চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া সপ্তম শীর্ষসম্মেলনে লি খ্য ছিয়াং
  2018-05-10 15:46:55  cri
মে ১০: চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং গতকাল (বুধবার) টোকিওতে চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া সপ্তম শীর্ষসম্মেলনে যোগ দেন। সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন উপস্থিত ছিলেন। এরপর তাঁরা এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন। শীর্ষসম্মেলনে লি খ্য ছিয়াং বলেন, কেবল নিজ দেশের উন্নয়নের চাহিদা পূরণই নয়, বরং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমাজের প্রত্যাশা অনুযায়ী চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার করছে। তিন পক্ষের উচিত এ সুযোগ কাজে লাড়িয়ে যৌথ কল্যাণ অর্জনের পাশাপাশি আঞ্চলিক টেকসই শান্তি ও যৌথ সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য চেষ্টা চালানো। সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় শুনবেন এ সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন। আড়াই বছর পর বুধবার চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া সপ্তম শীর্ষসম্মেলন জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শীর্ষসম্মেলনের এক ভাষণে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াং বলেন, বিশ্বের তিনটি অর্থনৈতিক সত্ত্বা এবং একে অপরের গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আঞ্চলিক একীকরণ এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় এই তিন দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। লি বলেন,‘চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষসম্মেলন নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়, যা পরিচালনামূলক ভূমিকা পালন করে। দেশ তিনটির মধ্যে মতভেদের তুলনায় যৌথ স্বার্থ বেশি রয়েছে। এ শীর্ষসম্মেলনের মাধ্যমে যৌথ কল্যাণ বৃদ্ধি ও মতভেদ দূর করা যায়। তাই নিয়মিত এ সম্মেলন আয়োজন করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী লি আরও বলেন, আামাদের দরকার সঠিকভাবে ইতিহাস পর্যালোচনা করা এবং ভবিষ্যতমুখী আরও উচ্চ পর্যায়ের সহযোগিতা জোরদার করা। তিনটি দেশের উচিত অবাধ বাণিজ্য রক্ষার পাশাপাশি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীকরণ প্রমোট করা। লি বলেন, ‘তিনটি দেশ বিশ্বায়ন ও অবাধ বাণিজ্যের সুবিধাভোগী। তাই বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ সুবিধাজনক করা এবং বাণিজ্যিক স্বাধীনতা বাস্তবায়নে আরো বেশি চেষ্টা চালানো উচিত। তিন দেশের অবাধ বাণিজ্যিক এলাকা, আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারি সম্পর্ক চুক্তি (আরসিইপি) দ্রুত কার্যকর করতে হবে; যাতে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে আস্থা ও প্রাণশক্তি যোগানো যায়। লি আরও বলেন, চীন-জাপান-দক্ষিণ কোরিয়ার উচিত পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক যৌথ কমিউনিটি গঠনের পরিকল্পনা এগিয়ে নেওয়া এবং অবাধ বাণিজ্য সহজায়ন, উত্পাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো ও পারস্পরিক যোগাযোগ খাত, ব্যাংকিং, টেকসই উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা। বিদ্যমান কোরীয় উপদ্বীপের ইতিবাচক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে লি খ্য ছিয়াং বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের পরমাণু ইস্যু পুনরায় আলোচনার টেবিলে ফিরে আসায় অভিনন্দন জানায় তিনটি দেশ। বিভিন্ন পক্ষের সর্বোচ্চ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সংলাপ পুনরুদ্ধার করা এবং এতে চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে বলে জানান লি। তিনি বলেন, “বিভিন্ন পক্ষের উচিত বর্তমান সুযোগ কাজে লাগিয়ে বৈঠক পুনরুদ্ধার করা, যাতে রাজনৈতিকভাবে কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যা সমাধান করা যায় এবং কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু অস্ত্রমুক্তকরণ বাস্তবায়ন করা যায়। চীনও এতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করে যাবে। শীর্ষসম্মেলনে শিনজো আবে বলেন, তিনটি দেশ অবাধ বাণিজ্য ও বাজার উন্মুক্তকরণে একমত হয়েছে। শীতকালীন অলিম্পিক গেমস ও প্রতিবন্ধী অলিম্পিক গেমসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনসাধারণের যোগাযোগ বৃদ্ধির শিক্ষা জোরদার করা, পর্যটন খাতে সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়া এবং আরও উন্মুক্ত ও সহনশীলতার পথে এগিয়ে যাবে চীন-জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। মুন জায়ে-ইন বলেন, চীন ও জাপান পরমাণু অস্ত্রমুক্ত কোরীয় উপদ্বীপ চায়। তারা উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষবৈঠকে সমর্থন জানিয়েছে। এসব বিষয় বৈঠকের সাফল্যের সুযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাতে কোরীয় ও উত্তর-পূর্ব এশিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধি বাস্তবায়িত হবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি। তিনটি দেশের উচিত বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করে তিনটি দেশের জনগণ্যের জন্য কল্যাণ বয়ে আনা। (রুবি/তৌহিদ)
© China Radio International.CRI. All Rights Reserved.
16A Shijingshan Road, Beijing, China. 100040