0508topic
|
গতকাল (সোমবার) স্থানীয় সময় দুপুর বারোটায় ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে চতুর্থ মেয়াদের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। প্রায় ৫ হাজার সরকারি কর্মকর্তা, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক, গণমান্য অতিথি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ মার্চে অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচনে ভ্লাদিমির পুতিন প্রদত্ত ভোটের ৭৬.৬৯ শতাংশ লাভ করেন। এর আগে পুতিন তিন মেয়াদে ২০০০ থেকে ২০০৪, ২০০৪ থেকে ২০০৮, এবং ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এপ্রিলের এক জরিপ অনুসারে, অধিকাংশ রুশ জনগণ পুতিনের কাজে সন্তুষ্ট।
রুশ জনগণ কেন পুতিনকে সমর্থন করে?
যখন ২০০০ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হন, তখন রাশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ছিল। তার নেতৃত্বে রাশিরায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং দেশটি সামরিক দিক দিয়ে হয় আরও শক্তিশালী। তিনি বিভিন্ন সংস্কারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকেও সঠিক পথে নিয়ে আসেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিন অনেক অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২০১৭ সালে রাশিয়ার জিডিপি ২০০০ সালের চেয়ে প্রায় চারগুণ হয়; বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ অন্তত ৩০ গুণ বাড়ে; বেকারত্বের হার ৪.৯ শতাংশ কমে।
কূটনীতির ক্ষেত্রেও পুতিন সফল হন। তিনি রাশিয়াকে আবার পরাশক্তির জায়গায় নিয়ে যান। ইরাক, লিবিয়া, ইউক্রেন, সিরিয়া ইস্যুতে তাঁর দৃঢ় অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাশিয়ার মর্যাদা বাড়িয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
বর্তমান মেয়াদে পুতিনকে দেশে-বিদেশে অনেক জটিল সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। যুক্তরাষ্টের সঙ্গে তাঁর দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে। পাশ্চাত্যের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো না। পাশ্চাত্যের বাণিজ্য-নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপের মধ্যে রেখেছে। নির্বাচনের সময় তিনি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা; রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সংস্কারসাধণ; অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি; সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা; ইত্যাদি নানান প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন। এসব প্রতিশ্রুতি পূরণ করা তাঁর জন্য সহজ কাজ হবে না।
রাশিয়ার সংবিধান অনুসারে, পুতিনের এটাই হবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শেষ মেয়াদ। ৬ বছর পর দেশে নতুন প্রেসিডেন্ট আসবেন। কে হবেন তাঁর উত্তরসূরি? এ-প্রশ্নও এখন উঠছে। শপথগ্রহণের পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় দিমিত্রি মেদভেদেবের নাম ঘোষণা করেছেন। দুমায় নাম অনুমোদনের জন্য পাঠানোও হয়েছে। তবে কি মেদভেদবই হবেন পুতিনের উত্তরসূরি? সময়ে এই প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে।
(তুহিনা/আলিম)