স্থানীয় সময় ৬ মে সন্ধ্যায় ষষ্ঠ বার্লিন জার্মান-চীন সাংস্কৃতিক উৎসব সমাপ্ত হয়েছে। এদিন বার্লিন সঙ্গীত কলেজের মহিলা সঙ্গীত দল, শাংহাই মহিলা সংবাদদাতা গায়ক দল এবং বার্লিন মহিলা গায়ক দল ৩'শরও বেশী দর্শকের জন্য ৩০টি চীন ও ইউরোপীয় লোক সঙ্গীত পারফর্ম করেছে। এসব অনুষ্ঠান দর্শকদের তুমুল প্রশংসা কুড়িয়েছে।
১১ দিন ব্যাপী এবারের সাংস্কৃতিক উত্সবে পেইন্টিং, সঙ্গীত, ফটোগ্রাফি, প্রামান্য চিত্র নির্মাণ, নাচ, সাহিত্য, ঐতিহ্যবাহী কথকতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড আয়োজিত হয়। চীন ও পশ্চিমা দেশের নারী শিল্পীরা পারফর্মেন্স ও আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন ফর্মের মাধ্যমে মানব পরিবেশ এবং শৈল্পিক সৃষ্টির পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। কয়েক হাজার জার্মান দর্শক এতে অংশ নিয়ে চীনা সংস্কৃতি ও শিল্পের মোহিনীশক্তি উপভোগ করেন।
খং হৌ ও বীণার যৌথ পরিবেশনায় পারস্য সঙ্গীত, চীন-পশ্চিম সংলাপ, চীন-জার্মান মহিলা শিল্পী গ্রুপ প্রদর্শনী, চীন-জার্মান টেলিভিশন প্রামান্য চিত্র নির্মাণ, সেমিনারসহ বিভিন্ন তত্পরতা থেকে দু'দেশের সংস্কৃতির বহুবিধ ও আরো ঘনিষ্ঠ বিনিময়, সহযোগিতা দেখা যায়। তাছাড়া, চীন ও জার্মানীর শিল্পী ও সমালোচক মহলের উচ্চ পর্যায়ের স্বীকৃত্বি লাভ করেছে।
জানা যায়, জার্মান-চীন সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১৩ সালে বার্লিনে শুরু হয়। এবারের সাংস্কৃতিক উত্সবকালে বার্লিন ও চীনের সাহিত্য ও শিল্প সমিতি, বার্লিন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সঙ্গে 'সহযোগিতামূলক কাঠামো চুক্তি-২০১৯' স্বাক্ষর করেছে। ভবিষ্যতে তিন পক্ষ অভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে চীন-জার্মান সাংস্কৃতিক ও শিল্প বিনিময় আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।
বন্ধুরা, বার্লিন ষষ্ঠ জার্মান-চীন সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানে শেষ। এবারে শুনুন চায়না মিডিয়া গ্রুপের প্রতিনিধি দলের ইসরাইলের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে সফর শিরোনামে একটি সাংস্কৃতিক প্রবন্ধ।
মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চায়না মিডিয়া গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দল ইসরাইলের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন, ইসরাইলের অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসরাইলে চীনের মিডিয়া কেন্দ্রে আলাদা আলাদা সফর করেছে। তাঁরা অনুষ্ঠানে নতুনত্ব ও সহযোগিতা, সনাতন ও নতুন মিডিয়ার একীকরণের অবস্থাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে গভীর মতবিনিময় করেছে।
ইসরাইলের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের প্রেসিডেন্ট, ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং কর্পোরেশনের নতুন মিডিয়া বিভাগসহ বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ প্রতিনিধি দলকে গত এক বছরে পুনর্গঠনের পর কর্পোরেশনের অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন। প্রধানত নতুন সৃষ্টি গুরুত্বপূর্ণ নতুন মিডিয়া বিষয় প্রদর্শন এবং এর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন তাঁরা। এর পর প্রতিনিধি দল কর্পোরেশনের রেডিও ও টেলিভিশন স্টুডিও পরিদর্শন করেন। দু'পক্ষ একমত হয়েছে যে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা এবং বিষয় বস্তু তৈরির ব্যাপারে সহযোগিতা জোরদার করবে, একসাথে সংক্ষিপ্ত ভিডিও তৈরি করবে, চীনা সেরা প্রামান্য চলচ্চিত্র অনুবাদ করে ইসরাইলে প্রচার করা নিয়ে আরো আলোচনা করবে।
এর পর ইসরাইলের অ্যাপ্লিকেশন ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিন্সিপ্যাল ও ভাইস চ্যান্সেলর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রকল্পের দায়িত্বশীল ব্যক্তি প্রতিনিধি দলকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে নবায়ন ও উদ্ভাবনের সামর্থ্য এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের অবস্থা পরিচয় করিয়ে দেন। দু'পক্ষ মনে করে যে সহযোগিতা জোরদার করে চীন-ইসরাইল যুব পারস্পারিক সমঝোতা এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ইসরাইলে চীনের মিডিয়া কেন্দ্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, চীন ও ইসরাইলের মিডিয়ার জন্য একটি বিনিময় প্ল্যাটর্ফম প্রতিষ্ঠা করে আরো বেশী সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক তাঁরা।
