বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের পেশাগত কারিগরি শিক্ষার স্বপ্ন পূরণে বৃত্তি দিচ্ছে চীন
  2018-07-16 15:29:07  cri

 


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন? সুদূর বেইজিং থেকে আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের নিয়মিত সাপ্তাহিক আয়োজন 'বিদ্যাবার্তা' অনুষ্ঠান। আর এ আয়োজনে আপনাদের সঙ্গে রয়েছি সুবর্ণা ও টুটুল।

বন্ধুরা, ৯ জুলাই ২০১৮, চীনের পেশাগত কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক বৃত্তি নিয়ে ঢাকায় বাংলাদেশের টেকনিক্যাল টিচার্স ট্রেইনিং কলেজে এক সম্মেলন আয়োজিত হয়। চীনের ২১টি উচ্চপর্যায়ের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি ৮৪২জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তির সুযোগ প্রদান করে।

আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ সম্মেলনের বিস্তারিত তথ্য এবং চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ছিংহাই প্রদেশের পেশাগত শিক্ষাদান নিয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।

৯ জুলাই সকাল ৮ টার আগেই সম্মেলন কক্ষের বিভিন্ন জায়গায় বৃত্তির সাক্ষাত্কার প্রার্থীদের উপস্থিতি দেখা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাছাই করা ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের সাথে ঢাকায় এসে বৃত্তির সাক্ষাত্কারে অংশ নেয়। ১৮-১৯ বছর বয়সী ছাত্রছাত্রীদের চোখেমুখে দেখা যায় আনন্দের ছায়া। তারা জানায়,

চীনের উচ্চপর্যায়ের পেশাগত প্রশিক্ষণ বৃত্তি প্রকল্পে দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। ২০১৭ সালে চীনের ১০টি উচ্চপর্যায়ের পেশাগত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মোট ৩০৭ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে। চলতি বছর চীনের ৮টি প্রদেশের ২১টি উচ্চপর্যায়ের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ৮৪২ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তির সুযোগ প্রদান করবে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও ৫০ জন পেশাগত প্রশিক্ষণ বিষয়ক বাংলাদেশি শিক্ষকরাও বৃত্তি পাবেন, তাঁরা চীনে মাস্টার্স বা ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভিনন্দন-বার্তা পাঠান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চাং চুও। তিনি বলেন,

'আমরা খুব খুশি যে, বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের নামতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বলা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের পেশাগত কারিগরি প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের সোনালী সময় এবং চীন ও বাংলাদেশের কারিগরি প্রযুক্তি সহযোগিতার চমত্কার সময়। সবাই জানেন, চীনের উত্থাপিত 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। বর্তমানে কয়েকশো চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে পুঁজি বিনিয়োগ করেছে। তাদের চীনা ভাষা জানা ও প্রযুক্তিবিষয়ক দক্ষ ব্যক্তি প্রয়োজন। তা থেকে বোঝা যায়, দু'দেশের পেশাগত প্রশিক্ষণ সহযোগিতার ভবিষ্যত সুউজ্জ্বল'।

সাংবাদিকদের সাক্ষাত্কার দেওয়ার সময় বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব জনাব মোঃ আলমগীর বলেন, পেশাগত প্রযুক্তির প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে। চীন ও বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য বিরাট। এখানকার শিক্ষাভবন অনেক পুরনো, চীনের প্রতিষ্ঠানের ভবন অনেক আধুনিক। বাংলাদেশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কোর্স ও অভিজ্ঞতা একটু দুর্বল, চীনা শিক্ষকদের ব্যাপক প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। চলমান পেশাগত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা তুলনা করলে দেখা যায়, ‌বাংলাদেশে শিক্ষকদের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের কোর্স স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া, বিভিন্ন পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতিও যথেষ্ট নয়, তাই ছাত্রছাত্রীরা শুধু তত্ত্ব বোঝে, তবে অনুশীলনের অভিজ্ঞতা খুবই কম। চীন পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণে অনুশীলনের ওপর গুরুত্ব দেয়, তারা ২০ শতাংশ তত্ত্ব ও ৮০ শতাংশ প্রযুক্তির অনুশীলন করে। তবে বাংলাদেশে উল্টো বলা যায়, তত্ত্ব ৯০ শতাংশ ও প্রযুক্তি মাত্র ১০ শতাংশ।

