0520sh
|
তবে সব শিশু তো আর উপহার চায় না! আবার কোনো কোনো সন্তান হয়তো এমন কিছু চেয়ে বসল, যা কিনে দেবার সামর্থ্য বাবা-মার নেই। আবার এমনও হয় যে, সন্তান এমন জিনিস চাইল, যা বাবা-মা সন্তানের কল্যাণের কথা ভেবেই কিনে দিতে রাজি নন। সেক্ষেত্রে কী উপহার কিনবেন সন্তানের জন্য?
হ্যা, উপহার কেনার সময় সন্তানের বয়স বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনো কোনো বাবা-মা সন্তানকে এমন উপহার কিনে দিতে চান, যা তাদের তাত্ক্ষণিকভাবে কাজে লাগবে, যেমন: বই, ব্যাকপ্যাক, জুতা, কাপড় ইত্যাদি। আসুন আমরা আজকের 'জীবন যেমন' আসরে বিষয়টা নিয়ে একটু বিস্তারিত আলোচনা করি।
১. সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রন্থ
৭ বছর বয়স পর্যন্ত সময়টা শিশুদের বুদ্ধি পাকা হবার সময়। এই সময়পর্বে যদি বাবা-মা সন্তানকে সঠিক নির্দেশনা দিতে পারেন, তাহলে সন্তানের ভাষা, পরিকল্পনা-শক্তি ও স্মৃতিশক্তির ব্যাপক উন্নতি ঘটতে পারে। চীনে শিশুবিষয়ক শিক্ষাবিদ ছেন হ্য ছিন বলেছেন, 'জন্মগ্রহণের পর থেকে ৭ বছর বয়স পর্যন্ত সময়পর্ব একটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর অভ্যাস, ভাষা, দক্ষতা, চিন্তা-ভাবনা, মনোভাব ও মেজাজসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের জন্য এ-সময়পর্বে ভিত্তি সৃষ্টি হয়। এই সময়টা ঠিকভাবে কাজে লাগলে সারা জীবনের জন্য তা হয় কল্যাণকর।'
এই সময়পর্বে শিশুরা প্রচুর প্রশ্ন করে; এটা-সেটা জানতে চায়। বাবা-মা'র উচিত শিশুদের সেই জানার আগ্রহ মেটানোর ব্যবস্থা করা। বই হতে পারে শিশুদের জ্ঞানের তৃষ্ণা মেটানোর গুরুত্বপূর্ণ উত্স। সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় গ্রন্থ তাদের বুদ্ধি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। বয়সের সঙ্গে মানানসই বই সন্তানকে উপহার হিসেবে দিতে পারেন। স্কুলে যারা লেখাপড়া করছে, তাদের প্রয়োজনীয় গ্রন্থগুলোতে এমনিতেই কিনে দিতে হয়। আর সকল বিষয় কিন্তু শ্রেণীকক্ষে শেখানো হয় না। অনেক জিনিস শিশুরা পাঠ্যপুস্তকের বাইরের বই পড়ে শেখে। এ-ধরনের বই শিশুদের কিনে দেওয়া যেতে পারে। আসন্ন শিশু দিবসে এ-ধরনের এক বা একাধিক বই সন্তানকে কিনে দেওয়ার পরিকল্পনা এখনই নিয়ে নিতে পারেন।
২. ভালো স্কুলব্যাগ
আজকাল ৩ বছর বয়স থেকেই বাচ্চারা কিন্ডারগার্টেনে যাওয়া শুরু করে। যদিও কিন্ডারগার্টেনে মূলত শিশুরা খেলাধুলাই করে, তবুও তাদের প্রায় সবার কাঁধেই একটা করে স্কুলব্যাগ দেখা যায়। হয়তো স্কুলব্যাগে একটা-দুটো বই থাকে, থাকে খাবার ও পানি। অনেকেই আছেন যেনতেন একটা ব্যাগ কিনে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, শিশুদের মেরুদণ্ড