সম্মেলনে চীন, ভারত, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান - এ ৮টি সদস্যরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের মধ্যে 'শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যরাষ্ট্রের আন্তঃসরকার সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তির নির্বাহী পরিকল্পনা ২০১৮-২০২০' স্বাক্ষরিত হয়।
এ পরিকল্পনা স্বাক্ষরের তাত্পর্য নিয়ে চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগের মন্ত্রী লুও সু কাং বলেন, "বার্ষিক নির্বাহী পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো আমাদের প্রতিটি সাংস্কৃতিক প্রকল্প কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। এছাড়া, নির্বাহী পরিকল্পনায় আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের তালিকা এবং স্পষ্টভাবে করণীয় কাজ শেষ করার সময়সূচি অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে আমাদের প্রতি বারের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতার বিভিন্ন কাজ কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয়।"
চলতি বছর সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে ভারত প্রথম বারের মত শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীদের সাক্ষাতে অংশ নেয়। ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পদ্ম লোচন সাহু বলেন, "সংস্কৃতি দেশের বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ বিন্দু। সীমা থাকলেও ভিন্ন দেশ, ভিন্ন জাতি ও জনগণের মধ্যে যদি কোনো বিষয় একটি বিনিময়ের জানালা খুলে দিতে পারে, তা হলো সংস্কৃতি। সেজন্য দু'পক্ষের মধ্যে কোনো অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, শিক্ষা বা অন্য মহলের বিনিময় বা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার আগেই, তাদের উচিত সাংস্কৃতিক বিনিময় ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা।"
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে সঙ্গীত-নৃত্য নাটক, অর্কেস্ট্রাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিনিময় হচ্ছে। রাশিয়ার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রথম উপ-মন্ত্রী ভ্লাদিমির অ্যারিস্টারহোভ জানান, ভবিষ্যতে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতায় আরো আধুনিক পদ্ধতি যুক্ত হবে। তিনি বলেন, "আজ সমাজের সাংস্কৃতিক প্রচার পদ্ধতি প্রধানত ইন্টারনেট ও অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে। যেমন আমরা থ্রি-ডি প্রযুক্তির মাধ্যমে রাশিয়ার সংস্কৃতি এবং আর্ট মিউজিয়াম চীনা দর্শকদের কাছে প্রদর্শন করি।"
চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন বিভাগের মন্ত্রী লুও সু কাং জানান, চীন বরাবরই পারস্পরিক সম্মান ও উভয়ের কল্যাণকর নীতি মেনে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা আরো গভীর করার চেষ্টা করছে, জনগণের পারস্পরিক সমঝোতা ও মৈত্রী এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার ভবিষ্যতের সাংস্কৃতিক সহযোগিতা নিয়ে মন্ত্রী লুও তিনটি গঠনমূলক প্রস্তাব পেশ করেন। তিনি বলেন, "প্রথমে আমাদের উচিত সদস্যরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ করে 'শাংহাই স্পিরিট'-এর জনমত ভিত্তি আরো দৃঢ় করা। তাছাড়া বহুসাংস্কৃতিক যোগাযোগ পদ্ধতি নবায়ন ও উদ্ভাবন করা। বেশি বেশি সাংস্কৃতিক বিনিময় করা, আরো বেশি নতুন সহযোগিতার পদ্ধতি সৃষ্টি করা, ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত সাংস্কৃতিক ব্র্যান্ড আরো শক্তিশালী করা। সর্বশেষ একটি ব্যাপার হলো, আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক সংস্থা ও ব্যক্তিদের ইতিবাচকভাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রকল্পে অংশ নিতে উত্সাহিত করা, যাতে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সহযোগিতা জনগণের মধ্যে সত্যিই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে।" (জিনিয়া/টুটুল/লিলি)