কারিগরি প্রশিক্ষণের মান উন্নত করার জন্য বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কারিগরি শিক্ষাদান বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের কারিগরি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব অশোক কুমার বিশ্বাস চীন-বাংলাদেশ কারিগরি প্রশিক্ষণের সহযোগিতা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,

'চলতি বছর বাংলাদেশে আসা চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ২০১৭ সালেও বাংলাদেশ সফর করেন। যেমন চীনের চিয়াংসু প্রদেশের কৃষি পশুপালনবিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গত বছর ৭৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে ভর্তি করে। বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানটিতে বিশ্বের ২১টি দেশের শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তারা চীনে তিন বছরের মতো লেখাপড়া করবেন, প্রথম পর্যায়ে তারা চীনা ভাষা শিখবেন। তারপর থেকে তাদের কারিগরি কোর্স শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য লেখাপড়া ও থাকার ফি প্রদান করে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা শুধু নিজের বিমান টিকিট, শারীরিক পরীক্ষা, ভিসা ও চীনে খাওয়ার খরচ বহন করে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জন করা শিক্ষার্থীরা বিশেষ বৃত্তিও পাবেন। চীনের জীবনযাপনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটি নানান প্রস্তুতি নিয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময় কেন্দ্রের উপ-পরিচালক চাং হুং হুং বলেন,

'বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাছাইকরা এসব শিক্ষার্থীর মান অনেক ভালো। তাদের ব্যক্তিগত মান, শৃঙ্খলার অভ্যাস বেশ চমত্কার। তাদের জন্য 'দু'জন এক রুমে' এমন হোস্টেল রুম বরাদ্দ করেছি, পাবলিক রান্নাঘর আছে এবং হালাল খাবারও পাওয়া যায়। তাদের দেখাশোনায় বিশেষ শিক্ষকও নিযুক্ত করেছি। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার দক্ষতা ভিন্ন, তাদের বিস্তারিত অবস্থা বিবেচনা করে বিভিন্ন ক্লাসে ভাগ করা হয়েছে। তারপর তাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হবে।'

চীনের পেশাগত কারিগরি প্রযুক্ত প্রশিক্ষণের বৃত্তির ওপর অতি গুরুত্ব দেয় বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের চীনে লেখাপড়া শুরু হওয়ার পর তাদের সাথেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখে এবং তাদের জীবনযাপনের ওপর মনোযোগ দেয়। বাংলাদেশের টেকনিক্যাল টিচার্স ট্রেইনিং কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো: জাহাঙ্গীর আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইচ্যাটে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করেন এবং বিশেষ একটি গ্রুপ স্থাপন করেন। প্রতি সপ্তাহে তিনি শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেন এবং কোনো সমস্যা থাকলে সবাই একসাথে সহযোগিতার মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। তিনি বলেন,

'গত বছরের এ অভিজ্ঞতার কারণে চলতি বছর শিক্ষার্থীদের ভর্তির কাজের প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবে করতে পারছি। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য সাক্ষাত্কারের ক্লাসরুম স্থাপিত হয়েছে এবং প্রতিটি ক্লাসে বাংলাদেশি শিক্ষক সহায়তা দেন। সম্মেলনের শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য ৮০ জন স্কাউটও সেবা কাজ অংশ নেয়'।