স্বাভাবিকভাবেই হয় খুব নাজুক। আর মেরুদণ্ডের গুরুত্ব সম্পর্কে তো আমরা সবাই কমবেশি জানি। শিশুদের এমন ব্যাগ কিনে দেওয়া উচিত, যা তাদের মেরুদণ্ডে না-হক চাপ সৃষ্টি করবে না। এ-ধরনের ব্যাগের দাম হয়তো একটু বেশি হবে, কিন্তু তা আপনার শিশুর মেরুদণ্ডের চেয়ে বেশি মূল্যবান অবশ্যই নয়। শিশু দিবসে একটা ভালো স্কুলব্যাগ হতে পারে আপনার শিশুর জন্য চমত্কার একটি উপহার।
৩. ভাল জুতা
ছোটবেলায় শিশু কী ধরনের জুতা পড়ছে, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে তার পায়ের ভবিষ্যত গড়ন। পায়ের পাতার গড়ন সুন্দর ও যথাযথ হওয়া জরুরি। তাই শিশুদের ভালো মানের জুতা কিনে দেওয়া উচিত। বাজারে বিভিন্ন বয়সের শিশুদের জন্য আজকাল বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর জুতা পাওয়া যায়। এ-ধরনের জুতার দাম একটু বেশি হলেও, শিশুর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বাবা-মার উচিত সে-ধরনের জুতা কিনে দেওয়া। শিশু দিবসে বাবা-মা শিশু-সন্তানকে ভালো মানের জুতা উপহার হিসেবে কিনে দিতে পারেন।
৪. ভিটামিনযুক্ত নরম ক্যান্ডি
শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই চকোলেট, ক্যান্ডি ইত্যাদি পছন্দ করে। অনেক বাবা-মা শিশুকে ক্যান্ডি বা চকোলেট কিনে দিতে চান না। কারণ, বেশি চকোলেট বা ক্যান্ডি খেলে দাতের ক্ষতি হয়। আজকাল বাজারে বিশেষ ধরনের নরম ক্যান্ডি পাওয়া যায়, যেগুলোতে প্রচুর ভিটামিন থাকে। এ-ধরনের ক্যান্ডি হতে পারে শিশু দিবসে আপনার পক্ষ থেকে আপনার শিশুর জন্য উপহার। চকোলেট ও ক্যান্ডিজাতীয় কিছু খাওয়ার পর শিশুদের দাঁত মেজে দিতে ভুলবেন না।
৫. বিভিন্ন ফলের স্বাদের টুথপেস্ট
অনেক শিশু দাঁত ব্রাশ করতে পছন্দ করে না। তাদেরকে বিভিন্ন ফলের স্বাদের টুথপেস্ট কিনে দিতে পারেন। টুথপেস্টের মিষ্টি গন্ধ ও মিষ্টি স্বাদ তাদেরকে দাঁত মাজতে উত্সাহিত করবে। শিশু দিবসে এ ধরনের টুথপেস্ট বাচ্চাকে উপহার হিসেবে কিনে দিতে পারেন।
৬. পানির ফ্লাক্স
পানির অপর নাম জীবন। পানি শিশুদের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পানির অভাব হলে শিশুরা সহজেই অসুস্থ হয়ে যায়। সেজন্য বাচ্চারা যাতে প্রচুর পানি পান করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আজকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের কার্টুন-আঁকা পানির ফ্লাক্স পাওয়া যায়। এসব ফ্লাক্সে পানি ঠাণ্ডা বা গরম থাকে। এই ফ্লাক্সে হালকা গরম পানি ভরে সন্তানের সামনে রেখে দিলে, ভালো ফল পাওয়া যায়। সুন্দর ফ্লাক্স থেকে পানি খেতে তারা আগ্রহী হয়। শিশু দিবসে এ ধরনের একটি ভালো পানির ফ্লাক্স শিশুকে উপহার হিসেবে কিনে দিতে পারেন।
(ওয়াং হাইমান/আলিম)