'এক অঞ্চল, এক পথ' পেশ করার পর গত ৫ বছরে আরো বেশি দেশ, অঞ্চল, সংস্থা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান একে সমর্থন করে। চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত ৮৬টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে চীন যৌথভাবে ১০১টি 'এক অঞ্চল, এক পথ' সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, আসিয়ান, পেরু ও চিলিসহ ২৪টি দেশ ও অঞ্চলের সঙ্গে ১৬টি অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। গত ৫ বছরে চীন ও 'এক অঞ্চল, এক পথ' সম্পর্কিত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য মূল্য ৫০কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যায়।
বেইজিং নরম্যাল ইউনিভার্সিটির 'এক অঞ্চল, এক পথ' গবেষণালয়ের পরিচালক হু পি লিয়াং মনে করেন, 'এক অঞ্চল, এক পথ'-এর কারণে চীনের গভীর উন্নয়ন এগিয়ে গেছে। তিনি বলেন, "২০১৩ সালে বিশ্বের অর্থনীতি একটি ধীর গতির উন্নয়নের পর্যায়ে দাঁড়ায়, ঠিক তখনই 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ পেশ করা হয়। উদ্যোগটি অবকাঠামো নির্মাণ ও আন্তযোগাযোগের মাধ্যমে বিনিয়োগের উন্নয়ন ও আরো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্য আরো বেশি আর্থিক আয় বয়ে এনেছে, আর এতে বিশ্ব অর্থনীতিতেও ফিরে এসেছে দ্রুত উন্নয়ন।"
সম্প্রতি বোআও এশিয়া ফোরামে প্রকাশিত 'এশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্ষমতাবিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদন-২০১৮'-তে দেখা যায়, ২০১৭ সালে 'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগের প্রভাবে এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণের সামাজিক ভিত্তি আরো দৃঢ় হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে চীনের পরিকল্পনা হলো ভবিষ্যতে 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণকে প্রধান কর্তব্য হিসেবে একটি আরো উন্মুক্ত নতুন বিন্যাস গঠন করবে, আরো উচ্চ পর্যায়ের উন্মুক্ত অর্থনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।
চীনের সামষ্টিক অর্থনৈতিক গবেষণালয়ের বিদেশি অর্থনৈতিক গবেষণা বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ং ছিয়াং ইয়ং মনে করেন,
"'এক অঞ্চল, এক পথ' উদ্যোগ চীনের আরো উন্মুক্ত অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা ও ধারণা দিয়েছে। প্রথমে সহযোগিতার মাধ্যমে উভয়ের কল্যাণ বজায় রাখা উচিত। তার পর অভিন্ন আলোচনা, অভিন্ন নির্মাণ ও অভিন্ন ভাগাভাগি করা উচিত। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচ্চ পর্যায়ের মতৈক্যে পৌঁছানো উচিত। সর্বশেষ একটি ব্যাপার হলো একটি টেকসই ঝুঁকি নিয়ন্ত্রিত আর্থিক ব্যবস্থা খুবই প্রয়োজনীয়।"
ইয়ং মনে করেন, বর্তমানে আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হলেও, উন্নয়নের শক্তি যথেষ্ট নয়। এ প্রেক্ষাপটে চীন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উদারীকরণের জন্য চেষ্টা করছে, যা বিশ্বের অর্থনীতির জন্য একটি ভাল খবর। এ কাজে বিশ্ব অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য চীনকে পরিষ্কারভাবে বড় দেশের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। (জিনিয়া/টুটুল)