চীনের হারবিন প্রকল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোঃ মাহতাব হোসেইন প্রতিষ্ঠানের পরিচয় সভায় বক্তৃতা দেন। ২০১৪ সালে তিনি ছাংছুন নর্ম্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের মতো চীনা ভাষা শেখেন এবং দ্বিতীয় বছর হারবিন প্রকল্প বিশ্ববিদ্যালয়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অটোমেশনে লেখাপড়া করেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমিতির প্রতিনিধি, তিনি সক্রিয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য দেওয়ার সাথে সাথে তিনি চীনা দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদেরও সহায়তা দেন। তিনি বলেন,

'সম্মেলন সাফল্যের সাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে, বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশেষ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ চীনা দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণে চীনের সাহায্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ভবিষ্যতে আরো বেশি বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী চীনে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি'।

চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ছিংহাই প্রদেশের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ

চীনের পশ্চিমাঞ্চলের ছিংহাই প্রদেশের রাজধানী সিনিংতে ২১ হেক্টর জমিতে একটি পেশাগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। বহু বছর ধরে চিকিত্সা, ওষুধ ও ঐতিহ্যিক হস্তশিল্প খাতের বহু কর্মীদের এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং স্থানীয় অঞ্চলের সংখ্যালঘু জাতির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার ও সামাজিক উন্নয়নে ব্যক্তি সরবরাহ করছে। বর্তমানে ছিংহাই প্রদেশে মোট ৩২টি পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ।

৩৬ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হুয়াংচোং পেশাগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সিনিং শহরের দুওবা নতুন এলাকায় অবস্থিত। এই স্থানটিকে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের দক্ষ পেশাগত কর্মীদের প্রশিক্ষণের শৈশবাবস্থা বলা যায়। বর্তমানে এখানে চিকিত্সা, ওষুধ, জ্বালানি-সম্পদ ও সবুজ জ্বালানি-সম্পদসহ ১২ ধরনের ২৬টি বিষয় চালু হয়েছে। এর মধ্যে নার্সিং, ঐতিহ্যিক হস্তশিল্পসহ ছয়টি বিষয় অতি গুরুত্বপূর্ণ ও শ্রেষ্ঠ। এখানে ১৪০টি পেশাগত পরীক্ষাগার ও ১৬৯টি অনুশীলন ঘাঁটি স্থাপিত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়ের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কোর্স স্থাপন ও প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ সম্পর্কে ঐতিহ্যিক চীনা চিকিত্সা বিভাগের শিক্ষক ম্যাডাম চুং কুয়াং ইং বলেন,

'প্রথম শ্রেণীতে কিছু কোর্স আছে যেখানে চীনা ঐতিহ্যিক চিকিত্সাবিষয়ক মৌলিক তত্ত্ব পড়ানো হয়, দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে মৌলিক অনুশীলন দক্ষতার কোর্স পড়ানো হয় এবং তৃতীয় শ্রেণীতে হাসপাতালে অনুশীলনে অংশ নিতে হয়। তিন বছরের লেখাপড়ার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা কর্মসংস্থানে যোগ দিতে পারে বা এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সে লেখাপড়া করতে পারে।'

ছিংহাই প্রদেশ চীনের বহু জাতির বসবাস এলাকার অন্যতম। এখানে তিব্বতি, হুই ও থু জাতির লোকসংখ্যা মোট লোকসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। তাংকার ছবি আঁকা, তিব্বতি উদ্ভিদ ওষুধ, থু জাতির সূচিকর্ম স্থানীয় অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যময় সংস্কৃতি ও হস্তশিল্প। এমন ঐতিহ্যিক হস্তশিল্প কোর্স এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্যময় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা তিন বছর লেখাপড়ার মাধ্যমে স্বাধীনভাবে বিভিন্ন হস্তশিল্পকর্ম ডিজাইন ও তৈরি করতে পুরোপুরি দক্ষ হয়ে ওঠে।

এ প্রতিষ্ঠানের উপ-প্রধান উ ইয়োং তে বলেন, এখানে বিষয় স্থাপন, প্রশিক্ষণ কোর্স ও বাস্তব অনুশীলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মোটামুটি ধারণা তৈরি হয়। একে ছিংহাই প্রদেশের পেশাগত শিক্ষাদান উন্নয়নের সংক্ষিপ্তসার বলা যায়। তিনি বলেন,

