ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র আরো শাস্তি আরোপ করবে
  2018-05-22 14:34:24  cri
মে ২২: প্রিয় শ্রোতা বন্ধুরা, স্থানীয় সময় গতকাল (সোমবার) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যুক্তরাষ্ট্রের থিংকট্যাংক 'ঐতিহ্য তহবিলে' বক্তৃতা দিয়েছেন। বক্তৃতায় তিনি ইরানের পরমাণু সমস্যা বিষয়ক সার্বিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয়ার পর সেদেশের ইরান নীতি ব্যাখ্যা করেছেন। পম্পেও বলেন, ইরান যদি বর্তমানের পথ পরিবর্তন না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে 'সবচেয়ে কঠোর শাস্তি' ভোগ করবে।

এদিনের বক্তৃতায় পম্পেও প্রথমে ওবামা সরকারের নেতৃত্বে স্বাক্ষরিত 'যৌথ সার্বিক কর্মকান্ড পরিকল্পনা' অর্থাত্ ইরানের পরমাণু চুক্তির নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না এবং এতে ইরানের পুনরায় পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নের ঝুঁকিও আছে। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে নেয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র প্রথমে পুনরায় ইরানের ওপর অর্থনৈতিক শাস্তি আরোপ করবে, এবং এই শাস্তি আরো কঠোর হতে পারে। তিনি বলেন:

প্রথমে আমরা ইরানের ওপর অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক চাপ আরোপ করবো। এই বিষয়ে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবো। ইরানের নেতাদের এতে সন্দেহ করার কোন কারন নেই। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের কর্মীদের কাজের ধন্যবাদ জানান তিনি। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক শাস্তি পুনরায় কার্যকর হবে। আরো নতুন শাস্তি অপেক্ষমান।

অর্থনৈতিক শাস্তি ছাড়াও, পম্পেও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে সার্বিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। পম্পেও হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরান আর নিজের খেয়াল খুশি মত কাজ করতে পারবে না। যদি ইরান পুনরায় পরমাণু অস্ত্র প্রকল্প চালু করে, তাহলে অভূতপূর্ব ব্যবস্থার সম্মুখীন হবে।

ভবিষ্যতে ইরানের পরমাণু সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবে সম্বন্ধে পম্পেও বলেন, বর্তমানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা করবে না যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে পারে। তিনি বলেন:

যে কোনো নতুন চুক্তির উদ্দেশ্যই ইরানের স্থায়ীভাবে পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন না করা নিশ্চিত করা। আমরা আগের কয়েক মেয়াদের সরকারের ভুলের পুনরাবৃত্তি করবো না। আমরা পুনরায় বর্তমান পরমাণু চুক্তি নিয়েও আলোচনা করবো না। গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম প্রমাণ করেছে যে, ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়নের ইচ্ছা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে নেয়ায় তার মিত্ররা অন্তোষ প্রকাশ করেছে। তা সত্ত্বেও পম্পেও বক্তৃতায় মিত্র পক্ষকে বলেন, ইরান সম্পর্কিত নীতিতে ইইউ'র উচিত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একই লক্ষ্য নির্ধারণ করা। তিনি ইইউকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানকে নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন:

আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে যদি ইরানের ওপর আরো বেশি শাস্তি আরোপ করা হয়, তা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের জন্য অর্থনৈতিক কঠোরতা সৃষ্টি করবে। হ্যাঁ, এসব শাস্তি ও চাপ যুক্তরাষ্ট্রের নিজের ওপরও চাপ সৃষ্টি করবে। তবে যদি কেউ ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ ঘোষিত কোন ব্যবসায় নিজেদের যুক্ত করে, যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চয়ই রাজি হবে না।

এবারের বক্তৃতা পম্পেও'র পররাষ্ট্র মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও বড় কূটনৈতিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা ব্যাখ্যা প্রদান।

(শুয়েই/মহসীন)

© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040