বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দশম বার্ষিকী জার্মানীতে উদযাপিত
  2018-05-22 14:49:20  cri

১১ মে ইয়ুন নান সাংস্কৃতিক সপ্তাহ, অর্থাত্ বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দশম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠান জার্মানীতে শুরু হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় ২'শজনেরও বেশী চীনা ও জার্মান অতিথি উদযাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

জার্মানীতে চীনের রাষ্ট্রদূত শি মিন দে অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে বলেন, গত কয়েক বছরে বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বৈচিত্র্যপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে। এর মধ্যে কিছু কিছু বিভিন্ন জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্রান্ডে পরিণত হয়েছে, যেমন 'শুভ বসন্ত উত্সব', ইউরোপীয় ওয়েইছি দাবা প্রতিযোগিতা, ছোট থিয়েটার ড্রামা সপ্তাহ, জার্মান চীনা লোক শিল্প সপ্তাহ এবং শিশু নাটক সপ্তাহসহ নানা অনুষ্ঠান। প্রতি বছরের অনুষ্ঠান অনেক জার্মান বন্ধু আকর্ষণ করেছে।

রাষ্ট্রদূত শি বলেন,

"বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর গত ১০ বছর ধরে, বরাবরই চেষ্টা করে জার্মানী নাগরিকদের কাছে চীনের সংস্কৃতি, শিল্প, শিক্ষা ও সমাজসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়ন অবস্থা ও সাফল্য ব্যাপকভাবে প্রদর্শন করে আসছে। হাজারটিরও বেশী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আয়োজন করে। চীন-জার্মানী বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিনিময় ও সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দু'দেশের জনগণের পাস্পরিক সমঝোতা ও মৈত্রী গভীর করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।"

বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক ছেন চিয়েন ইয়াং মনে করেন, দু'দেশের সরকার, জার্মানীতে চীনের দূতাবাস, বিদেশে ছাত্র-ছাত্রী এবং জার্মান সমাজের বিভিন্ন মহলের ব্যক্তিদের সমর্থন ও সহায়তা না পেলে গত দশ বছরে কেন্দ্রটি এত স্থিতিশীল উন্নয়ন লাভ করতে পারত না। তিনি বলেন,

"বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হলো জার্মান জনগণকে চীনা সংস্কৃতি ও আধুনিক চীনের উন্নয়ন জানানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ জানালা, একটি মৈত্রীর সেতু। দু'দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য নতুন শক্তি যোগান দেয়।"

জার্মানীর পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি জ্যাকব তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের মে মাসে চীন-জার্মান উচ্চ পর্যায়ের সাংস্কৃতিক বিনিময় সংলাপ ব্যবস্থার প্রথম সম্মেলনে সাংস্কৃতিক বিনিময়ে আরো গভীর সহযোগিতা বিষয়ক একটি যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে রয়েছে শিক্ষা, ভাষণ প্রশিক্ষণ, মিডিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতা প্রকল্প।

তিনি আরো বলেন,

"আজ সন্ধ্যা ও আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে চীনের ইয়ুন নান প্রদেশের বৈশিষ্ট্যময় মোহিনীশক্তি প্রদর্শিত হবে। ইয়ুন নান প্রদেশে বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং বর্ণিল জাতিগত সংস্কৃতি থাকলেও অধিকাংশ জার্মান নাগরিকের কাছে এ প্রদেশের অল্প তথ্যই জানা। এমনকি কোন কোন জার্মান 'ইয়ুন নান' এর নামও কখনো শুনেনি। কিন্তু সৌভাগ্য যে, বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আছে। আমি বিশ্বাস করি কেন্দ্রটির প্রচেষ্টার মাধ্যমে সুযোগ পেলে চীনের বিভিন্ন প্রদেশ জার্মানীতে নিজেদের সংস্কৃতি প্রদর্শন করতে পারবে।"

বন্ধুরা, বার্লিনে চীনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দশম বার্ষিকী জার্মানীতে উদযাপিত শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানেই শেষ। এবারে শুনুন কয়েকটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক খবর।

১, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর "এক সাথে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া" শিরোনামের ভাষণ প্রকাশের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রথম রেশম পথ দান হুয়াং আন্তর্জাতিক হাঁটা উৎসব ১৫ মে প্রাচীন রেশম পথের গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল এবং চার সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার মিলিত অঞ্চল---তুনহুয়াং-এ জমকালো উদ্বোধন হয়েছে। দেশি-বিদেশী বিভিন্ন মহলের অতিথি ও হাঁটা উত্সবে অশগ্রহণকারীসহ ১ হাজার ৫'শরও বেশী মানুষ এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।

রেশম পথ দান হুয়াং আন্তর্জাতিক হাঁটা উৎসব আয়োজনের একদিন আগে 'চীনা পর্যটন দিবস' শুরু হয়েছে। এবারের হাঁটা উত্সবের লক্ষ্য হলো 'এক অঞ্চল, এক পথ' সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানো, ক্রীড়া পর্যটন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গভীর করা। এবার হাঁটা উত্সবও তৃতীয় রেশম পথ দান হুয়াং আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক মেলার ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাঁটা উৎসবের সাংঠনিক কমিটি 'শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে সুন্দর হাটা রুট' সিটি-পুরস্কার এবং 'শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে সুন্দর হাঁটা শহর' পুরস্কার বিতরণ করেছে। এতে দান হুয়াং শহরটির 'রেশম পথ' এবং সান সি প্রদেশের হান চুং শহরের সি সিয়াং জেলা 'শীর্ষ ১০টি সবচেয়ে সুন্দর হাঁটা শহর' পুরস্কার লাভ করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর 'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর 'স্পোর্টস ট্যুরিজম অ্যান্ড হিউম্যানিটিস এক্সচেঞ্জ সামিট ফোরাম', 'ক্রীড়া পর্যটন এবং ভাল জীবন' এবং 'রেশম পথ আত্মা এবং উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন ফোরাম আয়োজিত হয়।

বন্ধুরা, এবারে শুনুন ইউএন এসক্যাপ'র নির্বাহী চেয়ারম্যানের 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের উচ্চ মূল্যায়ন শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।

জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন-ইউএন-এসকাপ'র ৭৪তম বার্ষিক সম্মেলন ১৪ মে থাইল্যান্ডের রাজধানী বাংককে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসকাপের নির্বাহী চেয়ারম্যান শামসহাদ আখতার তাঁর বক্তৃতায় 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের সারা বিশ্ব ও আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাত্পর্যের উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠছে। এর ফলে বিশ্বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এটি বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিভিন্ন দেশের উচিত যৌথভাবে চ্যালেন্ঞ্জ মোকাবিলা করা।

তিনি মনে করেন, আঞ্চলিক অর্থনীতির একীকরণ হল এ অঞ্চল উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা। চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং'র উদ্যোগে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ আঞ্চলিক অর্থনীতির একীকরণ ত্বরান্বিত ও যোগাযোগ জোরদারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

(জিনিয়া/মহসীন)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040