'আমাদের প্রতিষ্ঠান হুয়াংচোং জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা-সম্পদ, অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করেছে, যাতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম ও পরিবেশ তৈরি করা যায়। আমাদের প্রতিষ্ঠানের স্নাতক ও কর্মসংস্থানের হার উভয়ই ৯৮ শতাংশেরও বেশি।'

হুয়াংচোং পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিজস্বভাবে উন্নয়ন করার সাথে সাথে শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করে প্রশিক্ষণের মান উন্নীত করে। ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স সহায়তা শিক্ষা গ্রুপের প্রতিনিধি তিং ছাও ফান বলেন,

'ছাত্রছাত্রীদের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ ও পর্যালোচনাব্যবস্থা গড়ে তোলা উচিত। যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজের আগ্রহে লেখাপড়া করে এবং সক্রিয়ভাবে নিজের মেধা দিয়ে অবদান রাখে।'

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছিংহাই প্রদেশের পেশাগত প্রশিক্ষণ বিভাগ দক্ষ প্রযুক্তি ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেয়। ছিংহাই যোগাযোগ পেশাগত প্রযুক্তি একাডেমি এবং ৭টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ ক্লাস চালু হয়েছে, যাতে 'যৌথভাবে ব্যক্তি প্রশিক্ষণ, প্রশাসন, দক্ষ ব্যক্তিদের বিনিময় ও প্রশিক্ষণের দায়িত্ব বহন' করার পদ্ধতি সৃষ্টি করা যায়। এ সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানের উপ-প্রধান হুয়াং পিং বলেন, এখানে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও উচ্চমানের বিষয় উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও স্কুলের সহযোগিতা স্কুলের উন্নয়নে কার্যকর সমর্থন দেয়। তিনি বলেন,

'ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় শ্রেষ্ঠ বিষয়ের উচ্চপর্যায়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করার উদ্দেশ্যে স্কুলে আধুনিক প্রশাসন, গুণগতমানসম্পন্ন শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও উচ্চমানের বিষয় স্থাপন করা হবে, যাতে ব্যাপক স্বীকৃতি ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের শ্রেষ্ঠ স্কুল গড়ে তোলা যায়।'

গত ৪০ বছরে ছিংহাই পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা দিন দিন উন্নত হয়েছে, স্কুলের পরিবেশ ধাপে ধাপে সুন্দর হয়েছে, প্রশিক্ষণ ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাহিদার সংমিশ্রণও গভীরতর হয়েছে, উন্নত হয়েছে প্রশিক্ষণের মান। এ সম্পর্কে ছিংহাই প্রদেশের শিক্ষা বিভাগের উপ-প্রধান চি তে কাং বলেন,

'১৯৭৮ সালে আমাদের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের লোকসংখ্যা ১০ হাজারেরও কম ছিলো। ২০১৭ সালে বিভিন্ন স্কুলে পেশাগত শিক্ষাদান গ্রহণের লোকসংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ, যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ভবিষ্যতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাথে আরো ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালু করা হবে, প্রয়োজনীয় শিল্পে প্রয়োজনীয় দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় অঞ্চলের পেশাগত প্রযুক্তি প্রশিক্ষণের মান আরো উন্নত করা যায়।'

সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, সময় দ্রুত চলে যায়, আমাদের আজকের অনুষ্ঠানও তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে এলো। আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনো মতামত থাকলে আমাদের চিঠি লিখতে ভুলবেন না।

আমাদের যোগাযোগ ঠিকানা ben@cri.com.cn, caoyanhua@cri.com.cn, আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা bengali.cri.cn, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট cribangla

তাহলে এবার বিদায় নিচ্ছি, সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে একই দিনে একই সময়ে আবারো কথা হবে। যাইচিয়ান। (সুবর্ণা/টুটুল)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040