তাছাড়া, প্রতিনিধি দল ইসরাইলে চীনের দূতাবাস সফর করে দু'দেশের মিডিয়ার পারস্পরিক বিনিময় অবস্থা দূতাবাসকে অবহিত করেছে।
বন্ধুরা, চায়না মিডিয়া গ্রুপের প্রতিনিধি দলের ইসরাইলের ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে সফর শিরোনামে সাংস্কৃতিক খবরটি এখানেই শেষ। এবারে শুনুন নেপালের বই-প্রকাশনা শিল্পের চীনের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারের প্রত্যাশা সমন্ধে একটি সাংস্কৃতিক খবর।
নেপালের 'চুং হুয়া সু ইয়ান' নামে চেইন বুকস্টোরের প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান সম্প্রতি কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিমালয় বুক সেন্টার, তিব্বত বুকস্টোর, ডিয়েনফং বুকস্টোরসহ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বুকস্টোর ব্র্যান্ড আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর করে 'চুং হুয়া সু ইয়ান' ব্যবস্থায় অংশ নেয়।
চীনের তিব্বতের থিয়েন লি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন লিমিটেড কোম্পানি বিনিয়োগ করে 'চুং হুয়া সু ইয়ান' শিরোনামে চেইন বুকস্টোর প্রতিষ্ঠা করে। এ প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেপালে চীনের দূতাবাসের সাংস্কৃতিক বিভাগের পরিচালক, নেপাল চীনের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালকসহ বিভিন্ন অতিথি অংশ নেন। নেপালের থিয়েন লি প্রকাশনা সাংস্কৃতিক কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার পরিচয় করিয়ে বলেন,
"আমরা নেপালের স্থানীয় বুকস্টোরের সঙ্গে সহযোগিতা করে অভিন্নভাবে এই চেইন বুকস্টোর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবো। নেপাল চীন বুক সেন্টার সৃষ্টি করা আমাদের প্রত্যাশা। এ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চীনের প্রকাশনা মহল এবং নেপালের পুস্তক বাজারের মধ্যে একটি যোগাযোগের সেতু সৃষ্টি হবে, যাতে নেপালি পাঠকরা চীনা সংস্কৃতিকে আরো বেশী জানতে পারেন।"
নেপালের সাহিত্য কলেজের সদস্য সচিব অনুষ্ঠানে বলেন, গত কয়েক দশকে সংস্কৃতি, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীন অতুলনীয় সাফল্য লাভ করেছে। চীনের সুপ্রতিবেশী দেশ হিসেবে এই সাফল্যে আনন্দ অনুভব করে নেপাল। একই সঙ্গে আশা করে যে চীনের উন্নয়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে পারবে নেপাল।
বই মানুষের সেরা বন্ধু। বই প্রকাশনা মহলের বিনিময় অবশ্যই চীন-নেপাল জনগণের বিনিময় এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নেপালের থিয়েন লি প্রকাশনা সংস্কৃতি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার বলেন,
"বিভিন্ন অতিথির উপস্থিতিতে 'চুং হুয়া সু ইয়ান' চেইন বুকস্টোর প্রতিষ্ঠিত হওয়াতে আমরা খুবই খুশি। আমরা বিশ্বাস করি এ ব্যবস্থা 'এক অঞ্চল, এক পথ' নির্মাণ প্রকল্পেও অবদান রাখবে। বই হলো মানব সভ্যতার সিঁড়ি, জ্ঞানের জগতে কোন সীমানা নেই। আশা করি আমরা একসঙ্গে এ সভ্যতার সিঁড়ি নির্মাণ করে আরো বেশী মানুষকে সভ্যতার সুফল উপভোগ করার সুযোগ দিতে পারব।"
প্রিয় শ্রোতা, আজকের অনুষ্ঠান আপনাদের কেমন লাগলো? আপনারা যদি 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' বিষয়ক কোনো কিছু জানতে বা আলোচনা করতে চান, তাহলে আমাকে চিঠি লিখবেন বা ই-মেইল করবেন। আপনাদের কাছ থেকে চমত্কার পরামর্শ আশা করছি। আর আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমার ইমেইল ঠিকানা হলো, hawaiicoffee@163.com
চিঠিতে প্রথমে লিখবেন, 'সাহিত্য ও সংস্কৃতি' অনুষ্ঠানের 'প্রস্তাব বা মতামত'। আপনাদের চিঠির অপেক্ষায় রইলাম।
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানেই শেষ করছি। শোনার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আগামী সপ্তাহে একই দিন, একই সময় আপনাদের সঙ্গে আবারো কথা হবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাইচিয়ান। (জিনিয়া/মহসীন)