দৌড়ানোর সময় হাঁটুর প্রতি খেয়াল রাখুন; মেনে চলুন বিশেষজ্ঞদের ৭টি পরামর্শ
  2018-08-11 19:00:35  cri

আপনারা কোন ধরনের শরীরচর্চা বেশি পছন্দ করেন? হ্যাঁ, অনেকেই বলবেন যে, দৌড়ানো বা জগিং। কিন্তু, অনেকে আবার চিন্তা করেন যে, এই ব্যায়াম হাঁটুর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হাঁটুর ক্ষতি হতে পারে—এই আশঙ্কায় বা অজুহাতে অনেকেই দৌড়ান না বা জগিং করেন না। আসলে সাবধানতা অবলম্বন না-করলে যে-কোনো শরীরচর্চার নেতিবাচক ফল হতে পারে। দৌড়ানো বা জগিংও ব্যতিক্রম নয়। দৌড়ানোর সময় বিশেষজ্ঞদের ৭টি পরামর্শ মাথায় রাখলে এবং সে অনুসারে কাজ করলে আশা করা যায় যে, আপনার হাঁটু সুরক্ষিত থাকবে। আজকের 'জীবন যেমন' অনুষ্ঠানে আমরা এ বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

হাঁটু সম্পর্কে একটা কথা প্রচলিত আছে, আর সেটি হচ্ছে: 'হাঁটুর ক্ষতি হয় দৌড়ালে এবং হাঁটুতে ব্যথা হয় পর্বত আরোহণে'। আসলে এই কথাটা ঠিক নয়। এটি শুধু ব্যায়াম না-করার জন্য একটি অজুহাত মাত্র। যাক, আসুন আমরা অজুহাত বাদ দিয়ে জেনে নিই ৭টি পরামর্শ।

পরামর্শ ১. আস্তে আস্তে দৌড়ান

একটা বিষয় মনে রাখবেন যে, শরীরচর্চা যত কঠিন হবে, অস্থিসন্ধির উপর ততই বেশি চাপ পড়বে। সুতরাং, ব্যায়াম করার সময় অস্থিসন্ধির কথা মাথায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত গতি ও ব্যায়ামের পরিমান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন দৌড়াবেন, তখন আস্তে আস্তে দৌড়াবেন; এমনভাবে দৌড়াবেন যেন দৌড়াতে দৌড়াতে অন্যের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। দৌড়ের গতি ঠিক থাকলে এবং পর্যাপ্ত পরিমানে দৌড়ালে আপনার হাঁটুর ওপর না-হক চাপ পড়বে না।

পরামর্শ ২. দৌড়ানোর সময় ও দূরত্ব বেশি না-হওয়া

দৌড়ানোর মোট সময় ও দূরত্ব অতিরিক্ত হওয়া উচিত নয়। সময় সাধারণত থাকবে আধা ঘন্টা ও এক ঘন্টার মধ্যে। আর দূরত্ব কতটুকু থাকবে তা নির্ভর করে আপনার শরীরের ওপর। যেমন আপনি ৫ কিলোমিটার দৌড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় যদি আপনার শরীরে অল্প ক্লান্তি অনুভূত হয়, তাহলে এই দূরত্ব আপনার শরীরের জন্য ঠিক আছে। যদি দৌড়ানোর পর আপনার খাদ্যগ্রহণে অনিহা সৃষ্টি হয়, তবে বুঝতে হবে যে আপনি অতিরিক্ত দৌড়েছেন।

পরামর্শ ৩. দৌড়ানোর সময় শরীরের ভঙ্গি ঠিক রাখতে হবে

সঠিক পদ্ধতিতে দৌড়ানো উচিত। দৌড়ানোর সময় পা ও মাটির মধ্যে বেশি ব্যবধান রাখবেন না এবং ছোট ছোট স্টেপে দৌড়াবেন। পা ও মাটির মধ্যে ব্যবধান যত কম ততই ভাল। এতে আপনার হাঁটুর উপর কম চাপ পড়বে।

পরামর্শ ৪. প্রতিদিন দৌঁড়ানো ভাল না

অনেকেই প্রতিদিন দৌঁড়ান। এটা ঠিক নয়। সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ বার দৌড়ানো যথেষ্ট। শরীরচর্চার জন্য অন্য কিছু ব্যায়ামও বাছাই করতে পারেন আপনি। যেমন সাঁতার, সাইক্লিং।

পরামর্শ ৫. ব্যায়ামের আগে শরীরটাকে একটু গরম করে নিন

যে কোন শরীরচর্চার আগে, পর্যাপ্ত প্রস্তুতিমূলক কাজ করা উচিত। প্রস্তুতিমূলক কাজ বলতে আসলে সহজ বাংলায় বোঝায় শরীর গরম করে নেওয়া। দৌড়ানোর ক্ষেত্রেও কথাটা প্রযোজ্য। অনেকেই জামা-জুতা পেই দৌড়াতে শুরু করেন। এটা ঠিক নয়। দৌড়ানোর আগে ও পরে হালকা ফ্রি-হ্যান্ড শরীরচর্চা করুন; স্ট্রেচিং করুন। আবার এমনভাবে স্ট্রেচিং করবেন না যে শরীরের মাংসপেশীতে টান পড়ে। মিনিট ১৫ হালকা শরীরচর্চা যথেষ্ট। এর পর দৌড়ানো শুরু করুন।

পরামর্শ ৬. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

আমরা জানি, শরীরের অধিকাংশ ওজন বহন করে হাঁটু। সুতরাং, ওজন বেশি হলে, হাঁটুর উপর চাপও বেশি হয়। ওজন বেশি হলে, শরীরচর্চা না-করলেও হাঁটুর উপর চাপ সর্বদা থাকবে। হাঁটুর অস্থিসন্ধি রক্ষার জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

পরামর্শ ৭. হাঁটু রক্ষায় অন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করুন

শীতে হাঁটু রক্ষায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রতিদিন ঘুমের আগে হাঁটু মাসাজ করুন।

(ওয়াং হাইমান/আলিম)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040