকারীরা 'পুনর্সৃষ্টি: চীন সিল্ক কারুশিল্প এবং ডিজাইন প্রদর্শনী' উপভোগ করে সিল্ক উৎপাদন প্রযুক্তি এবং চীনেরর সিল্ক সংস্কৃতি ও সৃজনশীল শিল্পের সর্বশেষ অর্জনের অগ্রগতি জানতে পেরেছে। সুইস সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিনিধি মিস ডমিনিক বলেন, প্যারিস চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়ে এত চমত্কার প্রদর্শনী প্রস্তুত করেছে ও দেখিয়েছে। এত সুন্দর, দেদীপ্যমান রেশম দ্রব্য উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই রেশম উন্নয়নের ইতিহাসও জানতে পারি তা ছাড়া চীনা ঐতিহ্যগত নকশা উপাদান এবং এর পেছনে সে উপাদানগুলোর সমৃদ্ধ অর্থ সমঝোতা করেছি। আশা করি ভবিষ্যতে এ ফোরামের মাধ্যমে প্যারিস চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা আরো জোরদার হবে।
বৈদেশিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ফোরামের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ভালটিম বলেছে, প্রাচীনকাল থেকেই প্যারিস একটি সাংস্কৃতিক শহর। আশা করি, বৈদেশিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রীয় ফোরামের বার্ষিক সভা বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের যোগাযোগের সেতুতে পরিণত হবে।
প্যারিসের চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রীয় ফোরামের প্রধান লক্ষ্য হলো বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক অফিস ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর সহযোগিতা মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য উন্নত করা, সাংস্কৃতিক সংলাপ, বিনিময় ও গ্লোবাল টেকসই সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়া। বর্তমানে ফোরামের ৫৩টি সদস্য রাষ্ট্র আছে।
এবারে 'খরগোশের গল্প' সিরিজের তৃতীয় অনুষ্ঠান।
আজকের গল্পের শিরোনাম 'ভালোবাসার সন্দেহ যেখানে শুরু হয়, সেখানেই আছে সমাধান।'
খরগোশ অনেক গাজরের পাই তৈরি করেছে, সে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে, "ভালুককে কিছু পাই দিতে পারি?"
"অবশ্যই"। মা উত্তর দেয়। "কিন্তু, যদি কাউকে পছন্দ করো, তাহলে তাকে সব ভাল জিনিস দিতে চিন্তা করবে না।"
খরগোশ বলে, "কিন্তু, তাকে অনেক পছন্দ করি।"
"তাহলে ভালুক তোমাকে হানি রুটি দিয়েছে?" মা জিজ্ঞাসা করে।
খরগোশ বলে, "আমি যে হানি রুটি খেতে পছন্দ করি না।"
পরের দিনে ছোট্ট গাছের নিচে বসে শিয়ালকে হানি রুটি খেতে দেখে খরগোশ।
"তোমার রুটি নিশ্চয়ই অনেক সুস্বাদু, তাই না?" শিয়ালকে জিজ্ঞেসা করে খরগোশ।
"হ্যাঁ," শিয়াল অনেক খুশি, "ভালুক এ রুটি আমাকে দেয়, তুমি কি খেতে চাও? আমার বাড়িতে আরো আছে।"
খরগোশ তার মাথা নাড়িয়ে চলে যায়।
ভালুক অনেক হানি রুটি তৈরি করেছে। কিন্তু প্রত্যেকবার হানি রুটির মধ্যে সবচেয়ে বড় ও মিষ্টি রুটি উপহার হিসেবে খরগোশকে দেয় ভালুক।
এতে খরগোশ অনেক খুশি, "আমার নিজের রান্না করা রুটি তোমার জন্য।"
ভালুকের হাতের রুটি দেখে খরগোশ বলে, "যে হানি রুটি সব পশুকে দাও, সেই একই সাইজের রুটি আমি চাইনা।"
ভালুকের হানি রুটি নেয় না খরগোশ।
বাড়িতে ফেরার পথে শজারুর সঙ্গে দেখা। তাকে থামায় ভালুক।
শজারু ললিপপ ব্যবসা করে। শজারুর রঙিন ললিপপপূর্ণ কার্টের সামনে এসে, ভালুক তার হানি রুটির বিনিময়ে কিছু রঙিন ললিপপ সংগ্রহ করে।
রঙিন ললিপপ দেখে প্রথমেই খরগোশের কথা মনে পড়ে। তাই ভালুক ললিপপ নিয়ে আবার খরগোশের বাড়িতে ফিরে আসে।
এবারে খরগোশ খুবই খুশি হয়। সে ভালুকের কাছ থেকে ললিপপ নেয়। তারপর খরগোশ বলে, "দু'দিন পর আমাদের বনে একটি নাচের পার্টি আছে, আমরা এক সাথে যাই, কেমন?"
ভালুক মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি দেয়।
এর পরের দিনে, খরগোশ আবার ছোট্ট শিয়ালকে গাছের নিচে বসে রঙিন ললিপপ খেতে দেখে।
কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেসা করে না সে। কিন্তু হঠাত্ খরগোশের হৃদয় দুঃখে পূর্ণ হয়ে যায়!
বাড়িতে ফিরে এসে চিত্কার করে কান্নাকাটি করে খরগোশ। মাকে জিজ্ঞাসা করে, "সে কি আমাকে ভালোবাসে না?"
মা বলেন, "তুমি হানি রুটি খাওয়া পছন্দ করো না, তাই না?"
খরগোশ জেদ করে বলে, "হ্যাঁ, কিন্তু হানি রুটি অন্যদের দিতে পারবে না।"
মা জিজ্ঞাসা করেন, "তুমি তাকে ভালবাসো বলে তাকে দাবি করতে পারো, এটা তোমার ধারণা? তোমার সব গাজর তাকে দাও। এটা তোমার নিজের ইচ্ছা। যদি তুমি তার কাছ থেকে কোন জিনিস বিনিময় হিসেবে চাও, তাহলে প্রথমে তোমার চাওয়ার কথা তাকে বলো, আমি হানি রুটি চাই, আমি রঙিন ললিপপ চাই। তার হানি রুটি গ্রহণ না করে তাকে বলো যে, অন্যদের সেটা দিতে পারবে না। তোমার কি মনে হয়, দাবিটা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে না?"
"কিন্তু," খরগোশ উত্তর বলে, "যাইহোক, প্রেম স্বার্থপর হয়।"
বন্ধুরা, খরগোশ সিরিজের অন্য গল্প শুনবেন আগামী সপ্তাহের সাহিত্য ও সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে।
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/তৌহিদ)